পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই দেখা দিয়েছে বন্যা। দেশে ৩১ জেলায় বন্যায় ৪১ লাখ মানুষ পানিবন্দি। বাদ পড়েনি মন্ত্রী-এমপিররা এবং দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিমন্ত্রী-এমপি মারা গেছেন। আবার একাধিক মন্ত্রী ও কয়েকজন এমপি করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে বেশির ভাগ মন্ত্রী-এমপিই এবার ঢাকায় ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন।
গত ৫ মাস ধরে লকডাউনের মধ্যে রয়েছে দেশের মানুষ। এরই মধ্যে দেশে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ৮৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৮৮৯ জনে। এই প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে এবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী এবারের ঈদ উদযাপন করতে হবে। ঈদে রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকায় যান এবং এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন। কিন্তু এবারও সেই সুযোগ থাকছে না। মন্ত্রিসভায় সদস্যরা ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবছরের মতোই সরকারি বাসভবন গণভবনে ঈদ উদযাপন করবেন। প্রতি বছর ঈদের দিন সবাইÑ তিনি গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন। এবার সেটা হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
করোনার শুরু থেকেই বেশিরভাগ মন্ত্রী-এমপি ও নেতাই ঢাকায় অবস্থান করছেন। করোনার কারণে অনেকেই সময় কাটাচ্ছেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। করোনার কারণে দীর্ঘ ৫ মাস ঘরবন্দি থেকেই ফোনে কিংবা অনলাইনে যোগাযোগ রেখেছেন নির্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতাদের কেউ কেউ দুর্যোগের মধ্যেও এলাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছেন গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে। আবার সরকারি দলের অনেক এমপিরা বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করতে যাননি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনকে দিকনির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি মানুষকে ত্রাণ তুলে দিয়েছেন নিজের হাতে। তবে এবার খোলা মাঠে ঈদুল আজহা নামাজ আয়োজন না করার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। এর ফলে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা এবং ক্ষমতাসীন দল এবং বিএনপির নেতারা ঢাকাতেই ঈদ করছেন। এবার গণভবনেও শুভেচ্ছা বিনিময়ের কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না। সরাসরি দেখা-সাক্ষাতের সুযোগ নেই আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গেও। ফলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই ঈদ উদযাপন করবেন সবাই। ঈদের আনন্দ নিজ পরিবার ও জনগণের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চান রাজনৈতিক দলের নেতারা।
প্রশাসনের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য অনেক মন্ত্রণালয় ঈদের ছুটি বাতিল করেছে। সে মন্ত্রণালয়গুলো হচ্ছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, রেলপথ বিভাগ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও পরিবহন সেতু বিভাগের কিছু অফিস খোলা রাখা হয়েছে এবং কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য আদেশ জারি করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। করোনার শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তিনি সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবনেই অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই প্রতিদিন ভিডিও কনফারেন্সে দলের নির্দেশনা নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। ঈদের দিন তিনি জাতীয় সংসদ ভবনের মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। এরপর পরিবারের সঙ্গেই থাকবেন।এরপর নেতাকর্মীদের সঙ্গে টেলিফোনে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ঈদের দিনও নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী বই পড়ায় ব্যস্ত থাকবেন।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইলে ঈদ করবেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবার রংপুরে যাচ্ছেন না, ঢাকায় ঈদ করবেন। কারণে এখনো চিকিৎসা নিচ্ছেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করে পরেদিন ঢাকায় আসবেন। রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ঢাকায় ঈদ করছেন, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম ঢাকায় ঈদ করবেন। তবে শিক্ষা-উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল চট্টামে ঈদ করবেন। মহিলা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা ঢাকা থাকবেন।
ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। করোনার কারণে সৃষ্ট দুর্যোগের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন নির্বাচনী এলাকার অস্বচ্ছল পরিবারের সঙ্গে। প্রতি মাসে তার প্রাপ্ত ভাতা নিজে খরচ না করে জমিয়ে রাখেন এবং নির্দিষ্ট সময় পরপর এ জমানো ভাতা তার নিজ এলাকার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রদান করেন। যা তিনি ঈদ শুভেচ্ছা হিসেবেই বিতরণ করছেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মৌলভীবাজারে নিজ নির্বাচনী এলাকার দুই হাজার ৮০০ পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা এবার ঢাকায় ঈদ করছেন। তারা হলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. রেজাউল আহসান ঢাকায় ঈদ করছেন। স্থানীয় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করে নিজ বাসাতেই থাকবেন। টেলিফোনে আত্মীয়স্বজন ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, এক দিনে বন্যা এবং করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সব মিলিয়ে আমাদের একটা প্রতিক‚ল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, যে কোনো প্রতিক‚ল পরিস্থিতি মোকাবিলার সাহস বাংলাদেশের মানুষের আছে। আমাদের সবার আশ্রয়স্থল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের ঈদের তুলনায় এবারের ঈদটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। মানুষ ঘরবন্দি। তারপরও মানুষ ঘরে বসেই ঈদের আনন্দ উদযাপন করবে। আমিও আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে ঈদের দিন ঢাকায় থাকছি। তারপর আমি আমার নির্বাচনীয় এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।