Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধামরাইয়ে ন্যায্য দাম নিয়ে সংকিত গরু খামারী আমজাদ হোসেন

করোনার প্রভাব

মোঃ আনিস উর রহমান স্বপন, ধামরাই (ঢাকা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২০, ৩:৪৭ পিএম

সামনে ঈদ উল আজহা (কোরবানির ঈদ) হাতে গুণা আর বেশী দিন নেই। খামারের গরু গুলো বিক্রি করতে হবে ঈদের আগেই। তবেই না লাভের টাকা আসবে ঘরে।
তাই শেষ সময়ে শ্রমিকদের উপর নির্ভর না হয়ে পরিবারের সকলেই মিলে ব্যাতিব্যস্ত সেবা যতœসহ গরু মোটা তাজা করণে।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই সম্পূর্ন ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তুলেছে এমনি একটি খামার যা ঢাকার জেলার ধামরাই উপজেলার একেবারেই নিবৃতপল্লী ললিতনগর গ্রামে মৃত আলহাজ শওকত হোসেনের ছেলে গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আমজাদ হোসেনের বাড়িতে।
এ খামারে এক একটি গরুর ওজন হবে প্রায় ৫ মণ থেকে শুরু করে ৪০ মণ পর্যন্ত। এই খামারে ৫০ টি ষাড় গরু রয়েছে। এ খামারের ভেতর ঢুকতেই ষাড়ের যে, হাকডাক তা হঠাৎ শুনলে ভয় পেতেই হবে। তবে খামারের স্বত্তাধীকারি আমজাদ হোসেন সামনে গেলে একেবারেই চুপচাপ হয়ে যায় গরু গুলো। এ খামারে গরু গুলো লালন পালন করতে ৪ জন শ্রমিক রয়েছে। শ্রমিকদের পাশাপাশি নিজেদেরও পরিচর্যা করতে হয়। খামার মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, ২ বছর আগে স্থানীয় হাট থেকে ছোট বড় বিভিন্ন জাতের ৫০ টি গরু প্রায় ১ কোটি টাকা দিয়ে ক্রয় করি। ৪ বছর ধরে নিজের মতো করে খামার গড়ে তুলেছি।
দেশীয় ব্যবস্থায় গরু গুলিকে লালন পালন প্রসঙ্গে খামারী মো: আমজাদ হোসেন বলেন, গরুগুলোকে কাচা ঘাস খাওয়ানোর জন্য নিজস্ব ৮ বিঘা জমিতে ঘাস রোপন করেছি। এ ঘাসের পাশাপাশি প্রতিদিন কলা, ছোলা, খড়, ভুট্রা, আলু, মিষ্টি আলু, ভুষি,খুদ দিনে ৪ থেকে ৫ বার খাওয়ানো হয়।
গরু গুলো বিশাল আকৃতির হওয়ায় তাদের শরীর ঠান্ডা রাখতে ২ থেকে ৩ বার গোসল করানো হয়। এছাড়াও গরু গুলো সারাক্ষণ বাতাসের মধ্যে রাখার জন্য পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।বিদ্যুৎ চলে গেলে বিকল্প হিসেবে জেনারেটরের ব্যবস্থা আছে।
বিক্রির ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে গরুর মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, প্রতি বছর ভালো লাভেই বাড়ি থেকে গরু বিক্রি হয়ে যায়। এই বছর করোনার প্রভাবে বিক্রির কোন সাড়া পাচ্ছি না। এখানে আমার প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ৪ জন শ্রমিক খামারে কাজ করে। তাদের থাকা খাওয়া আমার দিতে হয়। তারপরও প্রতি জনকে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়।এবার আশা করছিলাম সব মিলিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা বিক্রি হবে। ভাল ক্রেতা না পেলে এবার লোকসান গুনতে হতে পারে । ক্রেতার কোন সাড়া নেই।
বিশেষ করে আমজাদ হোসেনের খামারের রাজা বাহাদুর নামে কালো সাদা বংয়ের একটি বিশাল আকৃতির হলেষ্টান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাড় গরু রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এই গরুর ওজন প্রায় ৪০ মণের মত হবে। আমজাদ হোসেনের মা শখ করে এই গরুর নাম রেখেছেন রাজা বাহাদুর। এছাড়াও অষ্ট্রেলিয়ান, পাঞ্জাব, নেপালি,সিন্দি, শাহিওয়াল ও দেশীয় জাতের গরু রয়েছে।
প্রতিদিন নিজ গ্রাম ছাড়াও আশ-পাশের গ্রাম থেকে মানুষ এই গরুগুলোকে দেখতে আসে, বিশেষ করে রাজা বাহাদুরকে। রাজা বাহাদুরের দাম সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরুটির দাম ১০ লক্ষ টাকা আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, করোনার প্রভাবে দাম নিয়ে খুব সংকিত আছি। যদি ঈদের আগে করোনার প্রভাব একটু শিথিল হয় এবং দেশের বাইরে বিশেষ করে ভারত থেকে গরু না আসলে হয়তোবা একটু বেশী দাম আশা করা যায়।
গরু গুলোর চিকিৎসা সেবা সর্ম্পকে জানতে চাইলে খামারের মালিক আমজাদ হোসেন বলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাকে ফোন দিলেই আসবো বলে ক্ষান্ত আজও পর্যন্ত উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার দেখা পায়নি । তাই স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়েই খামার পরিচালনা করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ