পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া প্রতিদিনের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ঢাকায় শনাক্ত হওয়া করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার। কিন্তু সরকারের একটি বিভাগের একটি জরিপ থেকে জানা গেছে, ঢাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা বহু বহু গুন বেশি। ঢাকার জনসংখ্যা বিবেচনায় এনে হিসাব করলে ১৬ লাখের কম হবে না।
এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ঢাকা শহরের দুই সিটি কর্পোরেশনে স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর’বি এবং সরকারের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এই জরিপটি চালায়। ঢাকার দুই অংশে নানা আবাসিক এলাকা এবং ছয়টি বস্তি মিলিয়ে প্রায় চার হাজার পরিবারের ১২ হাজারের মতো মানুষের উপর এই জরিপটি করা হয়ে।
করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে এবং লক্ষণ নেই - এমন দুই ধরনের পরিবার থেকেই নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হয়েছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ঢাকার ৯ শতাংশ লোকই করোনাভাইরাস সংক্রমিত, তবে বস্তি এলাকায় সংক্রমণের হার কম, ৬ শতাংশ। কোন ধরনের উপসর্গ নেই এমন পরিবারেও সংক্রমিত ব্যক্তি রয়েছেন। সংক্রমিত ব্যক্তিদের বেশ বড় অংশেরই কোন উপসর্গ নেই।
এই জরিপের ফল অনুযায়ী ঢাকার ৯ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ২০১১ সালে সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ঢাকা শহরের জনসংখ্যা এক কোটি ২৫ লাখের মতো। তবে ২০১৭ সালে বিশ্বব্যাংকের এক হিসাব ছিল, এক কোটি আশি লাখ। জরিপের ফল দিয়ে একটি মডেল দাঁড় করালে দেখা যায়, ঢাকার প্রায় ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত।
এই জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন তার মধ্যে যাদের শরীরে সংক্রমণ পাওয়া গেছে তাদের ৯৩ শতাংশেরই জ্বর ছিল। চার হাজার পরিবারের উপর এই জরীপটি করা হয়েছে। ঢাকার বস্তিগুলোতে গড়ে সংক্রমণের হার বেশ কম, ৬ শতাংশ পাওয়া গেছে। ১৫ থেকে ১৯ বছরের কিশোর বয়সীদের মধ্যে ১২ শতাংশ কোভিড-১৯ পজিটিভ।
অথচ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ যাবৎ যত নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে তাতে ঢাকা শহরে এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট শনাক্ত ৭০ হাজারের মতো মানুষ। এ বিষয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলছেন, ‘এই জরিপে আক্রান্তের সংখ্যাটা বেশি কারণ আমরা সরাসরি বাড়ি বাড়ি গিয়ে, লক্ষণ আছে বা নেই সেটা খুঁজে, তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করে জরিপটি করেছি। কিন্তু যে ডাটা সরকারিভাবে পাওয়া যাচ্ছে সেটা হল শুধু ল্যাবে পরীক্ষার ডাটা। শুধু যারা টেস্টের জন্য এসেছেন তাদের সংখ্যাটাই ধরা হয়।’
তিনি বলছেন, এরকম যেকোনো গবেষণাতেই দেখা যায় যে শুধু ল্যাবের সংখ্যার চেয়ে সরাসরি কমিউনিটিতে পরীক্ষার জন্য গেলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি পাওয়া যায়। এই জরিপের উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি চিত্র তৈরি করা যার উপর ভিত্তি করে করোনাভাইরাস মোকাবেলার কৌশল বের করা যাবে। তিনি বলছেন, মহামারির ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী এরকম জরিপের মাধ্যমে অনেক কিছু পরিকল্পনা করা হয়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এপিসেন্টার বা কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ঢাকা। দেশে যত কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকই ঢাকায়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন, সংক্রমণের যে সংখ্যা বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে তা সঠিক চিত্র নয়, কারণ যথেষ্ট পরীক্ষা হয়নি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লেলিন চৌধুরী বলছেন, ‘আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় অনেক কম সংখ্যক পরীক্ষা করেছি। টেস্ট করতে আসা মানুষজন নানাভাবে নিরুৎসাহিত হয়েছে।
একদিন নাম লেখানো, একদিন এসে নমুনা দেয়া, রেজাল্ট পেতে দেরি, তারপর আবার দুশো টাকা ফি ধার্য করা, সব মিলিয়ে মানুষ করোনা পরীক্ষার বিমুখ হয়ে যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য হচ্ছে যারা একান্তই না পেরে বাধ্য হয়ে পরীক্ষা করতে এসেছে, তাদের তথ্য শুধু পাওয়া যাচ্ছে।’ তিনি বলছেন, ‘এতে দেশের প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় না। এরকম আংশিক চিত্র দিয়ে একটি বিজ্ঞানভিত্তিক পূর্বাভাস এবং মহামারি প্রতিরোধের কৌশল তৈরি করা সম্ভব নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য কমিউনিটি ভিত্তিক সার্ভেইলেন্স অনেক বাড়াতে হবে। টেস্ট যদি আমরা অনেক বেশি করতে পারতাম তাহলে রোগটির ব্যাপ্তি সম্পর্কে আমরা একটি ধারনা পেতে পারতাম।’ কমিউনিটি পর্যায়ে যাদের উপসর্গ নেই তাদের শনাক্ত করার কথা বলছেন তিনি। কারণ, সংক্রমণ বেশ কিছুদিন যাবৎ একই রকম রয়েছে। মঙ্গলবার পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল ২০ শতাংশের উপরে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।