পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার সঙ্কটের মধ্যেও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ) প্রথমবারের মতো ৩৫ বিলিয়ন ডলারের (তিন হাজার ৫০০ কোটি) মাইলফলক অতিক্রম করেছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৩৫ দশমিক শ‚ন্য ৯ বিলিয়ন ডলার বা তিন হাজার ৫০৯ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় দুই লাখ ৯৮ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা (এক ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে)। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। রিজার্ভের দিক দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের যুগান্তকারী উদ্যোগ ২ শতাংশ প্রণোদনায় এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স বেড়েছে। এছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে।
এর আগে, গত ৩ জুন পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ রেকর্ড ৩৪ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছিল। অর্থাৎ এক মাসে দুইবার রিজার্ভের রেকর্ড হলো। এর আগে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন (৩ হাজার ৩৬৮ কোটি ডলার) রিজার্ভ অতিক্রম করেছিল। এরপর দীর্ঘদিন ৩১ থেকে ৩২ বিলিয়ন ডলারে ওঠানামা করেছে রিজার্ভ।
এদিকে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু বিদেশি ঋণ ও দান অনুদানও। আমদানি ব্যয় কমে যাওয়ায় রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। একই সঙ্গে বিদেশি ঋণ ও অনুদান আসছে। আমদানি ব্যয় হ্রাস পাওয়ায় দেশের রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে। তবে রফতানি আয় বাড়ানো সম্ভব না হলে রিজার্ভর প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন হবে।
করোনাভাইরাসে লকডাউনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা অনেক প্রবাসীর আয় বন্ধ হয়ে যায়। আবার অচলাবস্থার কারণে অনেকে দেশে অর্থ পাঠাতে পারেননি। এসব কারণে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস রেমিট্যান্সের প্রভাব কমে যায়। দেশের আমদানিও কমেছে তরতর করে। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে মে মাসে রেমিট্যান্স পাঠাতে থাকেন প্রবাসীরা। গত মে মাসে ১৫০ কোটি ৩৪ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠান প্রবাসীরা। খারাপ খবরের ছড়াছড়ির মধ্যেও সুসংবাদ দিচ্ছেন প্রবাসীরা। করোনা সঙ্কটের মধ্যেও বৈধ পথে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে আসছে। চলতি মাসের ১৮ জুন পর্যন্ত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ১২০ কোটি ৮০ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের পুরো জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার। সুতরাং আগের বছরের একই মাসের তুলনায় চলতি জুনে রেমিট্যান্স বাড়বে। এভাবে রেমিট্যান্স বাড়লেও আমদানি দায় পরিশোধের তেমন চাপ নেই। যে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রচুর ডলার কিনতে হচ্ছে। গত মঙ্গলবারও কয়েকটি ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ডলার কেনা হয়। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি থেকে প্রচুর ঋণ আসছে। যে কারণে রিজার্ভে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) এক হাজার ৬৩৬ কোটি ৪৬ লাখ (১৬ দশমিক ৩৬৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। আগের বছরের একই সময় পর্যন্ত এসেছিল এক হাজার ৫০৫ কোটি ডলার। এ হিসাবে মে পর্যন্ত রেমিট্যান্স বেশি আছে ১৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ।
গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে এই অঙ্ক ছিল এক হাজার ৫০৫ কোটি ১০ লাখ (১৫ দশমিক ০৫ বিলিয়ন) ডলার। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় এ বছর দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক ১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার বা ৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়েছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পুরো সময়ে (জুলাই-জুন) এক হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার পাঠান প্রবাসীরা।
বেসরকারি পর্যায়ে বৈদেশিক মুদ্রার ঋণের দায় ও এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় শোধ করলে এ রিজার্ভ আবারও কমে যাবে বলছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ- এই ৯টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করে থাকে।
জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ সিপিডি’র অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, করোনা মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সহায়তার কারণেই এই দুর্যোগকালেও রিজার্ভে রেকর্ড হয়েছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংকিং খাত থেকে মোটা অংকের ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে। না হলে ব্যাংকগুলো সঙ্কট কাটিয়ে সঠিক পথে ফিরতে পারবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।