বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনা সংক্রমনের পর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিচার ব্যবস্থায় এক ধরনের স্থবিরতা দীর্ঘদিন আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের মধ্যে হতাশা কাজ করছে। সুপ্রীম কোর্টের কিছু সংখ্যক আইনজীবীর দাবির প্রেক্ষিতে সরকার উন্নত বিশে^র ন্যায় দেশে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য আইন প্রণয়ন করলেও ৯০ ভাগেরও বেশী আইনজীবীদের নিজস্ব কম্পিউটার,ল্যাপটপ,স্ক্যানার না থাকা সহ প্রশিক্ষণের অভাবে তাদের পক্ষে নতুন এ পদ্ধতিতে বিচারিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন করা সম্ভব হচ্ছেনা। অন্যদিকে দেশের বিচারপ্রার্থীরাও পরিচিত না থাকায় তারা ভার্চুয়াল পদ্ধতির বিচার নিয়ে সন্দিহান। বিচার প্রার্থীদের মধ্যে আস্থার অভাবও রয়েছে।
এমনকি এই পদ্ধতিতে তাদের সকল বক্তব্য উপস্থাপন করাও সম্ভব হচ্ছেনা। ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অতি সীমিত আকারে ফৌজদারী মামলার আসামীদের জমিনের বিষয় শুনানী হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে দেওয়ানী মামলার আরজি ও আপীল দাখিলের এবং দেওয়ানি বিষয়ক চলমান মামলায় জরুরী দরখাস্ত শুনানীরও অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। ভার্চুয়াল পদ্ধতির সুযোগ নিয়ে যে অনিয়মের সুযোগ নেয়া হচ্ছে, তা সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতিকে আদালতের পক্ষ থেকেই অবহিত করা হয়েছে।
বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলার আদালত সমুহে দেওয়ানী ও ফৌজদারি বিচারাধীন মামলার সংখ্যা প্রায় অর্ধ লক্ষ। ৬টি জেলার বারে প্রায় আড়াই হাজার আইনজীবী এসব মামলা পরিচালনা করতেন। কিন্তু করোনা সংক্রমনের কারনে গত ২৬ মাচর্ থেকে সরকারী ছুটিতে বিচার কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। ১জুন থেকে সরকারী অফিস সমুহ খুললেও এখনো বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়নি। ইতোমধ্যে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ফৌজদারী মামলার জামিন শুনানী গ্রহন করা হলেও বেশীরভাগ আইনজীবী তাতে অংশ নিতে পারছেন না, নতুন এ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষন না থাকায়।
উপরন্তু কম্পিউটার বা ল্যাপটপ সহ অনুষঙ্গিক সরঞ্জাম না থাকার কারনেও এ অঞ্চলের ৯০ ভাগ আইনজীবী ভার্চুয়াল বিচার ব্যবস্থার বাইরে। অপরদিকে বরিশাল সহ দেশের বিভিন্নস্থানের অতি স্বল্প সংখ্যক আইনজীবীর দাবি অনুযায়ী যদি পূর্বের ন্যায় পূর্ণাঙ্গভাবে আদালতের কার্যক্রম শুরু করা হয় তাহলে বিচারপ্রার্থীদের শারীরিক উপস্থিতি ব্যতীত আদলতের কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবেনা। আর সেক্ষেত্রে অতি স্বল্পস্থানে সবচেয়ে বেশী মানুষের উপস্থিতি দেখা দেবে। আর তাতে আদালতের বিচারক, কর্মচারী, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও মামলার স্বাক্ষী সহ কারো পক্ষেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব হবেনা। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে চরম দুর্ভোগের পাশাপাশি করোনায় সংক্রমিত হবার আশংকাও রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বরিশালের বেশ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশীরভাগ আইনজীবীদেরকে অনিশ্চিত বেকার জীবন কাটাতে হচ্ছে। আয় না থাকলেও পারিারিক ব্যয় ঠিকই রয়েছে। ইতোমধ্যে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি সহ কয়েকটি সমিতি কিছু সদস্যকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেছে। দু একজন সিনিয়র আইনজীবীও ব্যক্তিগতভাবে অন্যন্য আইনজীবীদের আর্থিক সহযোগিতা করলেও এটা সমস্যার কোন স্থায়ী সমাধান নয়। বরিশালর কিছু নবীন আইনজীবী অবিলম্বে সরকারী অন্য অফিসের মত বিশেষ ব্যবস্থায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিচার কার্যক্রম চালুর দাবী জানিয়েছেন।
আবার অনেক আইনজীবী মনে করেন বর্তমান অবস্থায় সরকার এই সময়ে বার কাউন্সিল থেকে সনদপ্রাপ্ত ও প্রকৃতভাবে শুধুমাত্র আইনপেশায় রত আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারিদের এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে পারে। পাশাপাশি বার কাউন্সিলে আইনজীবীদের জামাকৃত কল্যাণ তহবিল থেকে ঋন বা সরকারের কাছ থেকে অনুদান নিয়ে আইনজীবী ও আইনজীবী সহকারিদের জন্য ত্রান সহায়তা চালু করলে বর্তমান দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। তবে তাতে বিচার প্রার্থীদের দূর্ভোগ কমবেনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।