ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
করোনাভাইরাসের এই মহামারীর মধ্যেই হতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের কমিটি। এই কমিটিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। আবার অনেক নেতা এতদিন সাংগঠনকি কর্মকাণ্ডে নিস্ক্রীয় থাকলেও কমিটি হতে যাচ্ছে এমন গুঞ্জনে ফের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। যোগাযোগ করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। পাশাপাশি লন্ডনেও বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
ছাত্রদলের একাদিক সূত্রে জানা যায়, এই মাসেই জাবি ছাত্রদলের ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি হতে পারে। কমিটির মেয়াদ হবে তিনমাস। এই আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হলে, কমিটির কাজ হবে- কাউন্সিলের আয়োজন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার ব্যবস্থা করা।
কমিটির বিষয়ে ছাত্রদলের সাংগঠনিক টিম ঢাকা ১ (ক) এর টিম লিডার হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, ‘আমরা জাবি ছাত্রদলের ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। শীগ্রই কমিটি দিতে পারবো বলে আশা রাখছি।’
কারা কমিটিতে আসতে পারে এমন প্রশ্নে ছাত্রদলের এই সহ-সভাপতি বলেন, ‘আমরা যাচাই বাচাই করছি কারা নিয়মিত ছাত্র, কোন বিবাহিত পদ প্রতাশী আছে কিনা, এছাড়া ছাত্রদলের জন্য কার কি ভূমিকা আছে এসব দেখছি। যাদের অবস্থান ভাল মনে হবে, যারা নেতৃত্বে আসলে সংগঠন ভাল চলবে আমরা তাদেরকে নিয়েই কমিটি গঠন করবো।’
জানা যায়, এই কমিটিতে আহ্বায়ক হওয়ার জন্য জোড় চেষ্টা চালাচ্ছেন জাবি ছাত্রদলের নির্যাতিত নেতা হিসেবে পরিচিত শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত। বার বার ছাত্রলীগের হামলা, মামলা কারাবরণের পরও জাবি শাখা ছাত্রদলকে আগলে রাখায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাকে মূল্যয়ন করবে বলে মনে করছেন ছাত্রদল সংশ্লিষ্টরা। শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বলছেন, ‘শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সোহেল রানা বহিস্কার হওয়ার পরও আব্দুর রহিম সৈকত সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে নিয়মিত পালন করে গেছেন কেন্দ্রের প্রত্যেকটি কর্মসূচী। করোনার এই মহামারীর সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায় ক্ষুদ্র দোকানি, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে সবার প্রশংসা কুঁড়িয়েছেন এই ছাত্রনেতা।’
তাই নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা- ‘দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ এই ছাত্রনেতাকে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি হলে, অতি দ্রুত হল কমিটি দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা সম্ভব হবে।’
সাধারণ সম্পাদক থেকে কেন আহ্বায়ক হতে চান? এমন প্রশ্নে জাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম সৈকত বলেন, যেহেতু আহ্বায়ক কমিটি টা সম্ভব্য ৯০ দিনের জন্য হবে, সেহেতু এই স্বল্প সময়ের জন্য একজন অভিজ্ঞ, ত্যাগী, নির্যাতিত, কর্মীদের আস্থাভাজন, দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ, অল্প সময়ের মধ্যে হল কমিটি দেওয়ার মত সক্ষমতা রাখে এমন একজন ব্যাক্তি জাবি ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসলে ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারণ্যের অহংকার জনাব তারেক রহমানের কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য সফল হবে বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘জাবি ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসার মত সবাই যোগ্য। তবে আহ্বায়ক হিসেবে আমার চেয়ে বেশি যোগ্য কেউ থাকলে আমি তাকে পূর্ণ আন্তরিক সহযোগীতা করবো।’
এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পদ পাওয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলা, মামলা, নির্যাতনের শিকার হয়েছি, আশাকরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো বিবেচনা করবে।’
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু হলের যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ন হাবিব হিরণও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতির একনিষ্ঠ হিসেবে শীর্ষ নেতৃত্বের পদ প্রত্যাশী। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে যারা সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে মাঠে থাকবে এমন নেতৃত্ব আশা উচিত।’
এদিকে বিভিন্ন লবিংয়ে পদ পাওয়ার জন্য জোড় চেষ্টা চালাচ্ছেন শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম খলিল বিপ্লব। এই ছাত্রদল নেতাও ছাত্রলীগের নির্যাতনে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনিও শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে বিভিন্ন মাধ্যমে জোড় তদবির চালাচ্ছেন। কমিটিতে পদ পাওয়ার বিষয়ে ছাত্রদলের এই নেতা বলেন, ‘ছাত্রদল করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলায় মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলাম। আমার হাত-পা ভেঙ্গে দেওয়া হয়। তারপরও সংগঠনের প্রতিটি কাজে সক্রিয় ছিলাম। তাই আমার প্রত্যাশা দল আমাকে যথাযথ মূল্যয়ন করবে।’
অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগরের ‘লোকাল লবিং’ কাজে লাগিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বে পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন সাইফুল ইসলাম সাগর। কমিটিতে পদ পাওয়ার বিষয়ে সাগর বলেন, ‘অবৈধ আওয়ামী সরকারের হামলা, মামলা, নির্যাতন উপেক্ষা করে ছাত্রদলের যেসব নেতাকর্মী গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নির্ভীক ভাবে সামনে থেকে কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকে নেতৃত্ব দিয়ে কমিটি গঠন করলে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন অনেক বেশি বেগবান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
এছাড়া শহীদ সালাম বরকত হলের যুগ্ম আহ্বায়ক আফফান আলী, শহীদ রফিক জব্বার হলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মার্জুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল চৌধুরী সোহেল ও ফয়সালসহ প্রমুখ নেতৃত্বে আসতে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।