Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নদী ভাঙনে দুটি গ্রাম নিশ্চিহ্ন

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০২০, ৪:৪৬ পিএম

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দুধকুমার নদীর ভাঙ্গনে বিলীনের পথে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকডাঙ্গা ও চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রাম। ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে ঐ গ্রামের ৩ টি মসজিদ সহ কয়েকশ হেক্টর আবাদি জমি ও শতাধিক বসতবাড়ি। ভাঙ্গনের তীব্রতায় হুমকির মুখে পরেছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুধকুমার, ফুলকুমার, কালজানী, সংকোশ, গঙ্গাধরসহ সবকটি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে ফলে প্লাবিত হওয়া নিম্নাঞ্চলগুলো থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। এদিকে নদ নদীগুলোর পানি কমে যাওয়ায় দুধকুমার ও কালজানী নদীর ভাঙ্গনের তান্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।
ভাঙ্গনে ভিটে হারা ইসলামপুর গ্রামের আলাউদ্দিন ও আজগর আলী বলেন, প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে হামার বসত ভিটা নদীত হারায়ছি বাহে তারপর ফিরে পাইছিলাম আবার হারাইলাম এহন কি করি কোটে যামো বাহে। পাইকডাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, নদী যেভাবে ভাঙছে তাতে বিদ্যালয় দুটি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পরছে। তাই তিনি ভাঙ্গন রোধে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান।
অপরদিকে ভাঙ্গছে কালজানী নদী। বড় বড় চাপ ধরে পাকারাস্তা, ঘাট, ঘাটসংলগ্ন বাজার বসতভিটা, গাছবাগান, বাঁশঝাড় আর আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে । হুমকিতে আছে বিজিবি ক্যাম্প, মডেল প্রাইমারী স্কুল এবং জনবসতিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।ইসলামপুরের নদী ভাঙ্গনের শিকার মানিক উদ্দিন ব্যাপারী, অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিকবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলহাজ মিজানুর রহমান, হাজী আ: রশীদ,ও আব্দুল হালিম ভাঙ্গন রোধে দ্রুত একটি কার্যকরী বাঁধ দেয়ার দাবী করেন।
নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে চরভূরুঙ্গামারী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম ফজলুল হক, শিলখুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন ইউসুফ ও পাইকেরছরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন,আমাদের ইউনিয়নের প্লাবিত হওয়া নিম্নাঞ্চলগুলো জেগে উঠছে । নদী ভাঙনের তীব্রতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাঙ্গনের তথ্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বন্যা ও নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ কমাতে আমরা আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভাঙ্গন কবলিত মানুষের দুর্দশা লাঘবে সরকারী সহযোগিতার জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি ।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বিত পরিদর্শণ শেষে নদী শাসনের জন্য একটি প্রস্তাব ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আপাতত শিলখুড়ি খেয়া ঘাটের দুইপারের জনগনের পারাপারের সুবিধার্থে ঘাট উন্নয়নের পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন। এছাড়াও কালজানি ও দুধকুমার নদীর ভাঙ্গন রোধে ”দুধকুমার নদী উন্নয়ন প্রকল্প” নামে একটি প্রকল্প তৈরীর কাজ চলছে বলেও তিনি জানান।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরুজুল ইসলাম বলেন, আমি ইতোমধ্যে ভাঙ্গন কবলিত সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শণ করেছি। বন্যা পরিস্থিতি যেভাবে মোকাবেলা করেছি তেমনি নদী ভাঙ্গন রোধেও প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে একটি প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান দৃশ্যমান হবে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ