Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাভারে কুরবানির পশুর হাট নিয়ে তেলেসমাতি কারবার

স্টাফ রিপোর্টার, সাভার | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২০, ৭:২৯ পিএম

সাভার পৌরসভা কর্তৃক কুরবানির পশুর হাট ইজারা নিয়ে জটিলতা যেন কাটছেই না। প্রতিবছর ঈদের মাত্র কয়েকদিন আগে তড়িঘড়ি করে ইজারার প্রস্তুতি শুরু করে পৌর কর্তৃপক্ষ তালগোল পাকিয়ে ফেলছে। বিশেষ করে পৌরসভার হাটের জন্য নির্ধারিত কোনো স্থান না থাকায় এনিয়ে তৈরী হয় গোলকধাঁধা। এবারও যার ব্যতয় ঘটেনি! ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও ইজারাদার চূড়ান্ত হয়নি। সিন্ডিকেট করে নামমাত্র দামে ইজারা দেয়ার আয়োজন চলছে। ইজারা চূড়ান্ত না হলেও রেডিও কলোনী স্কুল মাঠে হাটের সব আয়োজন চূড়ান্ত করেছে একটি পক্ষ। এরাই সাভার সরকারী কলেজ হোস্টেল মাঠে হাট আয়োজনের প্রস্তুই নিয়েছিল। পরে সরকারী বাধায় রেডিও কলোনী মাঠে হাট আয়োজনের জন্য গেট নির্মাণসহ খুটি গেড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে!
পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো জমির মালিকের সঙ্গে বিন্দুমাত্র আলোচনা না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো তিনটি স্থানের নাম উল্লেখ করে জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে আসছে। এতে জেলা প্রশাসন বিব্রত হচ্ছেন। এক পর্যায়ে ইজারাদারকে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে তার সুবিধামতো স্থান কুরবানির পশুর হাটের আয়োজন করতে হচ্ছে। অথচ পৌরসভা হাট ইজারা দেয়ার নামে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। পৌর কর্তৃপক্ষের এমন দায়সারা গোছের কাজের কারনে হাট ইজারা নিয়ে আগ্রহী কমে যাওয়ায় দরও কমতে শুরু করেছে। এতে পৌরসভার আয়ও কমছে। যা রাষ্ট্রের আয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ যেন এক তেলেসমাতি কারবার!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও এবারো হাটের স্থান চূড়ান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্টদের গলদঘর্ম অবস্থা। পৌর কর্তৃপক্ষ সাভার পৌরসভার সামনে পূর্বেকার পাইকারী কাঁচাবাজারের খালি জায়গা (যা হাটের জন্য উপযোগী নয়), বংশী নদীর পাড়ে (কোনভাবেই সম্ভব নয় ও জমির মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই) এবং এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাশে ভাগলপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ (সাভার সরকারী কলেজ হোষ্টেল মাঠ) কুরবানির হাটের জন্য নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়। কিন্তু সাভার সরকারী কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে একেবারেই অন্ধকারে ছিলেন। এ অবস্থায় সেখানে হাট আয়োজনের প্রাথমিক প্রস্তুতির শুরুতেই বাধা আসে। অবস্থা বিবেচনায় পশ্চিম ব্যাংক টাউনে নদীর পাড়ে প্রতিবন্দ্বী ফাউন্ডেশনের পাশে খালি জমিতে হাট করতে আলোচনা শুরু হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন ওই জমিতে হাটের প্রস্তুতি শুরু হলে স্থানীয়রা পৌর কর্তৃপক্ষের উপর নাখোশ হয়। এরপর ১৪ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে সাভার রেডিও কলোনী স্কুল মাঠে পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। যা আগে থেকেই আলোচনায় থাকলেও সবুজ সংকেত মিলছিল না।
সূত্র মতে, গতবছরও পৌর কর্তৃপক্ষ একই কায়দায় হাট ইজারা দিয়ে বিপত্তি সৃষ্টি করেছিল। এবার ১২ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত দরপত্র বিক্রি এবং ১৬ জুলাই জমাদান ও উন্মুক্ত করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিলেও তা সময়মতো হয়ে উঠেনি। এরপর ১৬ জুলাই থেকে ২০ জুলাই দরপত্র বিক্রি এবং ২১ জুলাই দাখিলের দিনধার্য করেছে। যার সবই হচ্ছে গোপনে। আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকায় কথিত বিজ্ঞাপন দিয়ে। আবার নিজেদের জমি না থাকা এবং কোনো স্থানের ব্যবস্থা না করেই পৌরসভার কুরবানির পশুর হাটের দরপত্র আহবান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মূলত হাট শুরুর কয়েকদিন আগে সিদ্ধান্তহীতার মধ্যে ইজারা দেওয়ার নামে ইজারাদারকে লাভ-লোকসানের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়ে আসছে পৌর কর্তৃপক্ষ। শেষ মুহুর্তে তড়িঘরি করে হাট বসানোর ইজারাদারকে গুনতে হয় বাড়তি টাকা, প্রস্তুতিতে থাকে ঘাটতি। যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করলে কয়েক মাস আগেই এই জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নিলে সমস্যার চেয়ে সম্ভবনার সুযোগ বেশী সৃষ্টি হতে পারে।
এ ব্যাপারে পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। কবে অব দ্যা রেকর্ডে বলেছেন আদ্যপ্রান্ত।
প্রসঙ্গত, ২৭ জুলাই থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এবার হাটে প্রবেশ ও বের হতে হবে পৃথক রাস্তা দিয়ে। থাকবে ভ্রাম্যমান আদালত। তবে করোনা পরিস্থিতিতে স্থান জটিলতা বড় বিপত্তি সৃষ্টি করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ