Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শরণখোলায় হত্যা মামলায় বাদী পক্ষের তাণ্ডব

শরণখোলা উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২০, ৭:২৬ পিএম

বাগেরহাটের শরণখোলায় একটি হত্যা মামলার বাদী পক্ষের তান্ডব এলাকায় থাকতে পারছে না আসামিদের নিরীহ স্বজনসহ অনেক প্রতিবেশী। বাদী পক্ষরা আসামিদের বাড়ি-ঘরে হামলা ও ভাঙচুড় চালিয়ে মালামাল লুটসহ তাদের অত্মীয়-স্বজনকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি আসামি খোঁজার নামে প্রতিবেশীদের বাড়িতেও হামলা করে তার।
জানা যায়, গত ৮ মে সকালে উপজেলার উত্তর তাফালবাড়ি গ্রামে জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে শাহ আলম খন্দকার (৬০) নামের এক ব্যাক্তি গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর ছাড়পত্র নিয়ে ফিরে আসার সময় শরণখোলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাহিদা বেগম (৫০) বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় ছয় জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দাযের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাঙচুড় চালিয়ে মালামাল লুট করার অভেযোগ ওঠে বাদী পক্ষের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আসামি পক্ষের বাড়ি-ঘরে তালা ঝুলছে। বাড়িতে থমথম অবস্থা বিরাজ করছে। তাদের স্ত্রী-সন্তান ও নিরিহ আত্মীয়-স্বজনরা কেউ বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছে না। পরিবারেন বয়ষ্ক নারীরা পর্যন্ত ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আছে।
এসময় কথা হয় আসামি পক্ষের স্বজন লিপি বেগম, রহিমা বেগম, শহিনুর বেগমের সাথে। তারা জানান, হত্যা মামলার পর থেকে বাদীর ভাই এসাহাক তালুকদার, বাচ্ছু তালুকদার, মিলন তালুকদার, সোহগ তালুকদার, আলমগীর খন্দকার, সাইফুল খন্দকার, আলামিন আকন, মাসুদ রানা রবিউলসহ তার আত্মীয় স্বজন মিলে তাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। তারা আসামি লতিফ খন্দকার, দুলাল খন্দকার ও রাজ্জাক খন্দকারের ঘরে ভাঙচুড় চালিয়ে স্বর্ণালঙ্কার, ধান-চাল, হাসমুরগি, জমির দলিলসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়।
তাদের হামলার শিকার প্রতিবেশী সরোয়ার হোসেন জানান, তিনি শাহিনুর বেগমকে ওষুধ দিতে তার বাড়ি যান। এ অপরাধে বাদীর অত্মীয় স্বজনরা তাকে বেধড়ক মারপিট করে। এছাড়া ওই বাড়িতে যাওয়ার অপরাধে প্রতিবেশী আফজাল পাহলান, নাছির পাহলানকেও মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ হত্যা মামলাকে পুজি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে বাদীর আত্মীয় স্বজনরা।
প্রতিবেশী মো. নজরুল ইসলাম বাদল, রিপন বয়াতী ও আসলাম ফরাজী জানান, বাদীর ভাইরা আসামি ধরার নাম করে তাদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়। এসময় কেউ কথা বললে হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে যায় তারা।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবুল বাশার বলেন, মামলার পরে আসামিদের ছয়টি মহিষ ও হাঁস-মুরগিসহ অন্যান্য মালামাল তাদের আত্মীয় স্বজনদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। আসামিদের বাড়ি-ঘরে লুটপাটের ঘটনা সঠিক নয়। আসামিরা পালাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে বাদীর ভাই এসাহাক তালুকদার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ভগ্নিপতিকে হত্যার পরে তারা এখন বিভিন্ন নাটক করছেন।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ