Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমর্থক শব্দ

ভার্চুয়াল সভায় ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক ধরনের শক্তি। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলাম না, ছিলাম মহকুমার প্রশাসক (এসডিও)। সেদিন চুরি করে ৭ মার্চের ভাষন শুনতে এসেছিলাম। ১৫ মিনিটের সেই বক্তৃতায় সব ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই বক্তৃতায় এক ধরনের শক্তি ছিল।
১৭ এপ্রিল যখন শপথ গ্রহণ করল প্রবাসী সরকার। ঘোষণাপত্র যখন পাঠ করা হলো, সেদিন সেটি কিন্তু সংবিধান ছিল। সেখানে বলা হয়েছিল প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু। প্রবাসী নয়, অস্থায়ী নয়, এটি ছিল স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রথম সরকার। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমর্থক শব্দ। এটাকে আলাদা করার কোনো সুযোগ নেই। অনেকে বলবেন বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের সময় ছিলেন না। কিন্তু তিনি না থেকেও বেশি ছিলেন।

গতকাল জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, খুব সিম্পল একটি গোল (লক্ষ্য) দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। সেটি হচ্ছে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। সমাজের ফাইনাল হ্যাপিনেস ইনডেক্স হচ্ছে হাসি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছর বিরোধীরা ক্ষমতায় ছিল। তারা সব সাক্ষী প্রমাণ ধ্বংস করেছেন। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সেনা আত্মসমর্থনের জায়গাকে যাতে স্মরণ করতে না পারি, তার জন্য সেখানে শিশুপার্ক করা হয়েছে, ভাবতে পারেন? চক্রান্ত কারা করেছিল, কারা সুবিধাভোগী ছিলেন, তা বুঝতে বেশি সময় লাগেনি।

সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। ওই সময় আমরা কুচকাওয়াজের পর জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু সেøাগান দিতাম। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর প্রিন্সিপাল পরিবর্তন হয়ে গেল। সেনা অফিসার প্রিন্সিপাল হয়ে এলেন। তিনি পরের সপ্তাহে ঘোষণা দিলেন জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলা যাবে না। সেদিন কিন্তু ছাত্ররা সেই নির্দেশনা মানেনি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুকে কতটা আত্মস্থ করেছি সেটি নিয়ে সংশয় রয়েছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন, সমগ্র জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তখন কোনো সামরিক শক্তি তাকে মোকাবিলা করতে পারে না। যারা এক সময় নানা ব্যঙ্গ করত তারাই এখন সবচেয়ে বড় প্রেমিক সেজেছে, তাদের বিষয়ে সচেতন থাকার সময় এসেছে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান বলেন, যাকে পাকিস্তানিরা হত্যা করতে সাহস পায়নি, সেই বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশি কেউ হত্যা করতে পারে, এটা ’৭৫ সালে অনেকে বিশ্বাস করতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু এক মহাকাব্যের নায়ক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ১৪ আগস্ট অপরাহ্নে আমরা যখন বাসায় ফিরছি, তখন সেই আশা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি যে পরদিন বঙ্গবন্ধু আসবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয় যখনই সঙ্কটে পড়েছে, তখনই বঙ্গবন্ধু হাজির হয়েছেন। যুদ্ধের পর শিক্ষার্থীরা নানা দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছিলেন।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. সুলতান আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন অতিরিক্ত সচিব একেএম হুমায়ুন কবীর, মাকছুদা খাতুন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির সিইও এএম খোরশেদুল আলম, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন, ঢাকা ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) এমডি কাওসার আমির আলী, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) এমডি বিকাশ দেওয়ান, নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) এমডি জাকিউল ইসলাম।



 

Show all comments
  • মোঃ ফিরোজ খান ৯ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৫৮ এএম says : 0
    বঙ্গবন্ধু ও মুক্তির স্বাধীনতা বহু রক্তের বিনিময়ে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।বঙ্গবন্ধুর কর্তৃত্ব যে আইনগত বৈধতা উদ্ভূত হয়েছিল, তা মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যখন আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের যে জোয়ার এসেছিল, সেটা ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এবং তিনি বিপুল জনসমর্থন নিয়ে বাংলাদেশের কথা বলার অধিকার লাভ করেছিলেন। এমন সমর্থন হয়তো গান্ধী বা নেহরু বা মাও বা হো চি মিন বা বেন বেল্লা কিংবা নকরুমা, নায়ারে অথবা ম্যান্ডেলার মতো ব্যক্তিরাও পাননি। তাঁরা সবাই পরিপূর্ণ নির্বাচনগত বৈধতা পেয়েছিলেন স্বাধীনতার পর। সারা বিশ্বের চোখে বঙ্গবন্ধু আদতে ওই সময়ের মধ্যেই দায়িত্ব বা ক্ষমতার চর্চা শুরু করেছিলেন যখন তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন)। এই সর্বজনীন স্বীকৃত ক্ষমতার জন্যই বাঙালি বিচারক, আমলা, কূটনৈতিক নির্বিশেষে সবাই বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন করেছিলেন। এমনকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত বাঙালিরাও নিজেদের কর্মক্ষেত্রের শপথ ভেঙে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে দ্বিধা করেননি। মনে রাখতে হবে, কিছু ভিয়েতনামি তাদের মুক্তি আন্দোলন দমনকারী ফরাসিদের পক্ষে যুদ্ধ করেছে। ব্রিটিশরা শুরু থেকেই তাদের সাম্রাজ্যের ভেতরকার স্বাধীনতাসংগ্রাম রুখতে পুলিশ এবং স্থানীয় বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে এসেছে। একমাত্র বাংলাদেশই ছিল এর ব্যতিক্রম। যেখানে ঔপনিবেশিক শাসনের এসব ভৃত্য শাসকের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করেছিল এবং একটি বিদ্রোহী পক্ষকে সমর্থন করেছিল। কারণ, তারা এই পক্ষটির নেতাকে সব জনগণের হয়ে কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছিল। ১৯৭১ সালের মার্চের পর যখন বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বদরবারে তাদের বার্তা নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল, তখন সার্বভৌমত্বের সমর্থন আদায়ে তেমন বেগ পেতে হয়নি, এমনকি সে সময় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য তাদের সমর্থনে সরকারের আগ্রহ কম থাকা সত্ত্বেও। পাকিস্তানি সেনা আক্রমণ এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সে সময় বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের সমর্থন ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আজ বহু দেশই মনে করে, সেই সময়ের গণহত্যার দুই নায়ক ইয়াহিয়া ও সামরিক অধিনায়ক টিক্কা খানকে তাঁদের বর্বরোচিত আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধাপরাধী বিবেচনা করে বিচার করা উচিত। ১৯৭১ সালে কখনো বাংলাদেশের নাম শোনেনি, এমন সব রাষ্ট্রের মানুষদেরও সমর্থন বাংলাদেশের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে ভয়াবহ নৃশংসতা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সারা বিশ্ব তা লক্ষ করেছে। তাই বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের নেতা এবং বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতে সময় লাগেনি। ১৯৭১ সালের পরে বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়ে যে যা-ই বলুক না কেন, সব বাংলাদেশিকে অন্তত এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে বঙ্গবন্ধু যদি এ দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয় চেতনা ও আত্মসচেতনতা না জাগাতে পারতেন (বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের আগে) এবং তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে তিনি যদি বিশ্বের সামনে প্রস্তাব উত্থাপন না করতেন, তবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হতো আরও বিলম্বিত এবং দীর্ঘায়িত একটি প্রক্রিয়া হয়ে যেতো।আমরা দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য যুদ্ধ করে আজ স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা দেখতে পাই।আমরা ধন‍্য এবং আমরা অনেক অনেক সুখী আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়ে। নবীন লেখক সাংবাদিক মোঃ ফিরোজ খান ঢাকা বাংলাদেশ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবন্ধু

৮ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ