পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের করাল গ্রাসে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। সংঙ্কটে পড়েছে ব্যাংকিং খাতও। দিন গড়ানোর সাথে সাথে এই সংঙ্কট আরও তীব্রতর হতে পারে বলে মক বিশেষজ্ঞদের। সম্ভাব্য সঙ্কট থেকে ব্যাংকিং খাত উত্তরণের উপায় হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে।
ব্যাংকিং খাতের সঙ্কট মোকাবেলা করতে দেশের অর্থনীতিকে আগের অবস্থানে নেয়ার কথা বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট। গতকাল সোমবার প্রকাশিত এই রিপোর্টে আরও বলা হয়, করোনার কারণে ঋণ গ্রহীতাদের সক্ষমতা কমায় ঋণ আদায়ে শিথিলতা এসেছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদের আয় থেকে ব্যাংকিং খাত বঞ্চিত হবে। এতে ব্যাংকগুলোর আয় কম হবে। নতুন করে বেশি ঋণ বিতরণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কম সুদে তহবিলের জোগান, সুদ বাবদ ভর্তুকি দিয়ে ব্যাংকগুলোর ক্ষতি মেটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা করছে, আগামী বছর থেকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে। ফলে আগামী ছয় মাস উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং শিল্প খাত ঘুরে দাঁড়াবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনার প্রভাবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা কমায় এর দাম কমে গেছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিটেন্স কমে যাবে। দেশের অর্থনীতিকে নেতিবাচক অবস্থা মোকাবেলা করতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে পাঁচ ব্যাংকের কাছেই রয়েছে মোট খেলাপি ঋণের ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বাকি ৫৫ ব্যাংকে খেলাপির পরিমাণ ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে ১০ ব্যাংকের কাছেই খেলাপি ঋণ রয়েছে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ। বাকি ৫০ ব্যাংকে খেলাপির হার ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর খেলাপি ঋণের সব চেয়ে বড় একটি অংশ পুনঃতফসিল হয়েছে। এ মধ্যে গত বছরই ৫২ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে ২৩ হাজার কোটি টাকা, ২০১৭ সালে ১৯ হাজার কোটি টাকা, ২০১৬ সালে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং ২০১৫ সালে ১৯ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে।
এদিকে গত বছর খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের দিক থেকে শীর্ষে ছিল শিল্প খাত। ২০১৯ সালে এ খাতে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয় ৩০ দশমিক ১ শতাংশ।
এর পরেই ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ রয়েছে তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে। এছাড়া ১১ দশমিক ৭ শতাংশ ঋণ পুনঃতফসিলীকরণ করা হয়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যে।
অন্যান্য ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, বাণিজ্যিক ঋণে ১০ শতাংশ, চলতি মূলধনে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, অবকাঠামোতে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং কৃষি খাতে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।