পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্যবিধি মানা বাধ্যতামূলক। দীর্ঘ আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর ভাড়া বৃদ্ধি করে যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার, দুই সিটে একজন বসানোর শর্তে গণপরিবহণ চালু করা হয়। কিন্তু নাম মাত্র ডেটল, স্যাভলন কিংবা গুঁড়া সাবান মিশিয়ে জীবাণুনাশক তৈরি করা হচ্ছে। সঙ্গে দেয়া হচ্ছে রঙ। সেগুলোই যাত্রীদের হাতে স্প্রে করা হচ্ছে। অনেক বাসের হেলপারই বলতে পারেননি ওইসব জীবাণুনাশক কী দিয়ে তৈরি। এই হচ্ছে রাজধানীতে চলাচলকারী গণপরিবহণে করোনা ঠেকানোর স্বাস্থ্যবিধি মানার চিত্র।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রহমান বলেন, গণপরিবহণে যা হচ্ছে তা নিছক রঙিন পানি থেরাপি। এটা ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনবে। শুধু গণপরিবহন নয়, জীবাণুনাশক যেসব চ্যানেল বা টানেল তৈরি করা হয়েছে এসবে বিøচিং পাউডার দিয়ে স্প্রে করা হয়। যদি কারও চোখে রঙিন পানি ও বিøচিং পাউডারের পানি প্রবেশ করে তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। আমার ধারণা, বিøচিং পাউডার বা সাবানের গুড়া দিয়ে জীবাণুনাশক তৈরি করে তা গণপরিবহন যাত্রীদের হাতে স্প্রে করা হচ্ছে। এগুলো অস্বাস্থ্যকর ও ক্ষতিকারক।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দেশব্যাপী দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল গণপরিবহন। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় ৫০ শতাংশ যাত্রী গণপরিবহন চালানোর অনুমতি দেয় সরকার। তবে শর্ত দেয়া হয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত ছিল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে যাত্রীদের হাত জীবাণুমুক্ত করা। কিন্তু গণপরিবহনে যাত্রীদের জন্য যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হচ্ছে দিন দিন তা মানহীন হয়ে পড়ছে। যাত্রীদের অভিযোগ বাসে যে জীবাণুনাশক হাতে স্প্রে করা হয়, তা রঙিন পানি ছাড়া আর কিছু নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাকালে স্বাস্থ্য সুরক্ষার নকল পণ্যে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। মানুষের জীবন নিয়ে চলছে জুয়াখেলা। এর মধ্যে পরিবহন সেক্টরের লোকজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে কিংবা আসল জিনিস কিনে যাত্রীসেবা দেবে সেটা ভাবাও খুব কঠিন। কারণ এ সেক্টরের লোকজনের নামে এমনিতেই চাঁদাবাজিসহ অনেক বদনাম আছে।
রাজধানীর কর্মজীবীদের মধ্যে যারা নিয়মিত বাসে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন তাদের অভিযোগ গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা বাড়তে বাড়তে এখন প্রায় মানাই হচ্ছে না। সে বিষয়ে কেউ কোনও নজর দিচ্ছে না এবং ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। আবার বাসে যাতায়াত করা অনেক যাত্রীও স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে খুবই উদাসীন। এ কারণে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আরও অনেক বেড়ে যেতে পারে।
যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, মতিঝিল, মালিবাগ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন রঙের পানির বোতল হাতে গণপরিবহনগুলোর গেটে দাঁড়িয়ে আছেন কন্ডাক্টররা। যাত্রীরা বাসে ওঠার সময় সেই রঙিন পানি তাদের হাত স্প্রে করা হচ্ছে। আর বলা হচ্ছে এটাই নাকি জীবাণুনাশক। পাশাপাশি মাস্ক ছাড়াই গণপরিবহনে যাত্রীদের চলাফেরা করতে দেখা যায়। মীরপুর টু যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ টু গাবতলী রুটের বাসগুলোতেও একই দৃশ্য দেখা যায়। গাবতলী টু সায়েদাবাদ ৮ নম্বর রুটের বাস কন্ডাক্টর তসলিম হোসেন বলেন, বাসে ওঠার সময়ে যাত্রীদের স্প্রে করা হয়। স্যাভলন ও হেক্সিসল দিয়ে বানানো হয়েছে এ স্প্রে। এটা দিয়ে হাত পরিষ্কার করলে দ্রুত জীবাণুমুক্ত হয়। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও টু মতিঝিল রুটের হিমালয় পরিবহনের কন্ডাক্টর মো. হাসান জানালেন, তারা যে স্প্রে করছেন তা রঙ আর পানি দিয়ে বানানো। মালিক তাদের যা দিয়েছে তারা সেটাই ব্যবহার করছেন মাত্র।
মঞ্জিল পরিবহনের যাত্রী বেসরকারি কর্মকর্তা মো. ইমদাদুল হক বলেন, গণপরিবহনে ওঠার সময়ে যেসব জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে এগুলোর কোনও মানই নেই। এর আগে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্কের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে দেখেছি। গণপরিবহনের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কাউকে দেখা যাচ্ছে না। জীবাণুনাশক স্প্রে’র নামে যাত্রীদের অধিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। বাসে যাত্রীদের জন্য স্প্রের যে জীবাণুনাশক দেয়া হচ্ছে তার মনিটর করা দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।