Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনিশ্চিত সিলেটের পর্যটন খাত

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রবাসীদের বিনিয়োগে সাফল্য এসেছিল সিলেটের পর্যটন খাতে। বিশেষ করে বেসরকারি উদ্যাক্তাদের এগিয়ে আসায় এ খাত এখন অর্থনৈতিক লাভের নির্ভরতা স্থলে পরিণত হয়। এতে করে নান্দনিক পরিবেশ ও অবকাঠামোগত আধুনিক সাজে সিলেটে গড়ে ওঠে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট, হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট। ফলশ্রুতিতে পর্যটকদের ব্যাপক সাড়া পড়েছে সিলেটে। এমনকি সাপ্তহিক নির্ধারিত ছুটির দিনেও সিলেট থাকে নানা অঞ্চলের মানুষে টুইটম্বুর। তাদের পদভারে হোটেল মোটেল রিসোর্টগুলোতে অগ্রিম বুকিং ছাড়া পাওয়া ছিল দুষ্কর। কিন্তু সেই সরগরম সম্ভাবনাময়ী পর্যটন খাত এখন করোনার থাবায় বিপর্যস্ত। এতে করে মহামান্দা কেবল নয়, মানসিক ও আর্থিক ভাবে চরম সঙ্কটে পড়েছেন উদ্যোক্তারা।

এছাড়া এখাতে জড়িত কর্মহীন এখন লাখো শ্রমিক। ইতোমধ্যে ছাঁটাই শিকার হয়েছে অনেক কর্মী, অনেকে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য দৌঁড়ঝাঁপ দিচ্ছেন জীবন ও জীবিকার তাগিদে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ছুটিতে থাকা কর্মীরা এখন বেতনহীন অবস্থায় সংগ্রাম করছেন আগামীর ভবিষ্যত শঙ্কায়। একাধিক হোটেল শ্রমিক জানান, পর্যটন খাতের ৯০ ভাগ কর্মীই এপ্রিল থেকে বেতনহীন। নগরীর ফরচুন গার্ডেন আবাসিক হোটেলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল আহমদ বলেন, ইন্টারনেট সংযোগ পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করতে হয়েছে আমাদের। কারণ ছোট এই বিল পরিশোধের সামর্থ্য নেই করোনা পরিস্থিতির দাপটে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে এ খাতে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, সিলেটে ট্রেডিং পর্যটন আর আমদানি-রফতানিই এখানকার প্রধান ব্যবসা। সিলেটে নেই মিল কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান। টেকসই অর্থনীতির পথে অনেকটা দুর্বল সিলেট। তারপরও পর্যটন খাতে এগিয়ে এসেছে সিলেটের প্রবাসীরা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির ধাক্কায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পর্যটন খাতের উদ্যোক্তারা। দ্রুত প্রাণ ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেইও।

পর্যটন খাতের উন্নয়নে পরামর্শক হাসান মোরশেদ বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সঙ্কট কেটে যাবে না পর্যটন শিল্পের। মানুষের সামর্থ্যরে মধ্যেই স্বাধ ও সাধ্যের হিসেব নিকেশ মিলে। কিন্তু সেই সাধ্য এখন অসাধ্যে পরিণত হয়েছে করোনার কামড়ে। সে কারণে অনকেটা শূন্য থেকে শুরু করতে হবে পর্যটন খাতের উদ্যোক্তাদের। দেশের একমাত্র সোয়াম ফরেষ্ট রাতারগুলের নৌকা চালক আতই মিয়া বলেন, নৌকাই ছিল সংসারের প্রাণ। কিন্তু ঘুরতে আসে না বলে নৌকাও পানিতে ভাসাতে পারি না, পেট ভরে খেতেও পারছি না। গত তিন মাস ধরে এখানে কোনো পর্যটক আসেননি
সিলেট হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমাত নুরী জুয়েল জানান, হোটেল-মোটেলে ব্যবসা নেই তিন মাস ধরে। অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার চিন্তা করছেন। আর্থিক ক্ষতির হিসেব বেহিসাব। তিনি আরও বলেন, কেবল হোটেল নয়, পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে রেস্টুরন্ট শিল্প ব্যাপকতা পেয়েছে সিলেটে। চরমভাবে সঙ্কটে তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ