Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কর্ম পরিকল্পনা তৈরী করছে পরিবেশ অধিদপ্তর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২০, ৮:৩৫ পিএম

সারাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক করোনা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি কর্ম পরিকল্পনা প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হুমায়ুন কবির বাসসকে বলেন, ‘করোনা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের আলাদা পদ্ধতির দিকে যেতে হবে। শিগগিরই আমরা সারাদেশে করোনা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করব।’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা দীপঙ্কর বার জানিয়েছেন, করোনা বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনার সম্ভাব্য সমাধানে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সাথে গতকাল শুক্রবার সচিবালয়ে একটি বৈঠক করা হয়েছে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে মানুষ মাস্ক, গগলস এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করছে এবং তা তারা যেখানে সেখানে ফেলে দিচ্ছে। যা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।

ইতিমধ্যে, সরকার করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাস্কস ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। ফলে, প্রচুর করোনা বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এতে রাস্তা-ঘাট এবং অন্যান্য খোলা জায়গার পরিবেশ দুষিত হচ্ছে।

এছাড়াও, দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ করোনা বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। তবে, সারাদেশে কতটা কোভিড-১৯ বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে সে সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক কোন তথ্য নেই।

পরিবেশ ও সামাজিক উনয়ন সংস্থা (ইএসডিও)’র এক সমীক্ষায় দেখা গেছে,সারাদেশে ব্যবহৃত গ্লাভস, মাস্কস, স্যানিটাইজারের পাত্র এবং পলিথিন থেকে এক মাসে কমপক্ষে ১৪ হাজার ৫শ’ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে।

একবার-ব্যবহৃত গ্লাভস থেকে সর্বাধিক ৫ হাজার ৮৭৭ টন করোনা বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার ৩৯ টন প্লাস্টিকের গ্লাভস এবং বাকী ২ হাজার ৮’শ ৩৮ টন অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত গ্লাভস থেকে। ব্যবহৃত হ্যান্ড

স্যানিটাইজারের পাত্র থেকে ৯শ’ টন বর্জ্য তৈরি হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে, শুধুমাত্র ঢাকা শহরে ৩ হাজার ৭৬ টন করোনা বর্জ্য তৈরি হয়ছে। এর মধ্যে গ্লাভস থেকে ১ হাজার ৯শ’ ১৬ টন, অস্ত্রোপচারের মাস্ক থেকে ৪শ’ ৪৭ টন, পলিথিন শপিং ব্যাগ থেকে ৪শ’ ৪৩ টন এবং ব্যবহৃত হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাত্র থেকে ২শ’৭০ টন।

হুমায়ুন কবির বলেন, হাসপাতাল ও অন্যান্য ব্যক্তির ব্যবহৃত করোনা সামগ্রীর বর্জ্য জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকির পাশাপাশি পরিবেশ দূষিত করছে। বর্জ্য সংগ্রহকারীরা বেশিরভাগ সময় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা না নিয়েই বর্জ্য সংগ্রহ করছে। এতে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

তিনি বলেন, কমিউনিটি পর্যায়ে উৎপাদিত করোনা বর্জ্য গৃহস্থালি বর্জ্যরে সাথে মিশ্রিত হচ্ছে। এতে বর্জ্য সংগ্রহকারীদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

তাই, সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধে করোনা বর্জ্য সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, লকডাউন বাস্তবায়ন করা সত্বেও কোভিড বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না গেলে দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে ইএসডিও’র সাধারণ সম্পাদক ড: শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ‘জরিপে আমরা এমন কিছু বর্জ্য সংগ্রহকারীর সাথে যোগাযোগ করেছি যারা অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন কাজ করতে পারছে না। কারও জ্বর হয়েছে। কেউ কাশিতে ভুগছেন। তাদের কেউই কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা করার
সুযোগ পাননি।’

করোনা সংক্রমণকালে মেডিকেল বর্জ্যরে বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধ এবং চিকিৎসায় যে সব সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলোর যথাযথ বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা জরুরী। যত্রতত্র মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজারের পাত্র ইত্যাদি সামগ্রী ফেলে রাখায় একদিকে যেমন দূষণ বাড়ছে, অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি গতকাল শুক্রবার তার সরকারী বাসভবন থেকে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিং এ এসব কথা বলেন।

তিনি এসব পরিত্যক্ত বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান। পাশাপাশি হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যাতে স্বাস্থ্যসম্মত হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়ার আহ্বান জানান। সূত্র: বাসস



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ