পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার প্রাদুর্ভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতি এখন নিম্নমুখি। করোনা মেকাবিলায় শক্তভাবে নৌকার মতোই হাল ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। করোনা পরবর্তী অর্থনীতি সচল এবং সব ধরনের মানুষ যাতে উপকৃত হয় এজন্য প্রধানমন্ত্রী একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। ইতোমধ্যে ১৯টি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি ৬ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। আর তাকে সহায়তা করছেন প্রশাসনের বেশ কয়েকজন সিনিয়র দক্ষ এবং কাজপাগল আমলা।
করোনাকালে সকল বাঁধা মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাত-দিন দেশের প্রতিটি মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সে সঙ্গে প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দিচ্ছেন বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা। করোনা পরিস্থিতিতে টিকে থাকা এবং মানুষকে ভাল রাখার জন্য নতুন নতুন কর্মপরিকল্পনা করছেন প্রধানমন্ত্রী। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মহামন্দা মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে। দেশ ও জাতি একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী একই সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি জীবন-জীবিকা রক্ষাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।
ইতোমধ্যে প্রায় এক লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। প্যাকেজ সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হলে ১২ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ সুবিধা পাবে। এছাড়া প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ কর্মসুরক্ষা ও নতুন কর্মসংসংস্থান হবে। করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রথমেই গত ২০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য সচিবদের দায়িত্ব দেন। প্রতি জেলায় একজন করে ৬৪ জেলায় ৬৪ জন সচিবকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গত বছর ২৮ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে যোগদান করেছেন। এর আগে তিনি সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন। মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্ত্রী কামরুন নাহার তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে কর্মরত।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মন্ত্রিপরিষদে যোগদানের পর নতুন নিয়ম চালু করেছেন। তার দফতরে সচিব ও অতিরিক্ত সচিব ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। তিনি পদ্মাসেতুর নির্মাণে বড় দায়িত্ব পালন করে প্রধানমন্ত্রীর আস্তা অর্জন করেন। করোনাকালে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সুচারুভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি সার্বিক পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রীকে জানাচ্ছেন। এতে করে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্যত করোনা মোকাবিলায় সকলকে সম্পৃক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, নিয়োগকৃত কর্মকর্তারা সচিব, জেলার সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করে করোনা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার কাজ তত্ত্বাবধান করে আসছেন।
এর মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুণ, স্বাস্থ্য সেবা সচিব আব্দুল মান্নান, এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রুত কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
প্রশাসনে দায়িত্বশীলদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধামন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সারাদেশে করোনা মোকাবেলায় সবকিছু দেখভাল করে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। যেখানে স্থবিরতা, দুনীতি অনিয়মের খবর পাচ্ছেন সেখানেই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিচ্ছেন। করোনায় সরকারি কর্মচারীদের কাজ গতিশীল করতে পরিশ্রম করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে দায়িত্ব নেয়ার বেশিদিন না হলেও এই কয়েক মাসের মধ্যে তিনি নিজের কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনেক নির্দেশ দ্রুত বাস্তাবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও এমপিরা ফোন করলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের সমস্যার কথা শোনেন মুখ্য সচিব। তার প্রচেষ্টার করোনায় আক্রান্ত অনেক এমপি ও মন্ত্রী দ্রুত চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের খোঁজ খবর রাখছেন বিততিহীনভাবে।
প্রধানমন্ত্রীর সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এক সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিএস-১ এর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে ঢাকার জেলা প্রশাসক ছিলেন। এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব। গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। কাজে গতি আনতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি টিম তৈরি করেছেন। সেই টিম সারাদেশে করোনা সমস্যা দেখভাল করছেন। দেশে কোথায় কি সমস্যা তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করেছেন এবং তা অব্যাহত রেখেছেন। করোনাসহ কোনো তথ্য পেলেই সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুণ করোনা মোকাবিলায় প্রশাসনে আলোচিত হয়েছেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ জরুরি ভিত্তিতে নতুন দুই হাজার ডাক্তার এবং ৬ হাজার নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এছাড়া করোনা সঙ্কটকালে মাঠ প্রশাসনকে শক্তভাবে পরিচালিত করছেন। আক্রান্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিকিৎসা ব্যয় ভার সরকার বহন করার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়া যা মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দিন ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান সরকারের জন্য যে ভাবে কাজ করেছেন ঠিক সেভাবে এখনো স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির তালিকা প্রণয়নে যারা অনিয়ম দুনীতি ও লুটপাট করেছে তাদের বিরুদ্ধ কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছেন এবং সাময়িকভাবে বরখাস্ত করছেন। এছাড়া ১১৩ জন দুনীতিবাজ জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মামলা করে সরকারের গুডবুকে উঠেছেন।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগর সচিব আব্দুল মান্নান। মাত্র কয়েকদিন আগে দায়িত্ব নিয়েছেন। দায়িত্ব নেয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তার স্ত্রী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার দুই সন্তানও করোনায় আক্রান্ত। পারিবারিক এই বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রশাসনিক কাজে শক্তভূমিকা পালন করেন। দায়িত্ব নেয়ার পরে মন্ত্রণালয় থেকে দুর্নীতিবাজ কয়েকজনকে বদলি করেছেন। দুর্নীতিবাজদের তালিকা করে ইতোমধ্যে কাউকে কাউকে সরিয়েছেন। আগামীতে আরো কিছু বিতর্কিত কর্মকর্তাকে সরানোর জন্য সরানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে গোপনে তালিকা দিয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত করতে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সচিব মান্নান।
এদিকে করোনা মোকাবিলায় ৬৪ জেলায় দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিবরা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করছেন। তারা সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থাকে লিখিত আকারে দিচ্ছেন; প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে জানাচ্ছেন। মূলত কয়েকজন সচিবের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় করোনাকালেও প্রশাসন গতিশীল হয়ে উঠেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।