Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাইকারের দেখা না মেলায় শঙ্কায় সৈয়দপুরের গরু-ছাগলের খামারিরা

ঈদুল আযহা অত্যাসন্ন

সৈয়দপুর (নীলফামারী) জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০২০, ৪:৪৮ পিএম

আর দিন দশেক পরই পবিত্র ঈদুল আযহা। অথচ নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খামারগুলোতে লালন-পালন করা গরু-ছাগলের জন্য এখনও পা রাখেনি পাইকারেরা। এতে খামারে লালন-পালন করা গরু-ছাগল নিয়ে চরম দুশ্চিতায় পড়েছেন খামারিরা। এ অবস্থায় তারা ভালো দাম পাওয়া তো দুরের থাক বরঞ্চ গরু-ছাগল বিক্রি নিয়ে চরম শঙ্কায় পড়েছেন। আর ঈদুল আযহা যতই ঘনিয়ে আসছে শঙ্কাও ততই বাড়ছে তাদের।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৭৬ টি খামার রয়েছে। আর এ সব খামারে ৯ হাজার ১৯০ টি গরু-ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয় হাজার পাঁচ শ’ ৯৬ টি গরু এবং দুই হাজার পাঁচ শ’ ৯৪ টি ছাগল ও ভেড়া।
সৈয়দপুরের বেশ কয়েকজন খামার মালিক জানান, মূলত কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে লাভের আশায় তারা গরু-ছাগল লালন পালন করে থাকেন। এতে তাদের খামারে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু বিদ্যমান করোনা ভাইরাসের প্রার্র্দুভাবে এখন পর্যন্ত খামারে কোন পাইকারের আগমন দেখা যাচ্ছে না। অথচ প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের পর পরই ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গবাদিপশুর পাইকাররা এসে গরু ছাগলের দরদাম ঠিক করে টাকা বায়না দিতেন। কিন্তু এবার করোনাকালে পাইকারদের যেমন দেখা মিলছে না, তেমনি স্থানীয়দের আগমন দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় তারা গরু-ছাগল বিক্রি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। একই সঙ্গে খামারের বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে আনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন খামারিরা।
সৈয়দপুরের খামার ব্যবসায়ী শহরের বাঁশবাড়ি এলাকার মেসার্স ইউসুফ হৃষ্টপুষ্ট খামার ও মেসার্স ইউসুফ ডেইরি ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী রোটারিয়ান মো. জামিল আশরাফ মিন্টু বলেন, এবারে তাঁর খামারে কোরবানির জন্য দুই শতাধিক গরু লালন-পালন করেছেন। গরুর শারীরিক গঠন অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত। তিনি বলেন, প্রতি বছরই রোজার ঈদের পরই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা খামারে এসে গরু কিনতেন। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত কেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। ফলে কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছেন তিনি।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের আদানী মোড়ের রাদিয়া ট্রেডার্সের নারী উদ্যোক্তা খামারি আফসানা ও সবুজ বাংলা খামারের মালিক আরজিনা বেগম জানান, তারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে ১৮-২০ টি গরু সারা বছর ধরে লালন-পালন করেছেন। এতে তাদের নিজেদেরও অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু তাদের খামারেও এখন পর্যন্ত কোন পাইকার আসেনি। ফলে করোনা পরিস্থিতিতে হাট-বাজারে ক্রেতা মিলবে কি-না এবং মিললেও সঠিক দাম পাওয়া যাবে কি-না এ নিয়ে চরম উৎকন্ঠায় পড়েছেন তারা।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুল হক বলেন, করোনার কারণে খামারে লালন-পালন করা গবাদিপশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। তবে এখনও সময় আছে খামারিদের গরু-ছাগল বিক্রির। খামারিরা যাতে হাট-বাজারে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে গরু-ছাগল বিক্রি করতে পারেন এবং হয়রানির শিকার না হয় এজন্য প্রশাসনের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ