পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় ম্যালেরিয়া-এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে জরিপ
এডিস মশা আর ডেঙ্গু জ্বর। ২০১৯ সালে দেশের মানুষের কাছে আতঙ্ক ছিল এই দুটি শব্দ। পত্রপত্রিকার তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর প্রায় ৩শ’ লোক প্রাণ হারিয়েছেন। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯। এবার করোনা সংক্রমণের মধ্যে ডেঙ্গু ও এডিস মশা নিয়ে আলোচনা কম। তবে এক জরিপে ডেঙ্গুর ভয়াবহ এবং ভীতিকর চিত্র উঠে এসেছে। এবার রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটির ২৫টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। এডিস মশা নিধনের গাফিলতি এবং নাগরিকদের অসচেতনতায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মস‚চির আওতায় এই জরিপ চালানো হয়।
গত ১৯ থেকে ২৮ জুলাই দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় চালানো বর্ষাকালীন এই জরিপের ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, উত্তর সিটি করপোরেশনের ৯টি ও দক্ষিণের ১৬টি ওয়ার্ড এখনো ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্বের সূচক ব্রæটো ইনডেক্স ২০ এর বেশি।
জরিপে অংশ নেয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রæটো ইনডেক্স বা স‚চকের মাধ্যমে। জরিপে প্রতি একশ’ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এডিস মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়। জরিপে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১০, ১১, ১৭, ১৯, ২১, ২৩, ২৪, ২৯, ৩২ ওয়ার্ডে এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২, ৪, ৮, ৯, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮, ২৫, ৩৪, ৪০, ৪১, ৪৫ এবং ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে এডিস মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে।
জরিপে ঢাকা উত্তর সিটির ১১ নম্বর ওয়ার্ডে (কল্যাণপুর, পাইকপাড়া ও মধ্য পাইকপাড়া) ব্রæটো ইনডেক্স সর্বোচ্চ ৪৩.৩ পাওয়া গেছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ড (খিলক্ষেত, কুড়িল, কুড়াতলী, জোয়ারসাহারা, অলিপাড়া (আংশিক), জগন্নাথপুর, নিকুঞ্জ-১ ও ২, এবং টানপাড়া) এবং দক্ষিণে ৫১ নম্বর ওয়ার্ড (মীর হাজারীবাগ, ধোলাই পাড় ও গেÐারিয়া) ব্রæটো ইনডেক্স ৪০ পাওয়া গেছে। এই তিনটি ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
ডিএনসিসির ২৯ এবং ডিএসসিসির ৩৮টি ওয়ার্ডের ব্রæটো ইনডেক্স ১০ এর বেশি। দুই সিটির ৫টি ওয়ার্ডে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি।
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু গতবছর তথা ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বড় মাথাব্যথা হয়ে উঠেছিল। সরকারি হিসাবে, পুরো বছরে এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের মধ্যে সরকারি হিসেবে প্রাণ হারান ১৭৯ জন। বেসরকারি হিসেবে এই মৃত্যুর সংখ্যা তিনশ’। তবে দেশের সবগুলো হাসপাতালে ভর্তি এবং বাসায় থাকা রোগীদের তথ্য স্বাস্থ্য অধিদ্ফতরে না আসায় প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার কথা বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দেন।
এরপর চলতি বছর ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাংলাদেশে দেখা দেয় মার্চের শুরুতে। এই সঙ্কটের সময়ে ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরে যেন আবার ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়তে না পারে, সে বিষয়ে উচ্চ আদালত থেকেও সিটি করপোরেশনগুলোকে সতর্ক করা হয়। তবে ঢাকা উত্তর গত কয়েকদিন ডেঙ্গু মশা নিধনের লক্ষ্যে কিছু কর্মসূচি পালন করেছে। কিছু কিছু বাড়ির মালিকের জরিমানাও করা হয়েছে।
ডিএনসিসি কিউলেক্স ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ৭ মার্চ থেকে ১১টি তদারক দল দিয়ে মশকনিধন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানানো হয়। তদারক দল বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখতে পায়, মশকনিধনকর্মীরা ঠিকমতো উপস্থিত থাকছেন না। যে পরিমাণ ওষুধ দেয়ার কথা, তা ঠিকমতো ছিটানো হয় না। এ অবস্থায় গতকাল ডেঙ্গু নিয়ে করা জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এদিকে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকরা বলছেন গত বছরের চেয়ে এবার মহানগরীতে মশার উপদ্রব বেশি। জানতে চাইলে মশার বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গবেষণা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, বছরের প্রথম তিন মাসে আক্রান্ত রোগী এবং এডিস মশার ঘনত্ব দেখে ধারণা করা যায়, এ বছর রোগীর সংখ্যা বাড়বে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আগে থেকে নাগরিকদের সচেতন করা এবং এডিস মশার বংশবিস্তারের স্থান নিয়ন্ত্রণের কাজে জোর দেয়া উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।