পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এবার করোনা সনদ জালিয়াতি করলেন সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের কন্যা ঐশী খান। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের এই সদস্যের কন্যা করোনা সনদ (কোভিড-১৯) জালিয়াতি করেন। তিনি ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করে পজেটিভ রিপোর্টকে নেগেটিভ বানিয়ে বিদেশ যাওয়ার চেস্টা করে ধরা পড়েন। কাগজে ‘করোনা নেগেটিভ’ রিপোট জমা দিলেও দেশ ছাড়ার আগে ইমিগ্রেশনে অনলাইন চেকে তার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। গতকাল রোববার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে বিষয়টি ধরা পড়লে ঐশীকে লন্ডন যেতে দেয়া হয়নি। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানা যায়, ঐশী খানকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার শেরেবাংলা নগর ঢাকা এই ঠিকানায় কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ দেয়া হয়েছিল। শাজাহান খান সাংবাদিকদের জানান, এই সনদে স্বাক্ষর ছিল যে চিকিৎসকের তার নাম উল্লেখ রয়েছে এমডি বায়েজিদ বিন মনির।
বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি-বিদেশি নাগরিকদের জন্য করোনা সার্টিফিকেট (নেগেটিভ) বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। এ নির্দেশনা অমান্য করে করোনা আক্রান্ত রোগী ঐশী খান জালিয়াতি করে ভুয়া পজেটিভ সার্টিফিকেটকে নেগেটিভ সার্টিফিকেট বানিয়ে লন্ডনে যাওয়ার চেস্টা করেন। জানতে চাইলে বিমানবন্দরের অ্যাসিস্ট্যান্ট এয়ারপোর্ট হেলথ অফিসার ড. জহির ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে একজন করোনা পজিটিভ যাত্রী আসেন। তাকে লন্ডনগামী ফ্লাইটে যেতে দেয়া হয়নি। বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ে লন্ডনে পড়াশোনা করে। এরই মধ্যে সে ওখান থেকে অনার্স সম্পন্ন করেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির আগে ছুটিতে বাংলাদেশে আসে। এরপর আর যেতে পারছিল না। লন্ডন যাওয়ার জন্য ২৪ জুলাই আমার মেয়ে মহাখালীতে ডিএনসিসির আইসোলেশন সেন্টারে কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার জন্য দিয়েছিল। তার মেসেজ আসে যে সে কোভিড-১৯ নেগেটিভ। এরপর আমার ভাগনে মহাখালীতে গিয়ে কোভিড-১৯ সনদ নিয়ে আসে। সেই সনদে কোভিড-১৯ নেগেটিভ উল্লেখ করা ছিল। গতকাল সকালে লন্ডন যাবার জন্য আমি মেয়েকে নিজে বিমানবন্দরে দিয়ে আসি। এরপরে জানতে পারি যে আমার মেয়ের কোভিড-১৯ পজিটিভ। তিনি বলেন, এখন যে মেইল দেখতে পাচ্ছি সেটাতে কোভিড-১৯ পজেটিভ উল্লেখ করা রয়েছে। আগের সনদটি পাওয়া যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, রোববার (২৬ জুলাই) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০০১ ফ্লাইটে লন্ডন যাওয়ার জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে প্রবেশ করেন শাজাহান কন্যা ঐশী। ইমিগ্রেশনে তার সঙ্গে থাকা করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট সন্দেহ হয় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার। তারা সনদ চেক করেন। ইমিগ্রেশন পুলিশ অনলাইনে করোনা সার্টিফিকেট চেক করলে তা পজিটিভ দেখায়। জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, ইমিগ্রেশনে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ায় বিমানের লন্ডন ফ্লাইটে একজন যাত্রীকে যেতে দেয়া হয়নি বলে জেনেছি।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০০১ ফ্লাইটটি লন্ডনের উদ্দেশে যাওয়ার কথা ছিল। ঐশী ওই ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন। তিনি ভিআইপি কাউন্টার দিয়ে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় তার করোনা সার্টিফিকেট নিয়ে ঝামেলা হয়। আমাদের ইমিগ্রেশন পুলিশ থেকে জানানো হয়, একজন যাত্রী করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে এসেছেন। কিন্তু আইইডিসিআরের সার্ভারে তার রিপোর্ট করোনা পজিটিভ। আমরা তাকে নিয়ে দ্রæত হেলথ ডেস্কে পাঠাতে বলি। কিছুক্ষণ পর ঐশী স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেস্কে আসেন। আমরা তার হাতে একটি করোনা ‘পজিটিভ’ সার্টিফিকেট দেখতে পাই। তার সার্টিফিকেট সার্ভারে সার্চ দিয়ে দেখতে পাই, তিনি সত্যিই করোনা পজিটিভ। এরপর অধিদফতর থেকে তাকে আর প্লেনে ওঠার অনুমতি দেয়া হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দরের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তিনি করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট জমা দিয়েছিলেন। তবে হেলথ ডেস্কে এসে তিনি করোনা পজিটিভ অর্থাৎ তার প্রকৃত রিপোর্ট দেখিয়েছেন। হতে পারে তিনি তার আসল রিপোর্টটি ব্যাগে করে নিয়ে এসেছিলেন। ইমিগ্রেশনের কাছে ধরা খাওয়ার পর নিজেই প্রকৃত রিপোর্ট দেখিয়েছেন। বিদেশ যাওয়ার জন্য হেলথ ডেস্কের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ঐশী বারবার অনুরোধ করলেও তাকে যেতে দেননি।
শিডিউল ফ্লাইটটি রোববার দুপুর ১২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্য ছেড়ে গেছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
শাজাহাান খানের মেয়ের করোনা সার্টিফিকেট জালিয়াতি নিয়ে গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ার খবরের তীব্র বিতর্ক হয়। নানা ধরনের মন্তব্য করা হয়। তবে বেশিরভাগ পাঠকের মন্তব্য ছিল এমন, ‘গরু ছাগল চিনলেই যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়, তাহলে ডায়াগোনস্টিক সেন্টার থাকলেই করোনা সনদ পাওয়া যাবে’ এমন থিউরিতে ঐশী খান করোনা সার্টিফিকেট পেয়েছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।