ভরা শ্রাবণ মাসের শেষ দিকে এসেও কোথাও বৃষ্টি কোথাও খরাদশা বিরাজ করছে। এবার শ্রাবণে বৃষ্টি ঝরেছে কম। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে বৃষ্টিপাত হয়নি। বাংলাদেশের উপর এবং সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর ফলে চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বর্ষণের রেকর্ড কুতুবদিয়ায় ১৩১ মিলিমিটার। দিনাজপুরে ৯৪, স›দ্বীপে ৭১, ফেনীতে ৫৪, সীতাকুন্ডে ৫১, তেঁতুলিয়ায় ৫২, রাজারহাটে ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
তবে এ সময় ঢাকা, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেটসহ অন্যান্য বিভাগে ভরা বর্ষা-বাদলের শ্রাবণের ‘স্বাভাবিক’ বর্ষণ হয়নি। বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঢাকায় ২৪ ঘণ্টায় ছিটেফোঁটা কোনো বৃষ্টিই ঝরেনি।

শ্রাবণ মাসের শেষ দিকেও সূর্যের কড়া দহনের সাথে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে (ঢাকার বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা হার গতকাল সন্ধ্যায় ৮২ শতাংশ) গা-জ্বলা ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইলে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৪.৫, এমনকি রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও উঠে গেছে ২৯ ডিগ্রিতে।

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হ্রাস পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
সাগর ফের উত্তাল
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য থাকার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপক‚লের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমী বায়ুর একটি বলয় ভারতের রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।