Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরভদ্রাসনে মিল্কভিটা সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২০, ৩:৪৯ পিএম

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেড (মিল্কভিটা) এর সভাপতি মো. কাশেম আলী মোল্যার বিরুদ্ধে ঋন প্রদানের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কাশেম উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের চরসুলতানপুর গ্রামের মুনসুর মোল্যার ছেলে।
এদিকে, এসব টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চরভদ্রাসন থানা (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, গত প্রায় এক বছর আগে উপজেলার চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নে ১টি চরহরিরামপুর ইউনিয়নে ২টি ও গাজিরটেক ইউনিয়নে ২টি দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিঃ (মিল্কভিটা) এর কার্যক্রম শুরু করে। এরপর থেকে কাশেম উপজেলার চরসুলতাপর মিল্কভিটা দুগ্ধ সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, মিল্কভিটা সমবায় সমিতির লিঃ এর সভাপতি মো. কাশেম আলী মোল্যা গত আট মাস পূর্বে গাভী কেনার জন্য ২,৪০,০০০/-(দুই লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকা করে ঋন পাশ করিবেন কথা বলিয়া অফিসের খরচ বাবদ আমাদের ২৮ জনের প্রত্যেকের কাছ থেকে ঋন প্রদানের জন্য প্রতারনার মাধ্যমে দশ হাজার টাকা থেকে শুরু করে পচিঁশ হাজার করে ৩,৪৭,৫০০/- টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের খবির প্রামানিক জানান, কাশেম আলী মোল্যা আমাকে মিল্কভিটা সমবায় সমিতি থেকে ঋন পাশ করিয়ে দেওয়ার নামে আমার কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা, ব্লাংক চেক ও আইডি কার্ড নিয়েছেন। কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত সে আমাকে টাকা, ব্লাংক চেক ও আইডি কার্ড ফেরত দিচ্ছেনা।
স্থানীয়রা জানান, মো. কাশেম আলী মোল্যা এলাকার অনেকের কাছ থেকে মিল্কভিটা সমবায় সমিতির লিঃ এর ঋন পাশ করিয়ে দেওয়ার নামে বিভিন্নভাবে কয়েক লক্ষ টাকা গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন।
আরেক ভুক্তভোগী মো. নুরুদ্দীন সেক জানান, মিল্কভিটা সমবায় সমিতির ঋন পাওয়ার জন্য দুই কিস্তিতে আমি কাশেম মোল্যাকে বিশঁ হাজার টাকা, একটি ব্ল্যাংক চেক ও মুল আইডি কার্ড দিয়েছি। অনেক দিন হয়ে গেলেও কাশেম আমাকে কিছুই ফেরত দিচ্ছেনা। আমরা ভুক্তভোগীরা টাকা চাইলে সে আমাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেই নাই বলে এখন অস্বিকার করছেন।
ভুক্তভোগী কল্পনা বেগম জানান, কাশেম করোনার আগে আমার কাছ থেকে মিল্কভিটা সমিতি থেকে ঋন পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে পনেরো হাজার টাকা, আমার মূল ভোটার আইডি কার্ড ও একটি ব্লাংক চেক নিয়েছে। এতোদিন হয়ে গেলেও সে আমাকে ঋন তো পাশ করিয়ে দিতে পারে নাই। বরংচো এখন আমার কাছ থেকে প্রতারনা করে নেওয়া পনেরো হাজার টাকা, মূল ভোটার আইডি কার্ড ও ব্লাংক চেক ফেরত দিচ্ছেনা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্ত মিল্কভিটা সমবায় সমিতির লিঃ এর সভাপতি মো. কাশেম আলী মোল্যার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এবিষয়ে তদন্ত চলতেছে। আর আমি কারো কাছ থেকে এমন ভাবে কোনো টাকা নেই নাই বলে তিনি জানান।
চরভদ্রাসন থানার উপপরিদর্শক (এস.আই) মো. ফিরোজ জানান, এবিষয়ে আজকেই প্রথম শোনামেলার জন্য থানায় বসলাম। বিষয়টি যেহেতু টাকা,পয়সা লেনদেন ঘটিত। তাই ডকুমেন্টস্ ছারা এবিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছেনা। এবিষয়ে গভীরভাবে একটু তদন্ত করে মূল বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
এব্যাপারে অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক প্রশাসন, সমিতি, প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদকারী সমবায় ইউনিয়ন লিঃ(মিল্কভিটা) এর তোফায়েল আহমেদ বলেন, দুগ্ধ উৎপাদকারী (মিল্কভিটা) সমিতির সভাপতি বা সমিতির কেউ যদি ঋন প্রদানের নামে ঋন গ্রহীতাদের সাথে এমন কোনো কাজ করে থাকে। তাহলে, আমরা এবিষয়ে ভালোভাবে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, এব্যাপারে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত করে আমরা যদি এর সত্যতা পাই, তাহলে তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ