পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও ইসলামী চিন্তাবিদ, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, ধর্ম ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আলহাজ্ব মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) এর ১৬তম ওফাত দিবস আজ। বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও অভিভাবক বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এই ক্ষণজন্মা আলেম ২০০৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করেন। এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের আয়োজনে মহাখালীর মসজিদে গাউছুল আজমে আজ বাদ এশা দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে এবার বিশেষ সেমিনার বা আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে না।
হযরত মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) ছিলেন একজন ক্ষণজম্মা আলেম। তিনি ছিলেন ঐক্যের প্রতীক এবং নেতৃত্ব ও সেবার প্রেরণা। সদালাপী, বন্ধু বৎসল্য, অতিথিপরায়ণ ব্যক্তি হিসেবে তিনি সুপরিচিত। উদার ও অমায়িক এ মানুষটির সান্নিধ্যে এসে যে কেউই মুগ্ধ না হয়ে পারতেন না।
মাওলানা এম এ আবদুল মান্নান (রহ.) এর অসংখ্য অবদান রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল কলেজের শিক্ষকদের বেতন, ভাতা ও অনুদান বাড়ানোর পিছনে তার অবদান অবিস্মরণীয়। মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও শিক্ষকদের জীবনমানের উন্নয়নেও তার অনেক অবদান রয়েছে। এছাড়াও ১৯৮৭ সালের বন্যাতেও তার অবদান স্মরণীয়। বাংলাদেশের ১৯৮৭ সালের মহা বন্যার সময় তিনি বিদেশ থেকে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে অনেক ত্রাণ এনেছেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবক ও দানবীর। তিনি অনেক স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ তৈরি করেছেন। তিনি ঢাকার মহাখালিতে গাউছুল আজম জামে মসজিদ নির্মাণ করেন।
মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) ছাত্র হিসেবে ছিলেন তুখোড় মেধাবী। শিক্ষক হিসেবে ছিলেন মানুষ গড়ার দক্ষ কারিগর। শিক্ষক সংগঠক হিসেবে ছিলেন দিক-দিশারী। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের তিনি রূপকার। মাদরাসা শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের তিনি সভাপতি ছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনে তিনি স্মরণীয় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তিনি ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া আলিয়া মাদরাসাকে সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করেছেন। ইসলামপুরে (চাঁদপুর) ফাজিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার প্রচেষ্টায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তিনি ছিলেন বহু প্রতিষ্ঠানের অবিভাবক। ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাৎ আলিয়া মাদরাসাসহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নে তার অবদান অবিস্মরণীয়। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার অবিরাম চেষ্টা ও সাধনা চিরস্মরণীয়।
বাংলাদেশে ইসলামী চিন্তা-চেতনা সংহতকরণে তিনি দৈনিক ইনকিলাব প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইনকিলাবের মাধ্যমে এদেশে দ্বীনি চেতনাসম্পন্নদের আশা-আকাক্সক্ষা, স্বপ্ন বাস্তবে রূপ লাভ করে। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর ইসলামী চেতনাভিত্তিক ইনকিলাবের ন্যায় পত্রিকার সফলতা ছিল প্রায় অসম্ভব এবং অপ্রত্যাশিত। মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। সর্বগ্রাসী হতাশার দিগন্তে ইসলামী চেতনাসম্পন্নদের নিকট মাওলানা আবদুল মান্নান তাই এক অনুপ্রেরণার নাম।
চাঁদপুর জেলার, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ১৯৩৫ সালের মার্চে তার জন্ম হয় এক পীরানা ঘরানায়। পিতা সুফী শাহ মোহাম্মদ ইয়াছীন রহ. ছিলেন ফুরফুরা শরীফের প্রখ্যাত পীর হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দীকী (রহ.) এর খলিফা, একজন উচ্চস্তরের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তেমনি তার মায়ের বাবা মানে নানা মাওলানা আবদুল মজীদ (রহ.)ও ছিলেন উক্ত পীর সাহেবের খলীফা একজন ওলীয়ে কামেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।