দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
উত্তর : রোগ-ব্যাধি আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। এর প্রতিষেধকও আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে। পৃথিবীতে নতুন কোন রোগ দেখা দিলে সাথে সাথে এর প্রতিষেধক আবিস্কার করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় লেগে যায়। কারণ মানুষের জ্ঞান খুব সীমিত। বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণের প্রায় ৬ মাস হয়ে গেলো। পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা দিন-রাত প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবুও কার্যকর কোন প্রতিষেধক বা ব্যাকসিন আবিস্কার করতে পারেননি। তবে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আশার কথাও শুরাচ্ছেন। জানা গেছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসবে করোনার কার্যকরি ওষুধ। কয়েক মাসের মধ্যে ভ্যাকসিনও আসতে পারে।
প্রতিষেধক আর ভ্যাকসিন এলেই যে রক্ষা হবে তা নয়। এর দ্বারা মানুষ উসিলা করতে পারে। রোগ-ব্যাধি দেওয়ার মালিক আল্লাহ। সুস্থ করার মালিকও আল্লাহ। অন্যথায় সর্বোচ্ছ সতর্ক থাকা মানুষগুলো করোনায় আক্রান্ত হতো না। দুর্বল মানুষগুলো আক্রান্ত হলে সুস্থ হতো না, মারা যেতো। সবল মানুষগুলো আক্রান্ত হলে মৃত্যুবরণ করতো না, সুস্থ হয়ে যেতো। কখনো কখনো এর ব্যতিক্রম হচ্ছে। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে। একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই পারেন মহামারী করোনা থেকে পৃথিবীর মানুষকে মুক্তি দিতে। তিনি চাইলে প্রতিষেধক, ভ্যাকসিন ছাড়াই ভাইরাসমুক্ত করতে পারেন পৃথিবী।
জীবন-মৃত্যুর মালিক আল্লাহ। তিনি কত মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচান। আবার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কত তরতাজা সুস্থ-সবল মানুষের মৃত্যু ঘটান। এমন অগণিত উদাহরণ আমরা নিয়মিত অবলোকন করি। কয়েক বছর আগের কথা, মেজরটিলা বাজারে আমি আর সাব্বির রাস্তার সাইড দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম। এমন সময় পেছন দিক থেকে একটি প্রাইভেট কার দ্রুতবেগে আমাদের দিকে আসছিলো। এক/দুই সেকেন্ডের মধ্যেই একেবারে শেষ হয়ে যেতাম। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা এই বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি। আরেক দিনের কথা, তখন মহাসড়কে ছোট যানবাহন চলাচলে তেমন নিষেধাজ্ঞা ছিলো না। আমি আর শেখ আমিন মোটর বাইকে বিশ্বনাথ এলাকার একটি বিয়ের সেন্টার থেকে দ্রæতবেগে সিলেট শহরের দিকে আসছিলাম। লালাবাজার অতিক্রম করার পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গ্রীনলাইন ভলবো বাস আমাদের মুখোমুখি এসে যায়। হয়তো-বা এক/দুই সেকেন্ডের মধ্যে একেবারে পিষ্ঠ হয়ে যেতাম। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় কোন দূর্ঘটনা ঘটেনি। আরেকটি বড় বিপদ থেকে আমরা বেঁচে গেলাম। সেদিন সদরঘাটের লঞ্চডুবির ঘটনা একবার চিন্তা করুন। পাঁচ/দশ সেকেন্ড আগে কেউ কি জানতো সে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে মারা যাবে। আর যারা সাতরে বেঁচে গেছেন তারা কি ভাবছিলেন উত্থাল বুড়িগঙ্গার স্রােত সাতরে বেঁচে যেতে পারবেন।
আমরা মুসলমান। আমরা এই মর্মে ঈমান এনেছি যে, তাকদিরের ভালো-মন্দ, জীবন-মৃত্যু সবই আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত। তিনি ভ্যাকসিন বা প্রকিষেধক ছাড়াই পৃথিবীকে করোনা মুক্ত করতে পারেন। করোনায় আক্রান্ত মানুষকে সুস্থ করতে পারেন। কত মানুষ ওষুধ ছাড়াই করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছে। চেয়ে দেখুন, করোনাকে যদিও মরণব্যাধি বলা হচ্ছে তবুও অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন সুস্থ হচ্ছে। এপর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা থেকে সুস্থতার সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। আবার সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা পেয়েও অনেকে মৃত্যুবরণ করছেন। সর্বোচ্ছ সতর্ক থেকেও অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। সুতরাং প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আসুক বা না আসুক ভরসা রাখতে হবে আল্লাহর উপর।
আমরা দেখি যারা সুস্থ হন বা বেঁচে যান তারা নাকি যুদ্ধ করে জয়ী আর যারা মারা যান তারা নাকি যুদ্ধে পরাজিত। আমার বুঝে আসে না- তারা কার সাথে যুদ্ধ করেন? আর কে তাদেরকে বাঁচান? জ্বর, সর্দি, কাশি আমারও ছিলো। আলহামদুলিল্লাহ! এখন সুস্থ আছি। যুদ্ধ করে নয়, আল্লাহর রহমতে বেঁচে আছি।
বিভিন্ন পত্রিকার নিউজে দেখলাম ‘দ্রুত আসছে ভ্যাকসিন’, আসুক। আসছে কার্যকরী ওষুধ, আসুক। মানুষ বাঁচুক। কার্যকর ভ্যাকসিন আর প্রতিষেধকের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীকে করোনা নামক মহামারী থেকে মুক্ত করুন। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন : মুহাম্মদ আবদুল হামিদ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।