পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের স্থানে মসজিদই হবে মন্দির নয়; গায়ের জোরে ব্রাহ্মণ্যবাদী সাম্প্রদায়িক ভারত রাম মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। বাবরি মসজিদ ভেঙে রাম মন্দির নির্মাণের অশুভ চক্রান্তও একদিন ধুলোয় মিশে যাবে।
তুরস্কের আয়া সোফিয়ার মতো ভারতের বাবরি মসজিদেও একদিন আযানের সুমধুর ধ্বনি উচ্চারিত হবে ইনশাআল্লাহ। বাবরি মসজিদের মর্যাদা রক্ষায় মুসলিম উম্মাহ যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত রয়েছে। গতকাল বিভিন্ন মসজিদে খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জুমার নামাজে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়। অধিকাংশ মসজিদে জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় রাস্তার ওপর মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায় করতে হয়েছে। রাজধানীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, ইবাদত কবুল হবার কতিপয় শর্ত রয়েছে। প্রত্যেক বান্দাকে এখলাসের সাথে ইবাদত করতে হবে। হালাল রুজি ভক্ষণ করতে হবে। রাসূল (সা.) এর তরিকা অনুযায়ী ইবাদত করতে হবে। পেশ ইমাম জিলানী বলেন, পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক নির্দেশ করেছেন, একমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্য যেনো বান্দা ইবাদত করে। আল্লাহপাক হুকুম করেছেন, হে রাসূলগণ আপনারা হালাল রুজি ভক্ষণ করুন এবং নেক আমল করুন। পেশ ইমাম বলেন, রাসূল (সা.) সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশে বলেন, তোমরা নামাজ আদায় করো যেমনিভাবে আমাকে নামাজ আদায় করতে দেখছো। তিনি করোনা মহামারীর পাশাপাশি বন্যার্ত অসহায় মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী আরমানিটোলা শাহী জামে মসজিদে জুমা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেন, ব্রাহ্মণ্যবাদী সাম্প্রদায়িক ভারত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের জন্য অপপ্রয়াস চালালেও ইনশাআল্লাহ অদূর ভবিষ্যতে এই মসজিদ আল্লাহর বান্দাদের সিজদাগাহে পরিণত হবে। তুরস্কের আয়া সোফিয়া গ্রান্ড মসজিদকে যেমন রোখা যায়নি তেমনি বাবরি মসজিদকেও রোখা যাবে না। মাওলানা মুসা বিন ইযহার দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানবতার পাশে দাঁড়িয়ে ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব পালনে দেশের বিত্তবান এবং সর্ব সাধারণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি নেত্রকোণার হাওড়ে ট্রলার ডুবিতে শহীদ হওয়া আলেম হাফেজদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন।
উত্তর বাড্ডা কামিল মাদরাসা মসজিদে খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম মাওলানা আবু ইয়াহয়া জাকারিয়া আল-হুসাইনী সকলকে ঈমানী চেতনায় বলীয়ান হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঈমানী দুর্বলতার কারণে পৃথিবীতে আজ মুসলমানরা কোণঠাসা। একসময় তাকওয়ার বলে বলীয়ান হয়ে গোটা পৃথিবী শাসন করেছিলেন মুসলমানরা। তাকওয়া থেকে দূরে সরে যাওয়ায় আজ আমরা অনুকম্পার জাতিতে পরিণত হয়েছি। বায়তুল মাকদিস সফরকালে হযরত উমর (রা.) বলেছিলেন, আমরা এমন এক জাতি আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে ইসলাম দিয়ে সম্মানিত করেছেন। সুতরাং ইসলামের বাইরে মুসলমানদের কোনো সম্মান মর্যাদা নেই। পেশ ইমাম বলেন, করোনা মহামারী বিশ্ব পরিস্থিতিকে পরিবর্তন করে দিয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, মানুষের নৈতিকতার কোনো উন্নতি হচ্ছে না।
করোনার পরীক্ষায় মানুষ নীতিবান হয়ে যাক, এটি আল্লাহ তায়ালা চান। যেমন তিনি বলেন, স্থলে ও পানিতে যে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে তা মানুষের পাপের কারণে। আর তিনি তাদেরকে কোনো কোনো পাপের শাস্তি দেন, যাতে তারা ফিরে আসে (সূরা রূম)। পেশ ইমাম বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য কিছু সুখ দুঃখের খবর রয়েছে। তার একটি হচ্ছে তুরস্কের আয়া সোফিয়ায় আযান ধ্বনিত হয়েছে। আল্লাহর উদ্দেশে নামাজ চলছে, সেটি ছিলো জাদুঘর তা এখন মসজিদ, যা আমাদের জন্য সুখবর। অপরদিকে, প্রতিবেশী ভারতে ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদের স্থানে রাম মন্দির স্থাপন করা হচ্ছে। বাবরির বিষয়ে আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার বাবরি মসজিদের স্থানে মসজিদই হবে, মন্দির হবে না। সুতরাং বাবরিসহ পৃথিবীর সকল মসজিদের মর্যাদা রক্ষায় মুসলিম উম্মাহ যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত রয়েছে।
চকবাজার ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতিব শাইখুল হাদীস মুফতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, বাবরি মসজিদ ভেঙে রাম মন্দির নির্মাণের অশুভ চক্রান্তও একদিন ধুলোয় মিশে যাবে। তুরস্কের আয়া সোফিয়ার মতো ভারতের বাবরি মসজিদেও একদিন আযানের সুমধুর ধ্বনি উচ্চারিত হবে ইনশাআল্লাহ। খতিব আফেন্দি বলেন, পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ এরশাদ করেন তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হতে পারে? যে আল্লাহর মসজিদসমূহে আল্লাহর নাম উচ্চারণে বাধা প্রদান করে এবং সেগুলোকে বিরান করার চেষ্টা করে। সুতরাং মসজিদে যেতে বাধা দেয়া কিংবা মসজিদ ভেঙে সেখানে মন্দির বা গির্জা নির্মাণের সাথে যারা জড়িত তারা সবাই জালেম। এসকল জালেমের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশসমূহকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে মহান আল্লাহর সাহায্য আসবেই ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে এ ধরণের আক্রমণ অব্যাহত থাকলে করোনা মহামারী ও বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগমুক্ত বিশ্বের আশা করা মূর্খতা ছাড়া আর কিছু নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।