বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ৬দিন ধরে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানী ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। পানি বন্দি প্রায় দুই লাখ মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে। ৬দিন ধরে বন্যার পানিতে ভাসলেও এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বে-সরকারি পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা চোখে পড়ছে না। চলতি বন্যায় জেলায় নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছে ৫০০ পরিবার। এ পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে শান্ত, বেলাল ও মোস্তাকিম নামে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, বুধবার ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ব্রীজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৫৩ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ভাঙন দেখা দিয়েছে নাগড়াকুড়ার টি-বাঁধ, সারডোব, নুনখাওয়া ও মোগলবাসা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডাক্তার হাবিবুর রহমান জানান, বন্যার পানিতে ডুবে তিন দিনে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের জানজায়গির গ্রামের সাইফুল ইসলামের পুত্র মোস্তাকিম (১৪মাস)। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নিজেদের ঘরে বন্যার পানিতে পড়ে মারা যায়। সোমবার বিকালে পানিতে ডুবে মারা যায় নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়লপুর ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের বেলাল হোসেন (৮)। সে ঐ গ্রামের আমীর হোসেনের পুত্র। বাড়ির পাশে দোন থেকে বিস্কিট কিনতে গিয়ে রাস্তার পাশে বন্যার কারণে ভেঙ্গে যাওয়া গর্তে পড়ে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া চিলমারী উপজেলায় শান্ত ইসলাম (৭) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়। সে চিলমারী সদর ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল গ্রামের জাহেদুল ইসলামের পুত্র। নিহত শান্ত গত রোববার কলার ভেলায় করে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়।
হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ বি এম আবুল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের ৩হাজার পরিবারের প্রায় ১৫হাজার মানুষ ৫দিন ধরে বন্যার পানিতে ভাসছে। বানভাসি মানুষরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে। শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানী ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ৭শতাধিক পরিবার বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে বাঁধের রাস্তায়। তিনি জানান, সোমবার উপজেলা পরিষদে মিটিং করে হাতিয়া ইউনিয়নে ৩৫০ প্যাকেট ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হয়। যা এখনও হাতে পাইনি। আশা করি বুধবার হাতে পেলেই তা বিতরণ করা হবে। প্রতি প্যাকেটে রয়েছে ২০ কেজি চাল, ১ কেজি করে তেল, ডাল, লবণ ও চিনি। অপ্রতুল এই ত্রাণে তিনি বিপাকে পড়েছেন বলে জানান।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা জানান, জেলার ৩টি পৌরসভা ও ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৫টি বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ৩৫৭টি গ্রাম বন্যার পানিতে ভাসছে। এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২৯ দশমিক ৫০কিঃমিঃ বাঁধ। ৩৭কিঃমিঃ গ্রামীন কাঁচা রাস্তা। ভাঙ্গনের শিকার হয়ে ভিটেমাটি হারিয়েছেন ৫শত পরিবার। ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৩হাজার ৯২২ হেক্টর। এখন পর্যন্ত দুর্গত মানুষদের সহায়তার জন্য ৯ উপজেলায় ৩০২ মে.টন চাল ও ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এখনও মজুদ আছে এক হাজার ২৫ মে.টন চাল ও ১০লাখ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।