Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

উপসর্গে মৃত ১২

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা উপসর্গ সর্দি, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সারা দেশে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
যশোর ব্যুরো জানায়, যশোরে গতকাল আরো ৬০জনের করোনাভাইরাস পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। কমার কোন লক্ষণ নেই। বাড়ছে তো বাড়ছেই। যশোরের সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গতকাল যবিপ্রবি ল্যাবে ১৭৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬০ জনের করোনা পজেটি রিপোর্ট পাওয়া গেছে। যবিপ্রবি সূত্র জানায়, যবিপ্রবি ল্যাবে যশোর ও মাগুরা জেলার মোট ১৯৭জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে যশোরের ৬০জন ছাড়া সবগুলো নেগেটিভ রিপোর্ট হয়েছে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তারের পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য জানান, গতকাল দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৩৯ জনে। এ বিভাগে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৬৫ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ৬ হাজার ১৯২ জন।
রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে ১১৫ জন, নওগাঁয় একজন, নাটোরে ৮ জন, জয়পুরহাটে ২ জন, বগুড়ায় ৭১ জন, সিরাজগঞ্জে ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পাবনায় কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। একই সময় সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ২৫১ জন। এছাড়াও এ দিনে রাজশাহীতে একজন, চাপাইনবাবগঞ্জে একজন ও বগুড়ায় একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি জানান, রাজশাহী বিভাগে আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ বগুড়ায় ৪ হাজার ৬২৬ জন। এছাড়াও রাজশাহী জেলায় ২ হাজার ৮৬৬ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪১৬ জন, নওগাঁয় ৯২২ জন, নাটোরে ৪০৫ জন, জয়পুরহাটে ৬৬৭ জন, সিরাজগঞ্জে ১ হাজার ৩১৫ জন ও পাবনায় ৮২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত বিভাগের আট জেলার মৃতের সংখ্যা ১৬৫ জন। এর মধ্যে রাজশাহীতে ২৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫ জন, নওগাঁয় ১৩ জন, নাটোরে একজন, জয়পুরহাটে দুইজন, বগুড়ায় ১০১ জন, সিরাজগঞ্জে ১১ জন ও পাবনায় নয়জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। এ পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগে সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৬ হাজার ১৯২ জন করোনা আক্রান্ত রোগি। এর মধ্যে রাজশাহীর ১১০৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৯৪ জন, নওগাঁয় ৬৯৫ জন, নাটোরে ২১২ জন, জয়পুরহাট ২০০ জন, বগুড়ায় ২ হাজার ৯৯৬ জন, সিরাজগঞ্জ ৩৯১ জন ও পাবনায় ৩৯৭ জন।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটে এক সপ্তাহ আগের অবস্থানে পৌছেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় নতুন করে আরো ১০২ জনের দেহে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এর আগে গত ২৩ জুলাই ১৩০ জন আক্রান্ত হবার কথা বলা হয়েছিল। এসময়ে ঢাকার দুটি হাসপাতালে পিরোজপুরের নেসারাবাদ এবং পটুয়াখালীর বাউফলের দুজন করোনা রোগীর মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়া শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে বরিশালের আরো দুজন মারা গেছেন। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ২৮৭ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৯৫ জনের দেহে করোনা ভাাইরাস সনাক্ত হয়েছে। করোনা সনাক্তের হার ৩৩%-এরও বেশি।
এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে করেনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা সরকারি হিসেবে সাড়ে ৫ হাজার অতিক্রম করে আরো ৭৭ জন যোগ হল। মৃত্যুর সংখ্যাটা ১০৯ বলা হলেও সে তালিকায় গত ২৪ ঘণ্টায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মৃত দুজনের হিসেব ধরা হয়নি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবনুযায়ী এসময়ে আরো ১০৮ জন সহ সর্বমোট ৩ হাজার ৩১৪ জনের সুস্থ হয়ে ওঠার কথা বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসবনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল,বরগুনা ও ঝালকাঠীতে করেনা সংক্রমণ যথেষ্ঠ বেড়েছে। বরিশালে নতুন আক্রান্তের সংখ্যাটা পূর্ববর্তি ২৪ ঘণ্টার ১৩ থেকে মঙ্গলবারে ৩০ জনে উন্নীত হয়েছে। ফলে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়াল ২ হাজার ৩৫৬ জনে। মৃতের সংখ্যা ৪০। আর গত ২৪ ঘণ্টায় নুতন ৫০ জনসহ ১ হাজার ৪৩২ জন সুস্থ হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে বলা হয়েছে। তবে এখনো বরিশাল জেলা ও মহানগরী করোনা সংক্রমণে দক্ষিণাঞ্চলের হটস্পট হিসেবে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানেই রয়েছে। গত ৪ জুলাই এ মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয় বরিশাল জেলায়, ৬২ জন। আর ২৬ জুলাই সর্বনি¤œ সংক্রমন ছিল ৮। কিন্তু এর পরের দুদিনই তা আবার ক্রমশ বাড়ছে।
ঝালকাঠির পরিস্থিতি আরো খারাপ। জেলাটিতে আগের দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা একজন থাকলেও গত ২৪ ঘণ্টায় তা ২২-এ উন্নীত হয়েছে। জেলায় এপর্যন্ত মাট ৪৫৮ আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১২ জন। আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ জন সহ মোট সুস্থ হয়েছেন ২৫৭। বরগুনাতেও গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের আট থেকে ১০ জনে উন্নীত হয়েছে। জেলাটিতে মোট আক্রান্ত ৫৯৫ হলেও মারা গেছেন ১৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় ৭ জন সহ মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যাটা ৩৩৭।
অপরদিকে পটুয়াখালীতে এসময়ে আক্রান্তর সংখ্যা আগের দিনের ১৭-এর স্থলে ১৪ জনে হ্রাস পেলেও জেলার বাউফলের এক রোগী ঢাকার একটি সরকারী হাসপাতালে মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলাটিতে মৃত্যুর সংখ্যা ২৯-এ উন্নীত হল। আক্রান্তের সংখ্যাও সরকারী হিসেবে হাজার ছুই ছুই-৯৯৬। পিরোজপুরে আক্রান্তের সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় আগের দিনের ২৭ থেকে ২১-এ হ্রাস পেলেও জেলাটির নোসারাবাদের একজন করোনা রোগী ঢাকার হাসপাতালে মারা গেছেন। ফলে জেলাটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাড়াল ১০। সরকারী হিসেবে আক্রান্ত ৬৬২।
ভোলাতেও আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৮ থেকে গতকাল ৫ জনে হ্রাস পেয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালের সদ্য স্থাপিত পিসিআর ল্যাবে দ্বিতীয় দিনে ২১ জনের নমুনা পরিক্ষায় এ পাঁচজন রোগীর দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে জেলাটিতে সরকারি হিসবে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ শতে পৌঁছল, মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১৪ জন সহ জেলাটিতে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৩৬২ বলে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছে।
অপরদিকে শের এ বাংলা মেডিকেল হলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে সোমবার বিকেল থেকে সন্ধার মধ্যে দুজনের মৃত্যু ঘটেছে। এরমধ্যে বরিশালের শায়েস্তাবাদের ৫০ বছর বয়স্ক একজন করোনা পজেটিভ নিয়ে মৃত্যু বরন করলেও আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যুবরনকারী ৯০ বছরের এক বৃদ্ধের নমুনা পরিক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়নি। এনিয়ে হাসপাতালটির এদুটি ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত ১ হাজার ১৫৭ জনের মধ্যে ১৬৩ জনের মৃত্যু হল।
হাসাতালটির আইসালেশন ওয়ার্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৬জন রোগী ভর্তি হলেও এসময়ে ছাড়া পেয়েছেন ১০জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৩৬জন। অপরদিকে করোনা ওয়ার্ডে ৪ জন নতুন রোগী ভর্তি করা হলেও ছাড়া পেয়েছেন ৫ জন। চিকিৎসাধীন ৩০ জন। হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃতদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ জনের দেহে করোনা পজেটিভ ফল মিলেছে বলে জানা গেছে।
খুলনা : করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে খুমেক হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কড়াইকাঠি এলাকার আকবর (৭০), দিঘলিয়া উপজেলার আড়ংঘাটা এলাকার আসাদুজ্জামান (৭৮), সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার রামনগর এলাকার শেখ আবুল বাশার (৮৫) ও বাগেরহাটের কাড়াপাড়া এলাকার আবদুর রহমান (৮০)।

কুমিল্লা : গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে করোনা লক্ষণ ও উপসর্গ নিয়ে দুইজন পুরুষ ও একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল কুমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, মৃত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আইয়ুব আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম (৭২), বুড়িচং উপজেলার রায়পুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে লুতু মেম্বার (৬৫) ও দাউদকান্দি উপজেলার মঞ্জু মিয়ার স্ত্রী বিলকিস বেগম (৩৪)।
বগুড়া : কোভিড-১৯ রোগের উপসর্গ নিয়ে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ইশরাক আলী (৬২) নামের এক ব্যক্তি। সকাল ৮টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি দিনাজপুরর জেলার বিরামপুর উপজেলার মনিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সহকারী।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠির রাজাপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে আবদুল জলিল (৭৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা জানায়, সোমবার দুপুরে রাজাপুরের বাঘরি এলাকার আবদুল জলিল জ্বর, কাশি ও বুকে ব্যাথা নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। রাতে তাঁর শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যাথা বেড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, কুষ্টিয়ায় নতুন করে আরো ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পিসিআর ল্যাবে ২৭ জুলাই মোট ২৮২ টি স্যাম্পলের নমুুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কুষ্টিয়া ৫৫, চুয়াডাঙ্গা ৯৪, ঝিনাইদহ ৭৭, মেহেরপুর ১৫ ও নড়াইল এর ৪১ নমুনা ছিলো। তাতে কুষ্টিয়ায় নতুন করে আরো ৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার ২ জন, দৌলতপুর উপজেলায় ২ জন, মিরপুর উপজেলায় ১ জন, খোকসা উপজেলার ২ জন ও ভেড়ামারা উপজেলার ১ জন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় আক্রান্ত ২ জনের ঠিকানাঃ কে. জি. এইচ ১ জন ও কবুরহাট জগতি ১ জন। দৌলতপুর উপজেলায় আক্রান্ত ২ জনের ঠিকানাঃ পিয়ারপুর ১ জন ও রেফায়েতপুর ১ জন। খোকসা উপজেলার আক্রান্ত ২ জনের ঠিকানাঃ কালিবাড়ী ১ জন ও মাষ্টারপাড়ায় ১ জন। ভেড়ামারা উপজেলার আক্রান্ত ১ জনের ঠিকানাঃ নওদা খেমিরদিয়ার ১ জন। মিরপুর উপজেলায় আক্রান্ত ১ জনের ঠিকানাঃ হাসপাতাল পাড়া ১ জন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘরের বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। অতি-প্রয়োজনীয় না হলে বাহিরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন। অনুগ্রহ করে সতর্ক থাকুন, সাবধানে থাকুন। এদিকে, কুষ্টিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শওকত আলী (৭২) নামে এক বৃদ্ধর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনায় ৩১ জনের মৃত্যু হলো।
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা, গাড়ী চালকসহ নতুন করে ২০ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল বিকালে শনাক্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার।
নতুন ২০ জনসহ সাতক্ষীরায় এ পর্যন্ত ৬৮০ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন। আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এখন পর্যন্ত ২১ জন। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৫৩ জন। এদিকে, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে ভর্তির ৪৫ মিনিট পর করোনার উপসর্গ নিয়ে এক বাইসাইকেল মিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল ৯টার দিকে তিনি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত ব্যক্তি সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনিসহসহ জেলায় নতুন করে ৫২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫১৫ জনে। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি, জেলা বাস ও মিনি বাস মালিক সমিতির মহা-সচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনি, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সার্জারী কনসালণ্টেণ্ট আবু হানিফ ও টাঙ্গাইল পুলিশের ডিএসবি শাখার একজন এসআইসহ ২৯ জন, নাগরপুরে ২, মির্জাপুরে ৩, বাসাইলে ৭, কালিহাতি ৭, ভুঞাপুর ১ ও ধনবাড়িতে ৩ জন রয়েছে।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন অফিস জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ৮৫৩ জন সুস্থ হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। বাড়িতে ও আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৬০২জন। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেন্ডিং রয়েছে ৯০টি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৮টি নমুনা প্রেরণ করা হয়। এসব নমুনার মধ্যে গতকাল ৫২জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ১০ জনের পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবোধয়াক ডা. সদর উদ্দিন জানান, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে সর্বমোট ৫১জন ভর্তি হয়। এদের মধ্যে সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছে ২৮জন। বর্তমানে ১১জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় সব চেয়ে বেশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে। শহরের হাট-বাজার জনসাধারণের চলাচলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলার বালাই নেই। সদর উপজেলায় সর্বমোট ৫৩৯জন আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছে ২২৮জন। মারা গেছে ৯জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩০২জন।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, করোনা আক্রান্ত পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আবুল কালাম াদ ঢাকা মুগদা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সন্ধ্যায় মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মো. কামরুজ্জামান।
পুঠিয়া (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পুঠিয়ায় গত তিনদিনে নয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তরা হলেন, জেহের আলী পুঠিয়া অগ্রাণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার ও পুঠিয়া পৌরসভার কাঁঠালবাড়িয়া ওয়ার্ডের কাজি মোস্তফা কামালের মেয়ে ফাহমিদা খাতুন (২৮), উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া গ্রামের মৃত ছানাউল্লার ছেলে কিয়ামত আলী (৫৫), পুঠিয়া পৌরসভার ৭নং কাঁঠাবাড়িয়া (ঢাকা পাড়া) ওয়ার্ডের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে সায়েম আক্তার (২৫), পুঠিয়া কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও জিউপাড়া ইউনিয়নের করোনাকালীন ট্যাগ অফিসার এবং পুঠিয়া পৌরসভার ৪নং কৃষ্ণপুর (পশ্চিমপাড়া) ওয়ার্ডের মৃত আব্বাস উদ্দিনের ছেলে মাসুদ করিম (৩৮), পুঠিয়া পৌরসভার ৭নং কাঁঠাবাড়িয়া (হলদার পাড়া) ওয়ার্ডের আরশাদ আলীর ছেলে মনিরুল ইসলাম (৩৫), পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং পুঠিয়া সদর ইউনিয়নের গন্ডগোহালী গ্রামের আমীর আলীর স্ত্রী কাকলি খাতুন (৩৯), পুঠিয়া পৌসভার রামজীবনপুর ৬নং ওয়ার্ডের মোশারফ হোসেনে ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৩), উপজেলার বেলপুকুর ইউনিয়নের মধ্য জামিরা গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে মতিউর রহমান (৭৫) ও উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের মৃত সদর উদ্দিনে ছেলে আজিজুর রহমান দুলাল মেম্বার। আক্রান্ত চারজনকে নিয়ে উপজেলায় করোনায় আক্রন্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৫২ জন এবং এ পর্যন্ত করোনা থেকে মুক্ত হয়েছে ১৫ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার নাজমা আক্তার জানান, গত ২১ জুলাই গতকাল ফাহমিদা খাতুন ও কিয়াম আলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দেন।
ফেনী : ফেনীতে জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ কোভিড-১৯ রোগের নানা উপসর্গ নিয়ে নুরুল করিম (৬৫) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। গতকাল সকালে ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার মৃত্যু হয়। তিনি ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
নাটোর : নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ছাতারভাগ গ্রামে করোনার উপসর্গ নিয়ে ইউনুস আলী (৪৭) নামের এক গুড় ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে ওই ব্যবসায়ী বগুড়ায় মেয়ের বাড়ি থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরিবারের লোকজন তাকে বাড়িতে এনে রেখেছিলেন। গতকাল ভোরে ইউনুস আলীর মৃত্যু হয়। সকালেই তড়িঘড়ি করে তাকে দাফন করেন পরিবারের লোকজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ