বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোর ও খুলনার বিরাট এলাকার অভিশাপ ভবদহ স্লুইস গেট। বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় বিরাট এলাকায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
এবারও যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ৭টি উপজেলা যশোর সদর, অভয়নগর, মণিরামপুর, কেশবপুর, ফুলতলা, ডুমুরিয়া ও তালার ছোট বড় ৫৪টি বিলের পানি টইটম্বুর অবস্থা। বড় বৃষ্টি হলেই প্লাবিত হয়ে বিপর্যয় ঘটবে। সৃষ্টি হবে মানুষের মরণদশা। একথা ভবদহ এলাকার লোকজনের। তাদের কথা ইতোমধ্যে কিছু কিছু বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা রাজনৈতিক নেতা ইকবাল কবীর জাহিদ রোববার দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ভবদহ সমস্যা জিইয়ে রেখে কায়েমী স্বার্থবাদী মহল ও পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পের পর প্রকল্প গ্রহণ করে অর্থ লোপাটের কারখানায় পরিণত করেছে। বরাবরই সংশ্লিষ্টরা চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। তার মতে, এই মুহূর্তে ভবদহের ২১ ও ৯ ভেন্টের মাঝখান দিয়ে নদী সংযোগ ও বিল কপালিয়াসহ পর্যায়ক্রমে বিল খুকশিয়াসহ সব বিলে টিআরএম চালু এবং উজানে নদী সংযোগ বিশেষ করে ভৈরবের সাথে মুক্তেশ্বরীর সংযোগ স্থাপন করলে ভবদহের স্থায়ী সমাধান হবে। কিন্তু বরাবরই ভুক্তভোগী জনসাধারণের কথা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ভবদহ এলাকার কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ জানান, কয়েকদিনের ছোটখাটো বৃষ্টিতেই শ্রীনদী, হরিহর নদী, টেকা নদী মুক্তেশ্বরী নদী ও আশেপাশের বিলের পানি উপচে পড়তে শুরু করেছে। টানা বৃষ্টি হলে ভবদহ এলাকার অবস্থা হবে ভয়াবহ। বিলের পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশনের কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে-পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন, ভবদহে একটা প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। ৮০৭কোটি টাকার প্রজেক্ট ফাইলটি অনুমোদনের জন্য প্øানিং কমিশনে আটকে আছে করোনা পরিস্থিতির কারণে। প্রজেক্টটি চালু করা গেলে ভবদহ সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১৯৬০ সালে সবুজ বিপ্লবের নামে যশোরের সদর, মনিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর, খুলনার ফুলতলা ও ডুমুরিয়া এবং সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মধ্যবর্তী ভবদহ নামকস্থানে শ্রীনদীর উপর নির্মাণ করা হয় একটি বড় স্লুইস গেট। একপর্যায়ে যশোর ও খুলনার ৮ লক্ষাধিক মানুষের মরণ ফাঁদে পরিণত হয় ওই স্লুইস গেটটি। গেট সংলগ্ন শ্রীনদী, টেকা, হরিহর ও মুক্তেশ্বরী এই ৪টি নদী রয়েছে। স্লুইস গেট দিয়ে বিল কেদারিয়া, বিল খুকশিয়া,বিল কপালিয়া, বিল বকর ও বিল আড়পাড়াসহ যশোর ও খুলনা এলাকার বড় ২৭টি বিলসহ ৫৪টি বিলের পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে প্রতিটি বর্ষা মৌসুমে বিল তীরবর্তী আশেপাশের শত শত গ্রামে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি ভয়াবহতায় রূপ নেয়।
ভবদহের কারণে বছরের পর বছর ধরে বহু কৃষক পেশা বদল করতে বাধ্য হয়েছেন। অগণিত বাড়ী-ঘর, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, হাট-বাজার ও আবাদী জমির অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নেমে আসে ভয়াবহ বিপর্যয়। ঘটেছে জীব-বৈচিত্রের পরিবর্তন। তারপরেও স্থায়ী সমাধান হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।