বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শতাধিক মানুষ।
দুর্ভোগ ও ভোগান্তি কমছে না গত ১৫ দিনে। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো এমনই দুর্ভোগ ও দুর্দশা চলছে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে গত বছরের মাঝামাঝিতে মতলব দক্ষিণ উপজেলার চরপাথালিয়া গ্রামে ধনাগোদা নদীর তীরে ৮একরের বেশি জায়গায় গরিব-দুস্থ, গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে গৃহনির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেনাবাহিনীর তদারকিতে ৫টি ভবনে ১৩৫টি কক্ষ (ঘর) নির্মাণ করা হয়। এতে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয় হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানকার পাঁচটি একতলা ব্যারাকের (ভবন) প্রতিটি ঘরের মেঝ ও বারান্দা পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব মেঝ ও বারান্দায় দৃশ্যত দু-তিন ফুট উচ্চতার পানি। ভবনগুলোর সামনের মাঠও তলিয়ে গেছে। এসব ভবনে বসবাসরত (আশ্রিত) ১৫টি পরিবারের শতাধিক লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। কেউ কেউ ঘরের মেঝেতে ইট বিছিয়ে চৌকি উঁচু করে ছেলেমেয়ে, বাবা-মা ও স্ত্রীকে নিয়ে গাদাগাদি করে থাকছেন। উপায় না দেখে দু-তিনটি পরিবার পাশের বেড়িবাঁধে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘কয়েক মাস ধইরা পরিবার নিয়া এনো উঠছি। ধনাগোদা নদী ও বন্যার পানি বাড়তাছে। ১০-১২ দিন আগে আমাগো ঘরের মেঝ ও বারান্দা পানির নিচে ডুইব্বা যায়। ঘরের সামনের মাঠটাতেও চার-পাঁচ ফুট পানি। পানির লইগা ঘর থেইক্কা বাহির অইতে পারতাছি না। কোনো রহমে আছি। খুব কষ্ট লাগতাছে।’
মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বা কর্মকর্তা ফাহমিদা হক বলেন, গত ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসব ঘর তাঁর প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন। এরপর ঘরের বরাদ্দ দেওয়ার জন্য মতলব পৌর এলাকার গরিব-দুস্থ ও গৃহহীন লোকদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহবান করা হয়। ৫০টি পরিবার ঘরের জন্য আবেদন করলেও নানা কারণে সবাইকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া যায়নি। ১৫টি পরিবারকে প্রাথমিকভাবে একটি করে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে প্রায় ১০০ লোক প্রাথমিকভাবে বাস করছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমি ১৫ ফুট উচ্চতা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা ৭ ফুট উচ্চতায় ভরাট করেছেন। এই কারণে এ কারণে আশ্রয়ন প্রকল্প তৈরীর প্রথম বছরেই বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেছে।