পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দৈনিক ইনকিলাবের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে পত্রিকাটির সম্পাদক আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দীন ও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় জনৈক আইনজীবীর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দৈনিক ইনকিলাব দেশপ্রেমে প্রেরণা যোগানোসহ সমৃদ্ধশালী দেশ গঠন, সুস্থ সমাজ বিনির্মাণ, ইসলামী চেতনাবোধকে উজ্জীবিত করা এবং কুশিক্ষা প্রতিরোধ, সুশিক্ষার বিস্তার ও ভিনদেশি ক্ষতিকর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধের মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছে। যে কারণে দৈনিক ইনকিলাব দেশপ্রেমিক ও ইসলামী চেতনায় উজ্জীবিত জনসাধারণের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছে। মামলা হামলা করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের পরিণাম শুভ হবে না বলে তারা মন্তব্য করেন। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে হবে। ইনকিলাবের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। এ মামলা প্রত্যাহার করা না হলে দেশের সাধারণ জনগণ মাঠে নামতে বাধ্য হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সহসভাপতি বর্ষীয়ান ইসলামী রাজনীতিবিদ আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে কারো আপত্তি থাকলে সে বিষয়ে প্রতিবাদ জানানোর বিধান আছে। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ আপত্তিকর বিষয়ে সংশোধনী বা প্রতিবাদ প্রকাশ না করলে পরবর্তীতে প্রেস কাউন্সিলে মামলা করা দায়ের করাই নিয়ম। কিন্তু যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই রীতি ও বিধান অনুসরণ না করে বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রবর্তিত ডিজিটাল নিরাপত্তা নামের বিতর্কিত আইনের অপব্যবহার করে দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনা সংবাদপত্রের কন্ঠরোধ করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
আল্লামা ইউসুফী বলেন, আমরা অবিলম্বে দৈনিক ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি জনগণের বাকস্বাধীনতা হরণ, ভিন্নমত দমন ও সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধে অপব্যবহারের ব্যাপক সুযোগ থাকা বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জন্যও জোর দাবি জানাচ্ছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, দৈনিক ইনকিলাব তথ্য উপাত্ত দিয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সে সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কোন আপত্তি বা ভিন্নমত থাকলে তার জন্য প্রতিবাদ দেয়া বা প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহার সুযোগ ছিল। এ প্রক্রিয়া গ্রহণ না করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়া আর কিছুই না।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যে গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে তা ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলাসহ গণমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার ধরন দেখলে স্পষ্ট হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় এই কালো আইন বাতিল করা জরুরি।
মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হয়রানির শিকার হয়ে গ্রেফতারকৃত সাংবাদিকদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি জানান। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা এবং সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আন্দোলন অতীতেও ছিল ভবিষ্যতেও থাকবে ইন শা আল্লাহ।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন প্রধান আমীরে শরীয়ত মাওলানা জাফরুল্লাহ খান ও মহাসচিব মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ আশরাফ দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ইনকিলাব জন্মলগ্ন থেকে যুগ যুগ ধরে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, ইসলাম ও মানবতার পক্ষে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করে আসছে। দুর্নীতিবাজ ও জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সত্য প্রকাশ করে দেশ ও জনগণের অন্তরে স্থান করে নিয়েছে। ইনকিলাব সত্য প্রকাশ করবে, সত্যের পক্ষে লিখে সরকারকে সহযোগিতা করবে, এটাই ইনকিলাবের ধর্ম।
কিন্ত কুচক্রি মহল ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষপের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যা সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট করে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে যথেষ্ট। দেশের সাধারণ জনগণ তা কোন দিন মেনে নিতে পারে না।
নেতৃদ্বয় অবিলম্বে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েকৃত মামলা প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানিয়ে বলেন, এ মামলা প্রত্যাহার না করলে দেশের সাধারণ জনগণ মাঠে নামতে বাধ্য হবে।
ইসলামী ঐক্যজোট : ইসলামী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসাইন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, দৈনিক ইনকিলাব যুগ যুগ ধরে সততা ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে এদেশের আলেম উলামাসহ কোটি কোটি সাধারণ পাঠকের আস্থা, ভালবাসা ও সুখ্যাতি অর্জন করেছে। একটি গোষ্ঠী ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধের করতেই ইনকিলাব সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে। আমরা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীন সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে দুর্নীতিবাজ ও অপরাধচক্রের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। আমরা মনে করি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংশোধন করে কিছু ধারায় পরিবর্তন আনা আবশ্যক। অন্যথায় দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করলেই সেই চক্রটি বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, হামলা মামলা করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণে পরিণাম শুভ হবে না। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে হবে। তারা অবিলম্বে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বিশ্ব মুসলিম পরিষদ : বিশ্ব মুসলিম পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা একে এম আশরাফুল হক ও মহাসচিব মাওলানা মুমিনুল ইসলাম বলেন, যথাযথ রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করার উদ্দেশ্যেই ইনকিলাবের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এভাবে যদি সংবাপত্রের কার্যক্রমে বাধা দেয়া হয় তাহলে স্বাধীন সংবাদ প্রবাহ চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হবে। আমরা আশা করছি সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় অবশ্যই বিশ্বাসী। তাই অবিলম্বে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হবে।
ঢাকা মহানগর জমিয়ত : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী ও মহাসচিব মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী ইনকিলাবের বিরুদ্ধে মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন শুধুমাত্র রাজনৈতিক দমন-পীড়নের জন্য নয়, বরং দেখা যাচ্ছে অনিয়ম, অপরাধ ও দুর্নীতি চাপা দিতেও এই আইনের ব্যবহার শুরু হয়েছে। তারা অবিলম্বে ইনকিলাব সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জোর দাবি জানান।
ইসলামী ছাত্রসমাজ : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ নুরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক মো. ওলীউল্লাহ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নাগরিকদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করেছে। সরকারি আমলা বা এমপিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোন খবর প্রকাশ করলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে। তারা অবিলম্বে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।