বিএনপি নেতা সাজুর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস র্যালিতে বিপুল নেতাকর্মীর অংশগ্রহন
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস
স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক, সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা শাজাহান সিরাজের তিন দফা জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (১৫ জুলাই) সাবেক এই মন্ত্রীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় দুপুর ১২টায় টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায়, দ্বিতীয় জানাজা বাদ জহুর কালীহাতীতে এবং তৃতীয় জানাজা বাদ এশা গুলশান সোসাইটি মসজিদে।
৭৭ বছর বয়সী শাজাহান গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে (সাবেক অ্যাপোলো) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর সন্ধ্যায় মরহুমের মরদেহ হাসপাতাল থেকে তার গুলশানের ২৩ নম্বর সড়কের ২৮ নম্বর বাসায় নেওয়া হয়। রাতে রাতে গুলশানের বাসায় লাশবাহীর অ্যাম্বুলেন্সে তার লাশ রাখা হয়।
শাহজাহান সিরাজ ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ আগে থেকে ছিল। ২০১২ সালে ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর কয়েক বছর পর ক্যান্সার ধরা পড়ে মস্তিষ্কেও। তখন থেকেই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় শাহজাহান সিরাজ। অবস্থার অবনতি ঘটলে গত সোমবার এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
বাদ এশা গুলশান সোসাইটি মসজিদে মরহুম শাজাহান সিরাজের নামাজের জানাজা অংশ নেন মুক্তিযদ্ধের অন্যতম সংগঠক গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খোরশেদ আলম মীয়া প্রমুখ। এরপর মুক্তিযোদ্ধা এই সংগঠকের লাশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বনানী কবরস্থানে শায়িত করা হয়।
শাজাহান সিরাজের জানাজায় অংশ নেওয়ার পর ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, শাজাহান সিরাজের মৃত্যুতে ইতিহাসের আরেকটি পাতা ঝড়ে পড়ল। জাতির দুর্ভাগ্য নতুন প্রজন্মকে এ ইতিহাস জানানো হয় না। আমি এ জন্যেই তাকে সালাম জানাতে এসেছি। ওই সময় দুজন তরুণ একজন আ স ম আবদুর রব, আরেকজন শাজাহান সিরাজ। এরাই তখন দেশের স্বাধীনতার ঝান্ডা তুলে ধরেছেন।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১২টায় কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা সরকারি শামসুল হক কলেজ মাঠে প্রথম এবং ২টা ৩০ মিনিটে কালিহাতী সদরে শাজাহান সিরাজ কলেজ মাঠে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিকালে শাজাহান সিরাজের লাশ ঢাকায় আনা হয়। এরআগে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে শাহজাহান সিরাজের লাশ ঢাকা থেকে এলেঙ্গায় পৌঁছায়। এ সময় স্বজন ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তাকে শেষবার এক নজর দেখতে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ সেখানে জমায়েত হয়। পরে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা নিপার উপস্থিতিতে এই মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। শাজাহান সিরাজের জানাজায় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। করোনাভাইরাসের কারণে সামজিক দূরত্ব মেনে জানাজা হওয়ায় মাঠে লোক সংকুলান হয়নি। পরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অনেকে জানাজায় অংশ নেন।
জানাজার দুই স্থানেই প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে লাশের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় বক্তারা মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের কথা স্মরণ করেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন শাজাহান সিরাজের মেয়ে ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা। জানাজায় অংশগ্রহণ করেন টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনছার আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য লুৎফর রহমান মতিন, জেলা সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, কালিহাতী উপজেলা আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও কালিহাতী পৌরসভার মেয়র আলী আকবর জব্বার, এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী ও উজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক হিরো প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।