Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহাদুর্যোগ করোনায় দক্ষিণ-পশ্চিমের এনজিওগুলো হাতগুটিয়ে

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০২০, ৩:৩৮ পিএম

মহাদুর্যোগ করোনায় দক্ষিণ-পশ্চিমের অধিকাংশ এনজিও রয়েছে হাতগুটিয়ে। দারিদ্য বিমোচন ও আত্মনির্ভশীলতার স্বপ্ন দেখিয়ে রীতিমতো গরীবকে আরো গরীব বানিয়ে নিজেদের আখের গোছানো এনজিও প্রধানরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও তারা মানুষের বিপদে ভুমিকা রাখে না-এই অভিযোগ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের।

এ অঞ্চলের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতা ইকবাল কবীর জাহিদ শনিবার দৈনিক ইনকিলাবকে প্রসঙ্গক্রমে বলেন, করোনাকালে এনজিওদের কোন ভুমিকা লক্ষ্য করলাম না। তারা জনগণের কল্যাণের কথা বলে। অথচ বাস্তবে করে উল্টোটা। গ্রামগঞ্জে কথা আছে ফকিরের পকেট কেটে বড়লোক হওয়া এনজিও মানুষের বিপদে এগিয়ে আসছে না বরং কিস্তি আদায়ে তোড়জোড় করছে। মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারাও চুপচাপ বসে আছে।

তার কধা, যেহেতু নন গভারমেন্ট অর্গানাইজেশন (এনজিও) সেহেতু সরকারের পাশাপাশি তাদের ভুমিকা রাখা দরকার ছিল। একইসাথে সুশীল সমাজের ভুমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

যশোর, খুলনা, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের প্রশ্ন, এনজিওগুলো দেশের মহাসংকটে চুপচাপ বসে আছে এটি দুঃখজনক। এদের ব্যাপারে এই মুহূর্তে সরকারি একটা নির্দেশনা দেওয়া জরুরি। যশোর শহরের ঘোপ এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কবিরুল ইসলাম, পালবাড়ির কাঁচা তরকারী ব্যবসায়ী টুটুল, ঝিনাইদহের আরাপপুরের আব্দুর রহিম. খুলনার নিউ মার্কেট এলাকার তবারক হোসেনসহ বেশ কয়েকজন এনজিও’র ঋণ গ্রহিতা বললেন, ওরা শুধু নেয়, দেয় না। তাদের কথা, এই মহাবিপদে অধিকাংশ এনজিও’র কোনরূপ ভুমিকা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় এনজিও’র সংখ্যা ৮হাজার ৩শ’ ৩৬টি। যার সিংহভাগই সুদের কারবার চালায়। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বেশ কয়েকজন বললেন, গ্রামীণ দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর ভাগ্য বদলের দোহাই দিয়ে এনজিও’র ক্রেডিট প্রোগ্রামের নামে প্রায় সব গ্রামেই চলে ফ্রিস্টাইলে সুদের কারবার। এতে গরীব ও অসহায় মানুষ স্বনির্ভরতার বদলে হয় সর্বস্বান্ত। অথচ অথিকাংশ ক্রেডিট প্রোগ্রামের এনজিও মালিকরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। শুধু ক্রেডিট প্রোগ্রামের নয় এনজিও বলতেই ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। অথচ দেশের মহাসংকটে তারা রয়েছে হাতগুটিয়ে।

সমাজসেবা অধিদপ্তর এনজিওগুলোর রেজিস্ট্রেশন দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি থেকে লাইসেন্স নিয়ে ক্রেডিট প্রোগ্রাম করে থাকে এনজিওগুলো। তারা পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) থেকে নামমাত্র হারে সুদে ক্রেডিট প্রোগ্রামের অর্থ সংগ্রহ করে এলাকাভিত্তিক ঋণ দেয়। কিন্তু আদায় করে ২৫/৩০%।

অর্থনীতিবিদ যশোর মাইকেল মধুসূদন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের নাসিম রেজা বললেন, গ্রামীণ দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর ভাগ্য বদলের দোহাই দিয়ে যেসব এনজিও বছরের পর বছর সুদের কারবার চালায়, তারা অন্তত দেশের মহাসংকটে এগিয়ে আসা জরুরি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ