Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

একাধিকবার বিদ্যুৎ-জ্বালানীর দাম বৃদ্ধির আইন পাস হলে তীব্র আন্দোলন- রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২০, ১:৪৯ পিএম | আপডেট : ২:২৭ পিএম, ২৪ জুন, ২০২০

একাধিকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দাম পরিবর্তনের সুযোগ রেখে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন’ (সংশোধন) বিল-২০২০ উত্থাপন করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ। সংসদে অনুমোদনের জন্য উত্থাপিত এই বিলটির মাধ্যমে বর্তমান সরকার এক নিষ্ঠুর ও অবিবেচক গণদুশমন হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দাম বছরে কয়েকবার বৃদ্ধির জন্য সংসদে উত্থাপিত বিলের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র তীব্র নিন্দা নয়, ধিক্কার জানাচ্ছি। সংসদে এই আইন পাশ না করার জন্য আহবান জানাচ্ছি, অন্যথায় এই করোনাকালের মধ্যেও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

বুধবার (২৪ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২০০৩ সালে পাশ হওয়া বিদ্যমান আইনে কোন অর্থবছরে একবারের বেশী পরিবর্তন করা যাবে না, কিন্তু সংসদে উত্থাপিত আইন কার্যকর হলে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বছরে এক বা একাধিকবার বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডিজেল, পেট্রোলসহ জ্বালানীর দাম পরিবর্তন করতে পারবে। বছরে বারবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির বিল পাশ মানে গরীবদের সলিল সমাধি রচনা করা।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের আঘাতে দেশে যখন এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, মানুষকে মৃত্যু চিন্তা গ্রাস করেছে, চারিদিকে শুধু কর্মহীন মানুষের হাহাকার, ক্ষুধার্ত মানুষের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে তখন জনগণের অতি প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর বারবার মূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনগণকে ফৌত করা। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, সব ব্যবস্থাই করা আছে, তাহলে খাবারের সন্ধানে ও ক্ষুধার জালায় মানুষ সারি বেধে ঢাকা ছাড়ছে কেন? দেশের অর্থনীতি আত্মসাৎ করে স্বার্থলোলুপ ক্ষমতাসীনদের সদলবলে টাকা পাচার, বেগম পল্লী কিংবা সেকেন্ড হোম তৈরীর কাহিনী নিরেটভাবে গাঁথা। তাই ফাঁকা অর্থভান্ডার পূরণ করতে জনগণকে বুলডোজার দিয়ে পিষে এখন বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দাম বৃদ্ধি করে টাকা সংগ্রহ করা হবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, করোনার দুর্যোগকালেও কর্মহীন, আয়হীন মানুষের রক্ত শোষণ করে জনগণকে মৃত লাশ বানিয়ে এরা টাকা আদায় করছে। এমনিতেই বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলের উৎপীড়ণে কম আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত আর তার ওপর বছরে বারবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পাশ হলে এক নরকের মধ্যে ঠেলে দেয়া হবে দেশকে। দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণের কাছ থেকে টাকা চুষে নিতে ড্রাগের নেশার মতো পেয়ে বসেছে সরকারকে।

জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী আবারও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে অসত্য, অশোভন কথা বলেছেন। যা অসুস্থ মনের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বারবার জিয়ার কথা বলেন, জিয়া তখন সরকারি চাকরি করতেন, কোন মন্ত্রী-এমপি ছিলেন না। কিন্তু যারা খন্দকার মোশতাকের সরকারে মন্ত্রী এবং সেই সময়ের পার্লামেন্ট এমপি ছিলেন তাদের কথা একবারও উল্লেখ করেন না। কারণ তারা সবাই ‘৭৫ এর ১৫ আগস্টের আগে আপনার মরহুম পিতার নেতৃত্বে সরকারেও খন্দকার মোশতাকসহ তারা মন্ত্রী-এমপি ছিলেন। আর সে কারণেই কে খন্দকার মোশতাকের কেবিনেটে শপথ পাঠ করিয়েছেন সে কথা আপনি কখনোই উচ্চারণ করেন না। আপনি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রী টাঙ্গাইলের আব্দুল মান্নান কিভাবে আপনার অধীনেই রাজনীতি করেছেন এবং এমপি হয়েছেন? মালেক উকিল সাহেব স্পীকার ছিলেন এবং আপনার পরিবারের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের পর সেটিকে সাফাই গেয়ে বিদেশ থেকে মন্তব্যও করেছিলেন, অথচ সেই মালেক উকিলের গড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। সুতরাং অন্যকে দোষারোপ না করে নিজের লোকদের দিকে তাকালেই আপনি ইতিহাসের বহু মীর জাফর দেখতে পাবেন। জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও অপবাদ দেয়া মানেই মুক্তিযুদ্ধকেই অপমান করা।

এদিকে গতকাল জাতীয়তাবাদী যুবদল কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি মোঃ জাহিদুল ইসলাম বিপ্লবকে সাদা পোশাকে পুলিশ বাহিনী আলচারা নিজ অফিস থেকে তুলে নিয়ে মিথ্যা মামলায় কারাগারে প্রেরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রিজভী। তিনি এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাতার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ