Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কৌশলে রোগী ভর্তি করে অতিরিক্ত বিল বাণিজ্য

জালিয়াতি ঢাকতে হাসপাতালের তথ্য গায়েব ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট দেখিয়ে ভর্তি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা পরীক্ষায় জালিয়াতি ঢাকতে রাজধানীর গুলশানের সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তথ্য গায়েব করা হয়েছে। এছাড়া রোগীদের কৌশলে ভর্তি করে অতিরিক্ত বিল আদায় করত হাসপাতালটি। শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাস নেগেটিভ রোগীদের ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে তাদেরও ভর্তি করা হতো। রোগীদের ভর্তি পর বিল ভাড়ানোর জন্য একই টেস্ট বারবার করানো হতো। তবে এসব অভিযোগ ঢাকতে হাসপাতালটি বিলের ডাটা পর্যন্ত ডিলিট করে দিয়েছে। তারপরও হাসপাতালটি শীলগালা করা হবে না বলে জানা গেছে।

র‌্যাব জানায়, অভিযানে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের বেশকিছু বিলের ডকুমেন্ট হাতে পেয়েছে। অতিরিক্ত বিল বাণিজ্যে অনেক তথ্য হাসপাতালের অ্যাকাউন্ট বা বিল বিভাগের কম্পিউটার থেকে ডিলিট করে দিয়েছে। চলতি বছরের জুনের কোনো ডাটাই হাসপাতালের সার্ভারে নেই। অভিযানের আগেই সমস্ত ডাটা ডিলিট করে ফেলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে কার নির্দেশে, কে এই কাজটি করেছেন সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

র‌্যাব আরো জানায়, ওই হাসপাতালে রোগী ভর্তি রেখে অতিরিক্ত বিল বাণিজ্য করা হতো। এছাড়া রোগীদের বিল বাড়াতে একই টেস্ট দুই থেকে তিন বার দেখানো হতো। করোনাভাইরাস নেগেটিভ রোগীদের ভুয়া পজিটিভ রিপোর্ট দিয়ে তাদেরও ভর্তি করা হতো। পাশাপাশি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত নানা টেস্ট দেখিয়ে তাদের আইসিউ ও কেবিনে রেখে বানানো হতো মোট অঙ্কের বিল।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম বলেন, হাসপাতালটির জুন মাসের সমস্ত বিলের ডাটা ডিলিট করে দিয়েছে। এছাড়া সহকারী পরিচালক ডা. মো. আবুল হাসনাতের তথ্যমতে, নয়টি র‌্যাপিড টেস্ট কিট উদ্ধার করা হয়েছে। আরও কিট ছিল, সেগুলো তারা সরিয়ে ফেলেছে। মামলা দায়ের হলে আরও তথ্য উদ্ধার করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, এসব অভিযোগের ভিত্তিতে গত রোববার বিকেলে হাসপাতালটিতে অভিযান চায় র‌্যাব। এ সময় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আবুল হাসনাত ও হাসপাতালের ইনভেন্টরি অফিসার শাহরিজ কবির সাদিকে আটক করা হয়। তবে গতকাল বিকেল পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা না হলেও মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় র‌্যাব।

গতকাল বিকেলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক সুজয় সরকার দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।
আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, হাসপাতালটিতে অভিযান চালানোর পর দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া দুজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা করে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে হাসপাতালটিকে প্রথমবারের মতো সতর্ক করে সময় দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত এক বছর আগে হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়। নবায়ন না করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছিল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সরকারের অনুমোদন পাওয়ার আগেই হাসপাতালটি কোভিড-১৯ টেস্ট করছিল। কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য হাসপাতালটি অনুমোদন পেলেও এখানে আর্টিফিসিয়াল মেশিন না থাকায় এক সপ্তাহ আগে অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ