Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকায় ফিরছে মানুষ

রেল স্টেশন ছাড়া কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে গিয়েছিলেন কর্মজীবী মানুষ। ছুটি শেষে আবারও তারা কর্মস্থল ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। এ কারণে দেশের সড়ক-মহাসড়ক, নদী বন্দর, বাস টার্মিনাল ও রেল স্টেশনে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ দেখা গেছে। একমাত্র রেল স্টেশন ছাড়া কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। ঈদের ছুটিতে যারা গ্রামের বাড়িতে গেছেন তারা ফিরবেন আরও কয়েকদিন ধরে। যে কারণে রাজধানী এখনও ফাঁকা। অফিস খুললেও মার্কেট, বিপনীবিতান এখনও খোলেনি। যানজটবিহীন ব্যস্ত এলাকাগুলো দেখলে অচেনা মনে হয়।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে সদরঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকায় ফেরা অধিকাংশ লঞ্চেই ছিল কর্মজীবী মানুষের ভিড়। লঞ্চের ডেক থেকে শুরু করে কেবিন এমনকি কেবিনের সামনের গলিপথেও মানুষের চাপ দেখা গেছে। টার্মিনালের প্রতিটি পল্টুনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধির কোনও নমুনা দেখা যায়নি। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে ছিল না মাস্কও।

বরিশাল থেকে আসা যাত্রী খোরশেদ আলম বলেন, গতকাল অফিস খুলেছে। স্যারকে বলে একদিন অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছি। আজ অফিসে যোগ দিতে হবে। তাই লঞ্চে করে চলে আসলাম। লঞ্চে তো মানুষের জন্য পা রাখার জায়গা নেই। কোনোভাবে ডেকের এক কোণে একটু বিছানা করে নিয়েছি। রাতে বৃষ্টিও হয়েছে। নির্ঘুম রাত কেটেছে। মানুষের চেঁচামেচি আর প্রচন্ড ভিড় দেখে মনে হচ্ছে যেন করোনা বলতে কিছুই আর নেই। এর পরেও আসতে হয়েছে। কারও মুখে মাস্কও নেই। অফিস তো আর এসব বুঝবে না। তাই করোনা ঝুঁকি মাথায় রেখেই চলে এসেছি। হাতিয়া থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চ এমভি তাশরীফের যাত্রী বশির উদ্দিন বলেন, গতকাল সাড়ে ১২টার দিকে লঞ্চ ছাড়ার পর মনপুরা ও ভোলার কয়েকটি ঘাট থেকে যাত্রী নেওয়ার পরপরই পুরো লঞ্চ ভর্তি হয়ে যায়। মানুষের ভিড়ে কোথাও কোনও জায়গা ফাঁকা ছিল না। অনেক কষ্ট করে ঢাকায় এসেছি।

গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, অধিকাংশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার বাস ঢাকায় আসছে। যারা বাসে পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছেন তারা পাশাপাশি দুই সিট দখল করেই এসেছেন। বিষয়টি নিয়ে পরিবহন চালকরা জানিয়েছেন, যাত্রীরা মানতে রাজি হয়নি। তারা বলছেন, তারা আত্মীয়-স্বজন। সে কারণেই তারা পাশাপাশি সিটে বসেছেন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, যাত্রীদের চাপ কিছুটা বাড়ছে। তবে ফেরি ঘাটগুলোতে ভিড় থাকার কারণে জট লেগে যাচ্ছে। আমরা সব পরিবহন মালিকদের বলে দিয়েছি কোথাও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে পরিবহনে যাত্রী নেওয়া যাবে না।
কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে একেবারে ভিন্নচিত্র। অর্ধেক যাত্রী বহন করে ট্রেনগুলো আসছে। যাত্রীরা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ট্রেন থেকে নেমে একইভাবে দূরত্ব বজায় রেখে হেঁটে আসছেন। কমলাপুর স্টেশনে প্রবেশের ক্ষেত্রে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দায়িত্বরতরা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সহায়তা করছেন। দিনাজপুর থেকে আসা যাত্রী বাদশা মিয়া বলেন, ট্রেনের ভ্রমণ এখন খুবই আরামদায়ক। সবচেয়ে বড় কথা করোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ট্রেনগুলোতে খুবই কঠোরভাবে নিয়ম মানতে হয়েছে। সবাই খুবই সচেতন। পার্বতীপুর থেকে আসা যাত্রী ফিরোজ বলেন, ট্রেনে শুধু স্বাস্থ্যবিধি নয় সব ধরনের নিয়মেই কড়াকড়ি আরোপ করাতে খুবই সুন্দর পরিবেশ হয়েছে। বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করার দিন শেষ হয়ে গেছে। বিনা টিকিটে কোনো যাত্রী, হকার, হিজড়া কাউকে ট্রেনে উঠতে দেয়া হয়নি। ঈদের মৌসুমে এটা আগে কল্পনাও করা যেতো না। তিনি ট্রেনের এই ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ