বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
উজানের নেমে আসা ঢল ও কয়েকদিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে পদ্মা-যমুনায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ২৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মানিকগঞ্জের আরিচা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রাজবাড়ির গোয়ালন্দের পদ্মা নদীর পানি অনুরূপভাবে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনা তীরবর্তি অঞ্চলের অভ্যান্তরে হু হু করে পানি প্রবেশ করছে। বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘঠছে। বিশেষ করে এ জেলার অর্ন্তগত পদ্মা-যমুনার চরাঞ্চলগুলো পুরোপুরি বন্যা প্লাবিত হয়েছে। জেলার দৌলতপুর, ঘিওর, শিবালয়, হরিরামপুর উপজেলার নদীর তীরবর্তি ইউনিয়নগুলো দ্রুত প্লাবিত হচ্ছে। দৌলতপুর উপজেলার যমুনার চর জিয়নপুর, বাঁচামারা, বাঘুটিয়া, খলসী, চকমিরপুর, ঘিওর উপজেলার ঘিওর, বড়টিয়া, শিবালয় উপজেলার তেওতা, উথলী, শিবালয়, উলাইল, আরুয়া ইউনিয়ন হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, হারুকান্দি, কাঞ্চনপুর, লেছড়াগঞ্জ,ধুলসুড়া, আজিমনগর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এসকল ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম ইতিমধ্যে পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্তরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
অধিকাংশ নীচু রাস্তা পানিতে তলিয়েছে ও কয়েকশ’ বাড়ি ঘরের মানুষজন পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ বাড়ির উঠোনে পানি উঠে যাবে। এসব অঞ্চলের লোকজন নৌকা নির্ভর হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে আরিচায় অবস্থিত দেশের অন্যতম পিডিবি’র স্পান টাইপ পিসিপোল কারখানার পশ্চিম পাশের নদীর তীরবর্তি রাস্তা বন্যার পানিতে নিমজিত হয়ে পড়েছে। ফলে কারখানার অভ্যান্তরে পানি প্রবেশ করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২/১ দিনের মধ্যেই কারখানা বন্ধ যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করছেন কর্তৃপক্ষ। আরিচা গবাদি পশুর হাট, আরিচা লঞ্চ ঘাট রোড, আরিচা পুরাতন ফেরি টার্মিনালে পানি উঠেছে।
এদিকে নদীর ¯্রােত তীব্রতর হওয়ায় ভাঙ্গন সমান তালে চলছে। এবার বর্ষার শুরু থেকেই তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মানিকগঞ্জের এ ৪উপজেলার পদ্মা-যমুনার আরিচা-পাটুরিয়া ঘাটসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা ভাঙ্গনের কবলে পড়ে।
তেওতা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বলেন, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম নদী ভাঙ্গনের কারণে অনেক মানুষ ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে এবং বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।
হরিরামপুরের হারুকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চুন্নু জানান, তার ইউনিয়নের ১০/১২টি গ্রাম পরিপূর্ণ বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
কঞ্চনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী ইউনুছ উদ্দিন জানান, এ ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বর্তমান অতিতের ভাঙ্গনসহ নতুন করে ভাঙ্গনে অনেক এলাকা পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: তোফাজ্জল হোসেন জানান, নদী ভাঙ্গনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ তার যমুনা চরের ইউনিয়ন নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে তার ইউনিয়নটি অনেক ছোট হয়ে এসেছে। তার ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তি আরো দু’টি ইউনিয়ন জিয়নপুর ও বাঁচামারার বাসিন্দারা প্রতিবছরই ভাঙ্গনের শিকার এবং বন্যা কবলিত হয়। এ তিন ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অধিকাংশ বাড়ি-ঘর প্লাবিত হয়ে পড়বে।
শিবালয় ১ নং ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, নদী তীরবর্তি এলাকায় পানি বৃদ্ধি ও হ্রাসের সময় নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। তুলনামুলকভাবে এবছর ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না হলে অত্র এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হতে বেশী দিন লাগবে না। ইতিমধ্যে মাননীয় সংসদ সদস্য স্থায়ী বাঁধের জন্য চেষ্টা তদবির করছেন যা বাস্তাবায়নের পথে বলে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম রুহুল আমিন রিমন বলেন, উপজেলার শিবালয়, তেওতা ও আরুয়া তিনটি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ তিনটি ইউনিয়নের তিনটি স্কুলে আশ্রয়ন কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যাকবলিত লোকজনের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। শনিবার ও রবিবার শিবালয়, তেওতা ও আরুয়া ইউনিয়নের ১৩শ’ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
হরিরামপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দু’টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার্তদের জন্য প্রস্তুুত রাখা হয়েছে। দৌলতপুর উপজেলায় অনুরুপ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।