পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাকালে সরকারি ব্যর্থতাকে আড়াল করতেই দেশব্যাপী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও কারান্তরীণ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসান মিন্টুকে গতকাল নরসিংদী জেলা শহরের নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার করার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এছাড়াও গুমের মতো অমানবিক ঘটনারও যেন হিড়িক পড়ে গেছে। এছাড়াও নোয়াখালী জেলাধীন বেগমগঞ্জ থানার চন্দ্রগঞ্জ আলাইয়াপুর ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রদল নেতা মোঃ টিটু হায়দারকে গত তিন দিন আগে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। এখনো তার কোন হদিস দিচ্ছে না। তার পরিবার ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাকে ক্রসফায়ারে দেয় কিনা তা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা গভীর উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আমি অবিলম্বে আকরামের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তি ও টিটু হায়দারকে জনসমক্ষে হাজির করে তার পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
শুক্রবার (১০ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে বর্তমান সরকার ক্রমাগত ব্যর্থতা প্রদর্শন করে আসছে। একের পর এক এমন হৃদয় বিদারক ঘটনার মধ্যে এখন আবার করোনা টেস্ট নিয়ে ভূয়া সার্টিফিকেট ও জালিয়াতির জন্য বিদেশের গণমাধ্যমে নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হচ্ছে বাংলাদেশ। দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমের খবরে আরো জানা গেছে, ইতালী, চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, কাতার, আরব আমিরাতসহ অনেকগুলো দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে বিমান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ইতালিতে পৌঁছার পর ১৫২ জন বাংলাদেশীকে দেশটিতে ঢুকতে না দিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে ফেরত দেয়া প্রমান করে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকার দেশের জনগণের স্বার্থের প্রতি কতটা উদাসীন। সরকারের দৃষ্টি শুধুই যেন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের প্রতি, প্রবাসীদের স্বার্থের প্রতি নয়।
তিনি বলেন, গত ২২ মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান করোনা টেষ্টের গুরুত্ব সম্পর্কে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে স্পষ্ট করেই বলেছিলেন-‘করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখিয়ে নিজেদের কাগুজে সাফল্য দেখানোর চেয়ে বেশি জরুরী করোনা ভাইরাস টেস্ট নিয়ে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন। কারণ, গ্লোবাল ভিলেজের এই সময়ে করোনা ভাইরাস টেস্টের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে ভবিষ্যতে নাগরিকদেরকে অত্যন্ত চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দেশে যেমন ভয়ংকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে আমাদের নাগরিকদের বিদেশের শ্রম বাজারে থাকা না থাকার বিষয়টিও বেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
ভিডিও কনফারেন্সে রিজভী বলেন, করোনা ভাইরাস ‘ট্রেস-টেস্ট এবং ট্রিটমেন্ট’ নিয়ে সরকার কি করছে, কি ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে এগুলো জনগণকে জানাতে হবে। এমনকি করোনা মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রয়োজনে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করার জন্যও সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়েছিল। সরকার সেই দাবি কানে নেয়নি। বরং এখন খবর বেরুচ্ছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় করোনা মোকাবেলায় ‘জেকেজি হেলথ কেয়ার এবং রিজেন্ট হাসপাতাল নামে’র কিছু ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে ‘করোনা টেস্ট ও ট্রিটমেন্টের’ অনুমোদন দিয়েছে। তাদের একমাত্র যোগ্যতা ছিল, এইসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্ণধার’রা ক্ষমতাসীন দলের নেতা কিংবা ঘনিষ্ঠ। অনুমোদন পেয়ে এইসব প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজরা টাকার বিনিময়ে হাজার হাজার মানুষকে রক্ত পরীক্ষা না করেই ‘করোনামুক্ত সার্টিফিকেট’ ইস্যু করতো। এদের সার্টিফিকেট নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে আটক কিংবা ফেরত আসতে শুরু করায় এখন সরকারের টনক নড়েছে।
কখনো হলমার্ক কেলেঙ্কারি, কখনো রিজার্ভ ফান্ড লুট, কখনো ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি আর এখন করোনা পরীক্ষা এবং চিকিৎসা নিয়ে কেলেঙ্কারি চলছে। প্রতিটি কেলেঙ্কারির হোতা সরকারি দলের পদ পদবীধারী নেতা কিংবা সরকারের বিশেষ আনুকূল্যপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজরা। বাংলাদেশে ভোট ডাকাত, ব্যাংক ডাকাত, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, করোনার ভুয়া প্রত্যয়নপত্রবাজে এখন দেশ ভরে গেছে। দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে ‘করোনা কেলেঙ্কারি’ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতায় বর্তমান সরকারপ্রধানের উচিৎ ছিল ন্যুনতমপক্ষে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া। সেটি না করে আমরা দেখলাম প্রধানমন্ত্রীর মুখে ভিন্ন সুর। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘তারা চোর ধরছেন অথচ তাদেরকেই চোর বলা হচ্ছে’।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার, বিরোধী দল ও মতের মানুষকে গুম-খুন-অপহরণ আর নির্মম নির্যাতন নিপীড়ণের মাধ্যমে নিজেদের অপশাসনকে দীর্ঘায়িত করাকেই নিজেদের সাফল্য হিসেবে প্রচার করছিলো। কিন্তু চলমান করোনা সংকট প্রমাণ করেছে, আইন শৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে গুম-খুন-অপহরণ করানো ছাড়া এই সরকারের পক্ষে ভালো কিছু করার দৃষ্টান্ত নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।