Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনাকালীন অনলাইন পাঠপদ্ধতির রোল মডেল ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০২০, ৬:৫২ পিএম

সবকিছুই চলছিল ঠিকঠাক। হঠাৎ করোনা ভাইরাসের সংক্রামণে লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে দেশের শিক্ষা কার্যক্রম। সংক্রমণ প্রতিরোধে চলতি বছরের বিগত ১৭ই মার্চ সরকারী ভাবে একযোগে বন্ধ ঘোষনা করা হয় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্থবিরতা নেমে আসে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া কার্যক্রমে। দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে।

এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পাঠ সম্পৃক্ত রাখতে বিষয়টি নিয়ে বিকল্প ভাবতে শুরু করেন জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম। ফলশ্রুতিতে সরকারী বন্ধের ঠিক নয় দিনের মাথায় বিগত ২৬শে মার্চ থেকে অনলাইন পাঠ পদ্ধতিতে অল্প পরিসরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন ময়মনসিংহ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ। এরপর ৩১শে মার্চ থেকে অনলাইন পাঠ পদ্ধতির কার্যক্রম শুরু করেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়। ফলে করোনাকালীন অনলাইন পাঠ পদ্ধতির রোল মডেল এখন ময়মনসিংহ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ। এ কনসেপ্ট নিয়ে বর্তমানে সারা দেশে শুরু হয়েছে অনলাইন পাঠ কার্যক্রম।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, প্রথম দিকে এ কার্যক্রমে প্রযুক্তিগত নানা জটিলতায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলতে না পারলেও দিনে দিনে এ কার্যক্রমের পরিধি বাড়তে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের সরব অংশ গ্রহনে উপস্থিতিও বাড়ছে অনলাইন পাঠ কার্যক্রমে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অনলাইন পাঠ কার্যক্রমে সকল পর্যায়ের শিক্ষকগণ প্রশিক্ষিত না থাকায় শুরুতেই বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে একটি সমন্বিত রুটিনের মাধ্যমে জেলার ৭৭জন অভিজ্ঞ শিক্ষকদের একটি প্রশিক্ষিত টিম পর্যায়ক্রমে শ্রেণীভিত্তিক ক্লাস নিচ্ছেন নিয়মিত। সেই সাথে অনলাইন পদ্ধতির কার্যক্রমে অনভিজ্ঞ শিক্ষকদের ভার্চুয়াল অংশ গ্রহনে প্রশিক্ষণ চলছে নিয়মিত। জুম এ্যাপস, গুগুল মিথসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলার ১৩টি উপজেলায় চলছে এ কার্যক্রম।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র আরো জানায়, জেলার মোট ৫৮৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৩৮টি মাদ্রাসা স্বপ্রনোদিত এ কার্যক্রমের আওতাভুক্ত। তবে প্রযুক্তিগত অসুবিধার কারণে সকল প্রতিষ্ঠানে অনলাইন পাঠ কার্যক্রম চালু না হলেও ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইন পাঠ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকী ৫০ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন পাঠের আওতাভুক্ত করতে কারিগরি কাজের পাশাপাশি ওই সকল শিক্ষকদের এ পাঠ পদ্ধতির অনলাইন প্রশিক্ষণ চলছে।

ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান আনাম জানান, গত ১৮ জুন থেকে উপজেলার ৫৩টি স্কুল ও ৪৬টি মাদ্রাসায় একযোগে ফেইসবুকের মাধ্যমে চলছে অনলাইন পাঠ কার্যক্রম। এর সাথে যুক্ত রয়েছে ৪০জন স্কুল শিক্ষক ও ৩০জন মাদ্রাসা শিক্ষক।

জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেন পাঠ বিমুখ না হয়। সে বিষয়টি মাথায় রেখে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে অনলাইন পাঠ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দেশে এ পদ্ধতিতে আমরাই প্রথম। তিনি আরো জানান, আমাদের এই কনসেপ্ট সর্ম্পকে অবগত হয়ে মাননীয় সচিব মহোদয় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। সেই সাথে এই কনসেপ্টের উপর প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে মন্ত্রনালয় থেকে। আমরা আশা করছি অনলাইন পাঠ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা করোনাকালীন ক্ষতি কিছুটা হলেও পুশিয়ে নিতে পারবে।

এবিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো: মিজানুর রহমান বলেন, বিগত ২৫মার্চ আইসিটি টির্চাস ফোরাম গঠনের মধ্য জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগীতায় অনলাইন পাঠ পদ্ধতি শুরু করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে এ পদ্ধতির পাঠদান সারা দেশে ব্যাপক সাঁড়া ফেলেছে। আশা করছি এ কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সুফল পাচ্ছে।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ বেলাল ২৩ জুলাই, ২০২০, ৯:০৯ এএম says : 0
    আপনাদের এই প্রযুক্তিতে আমরা অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। তাই আমরা আশা করি বাকি দিনগুলোতে সব ক্লাস নেওয়ার জন্য অনুরোধ রইল। প্রত্যেক ক্লাসের সব ক্লাস নেওয়া সম্ভব না হলেও অন্ত পক্ষে পাঁচটি করে সাবজেক্ট নেওয়া হোক। তাই আপনাদের কর্তৃপক্ষকে আমার পক্ষ থেকে অনুরো। আশা করি আপনারা আমার অনুরোধটি অতি আন্তরিকতার সাথে থাকবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack ali ২৪ জুলাই, ২০২০, ৬:২১ পিএম says : 0
    This is excellent --- but government should give money to each and every student to buy Internet... Majority students are poor-- specially their parents become unemployed.
    Total Reply(0) Reply
  • Jack ali ২৪ জুলাই, ২০২০, ৬:২১ পিএম says : 0
    This is excellent --- but government should give money to each and every student to buy Internet... Majority students are poor-- specially their parents become unemployed.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ