Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

টেস্টিং কিট সঙ্কট

করোনা পরীক্ষায় চীনের ওপর নির্ভরশীলতা দায় চাপানো হচ্ছে আমদানিকারকদের ওপর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

নারায়ণগঞ্জ হলো করোনাভাইরাসের হটস্পট। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন নিয়ে তোড়জোর চললেও করোনা টেস্টিং কিটের সঙ্কটে সেই নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতালে কয়েকদিন দিন ধরে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ। নারায়ণগঞ্জের খানপুর তিনশ’ শয্যা হাসপাতালে গত ১৮ জুন থেকে পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা টেস্ট হচ্ছে না। এই কয়েক দিন থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার সম্ভাব্য রোগী হাসপাতালে করোনা টেস্ট করাতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। মানুষকে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে কিট না আসা পর্যন্ত আর কোনো টেস্টের সিরিয়াল দেয়া হবে না। কবে এই কিট পাওয়া যাবে তা বলা যাচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে করোনা পরীক্ষার কিটের জন্য বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. নাসিমা সুলাতানা বলেন, করোনা পরীক্ষার কিটের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরিই চীনের ওপর নির্ভরশীল। আমদানিকারকরা ঠিক সময় আমদানি করতে না পারায় কিট নিয়ে মাঝেমধ্যে ঝামেলা হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি যাতে কিটের কোনো সঙ্কট না হয়।

হাসপাতালের রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান ডা. শামসুদ্দোহা সরকার জানান, কিট শেষ হওয়ার ৭ দিন আগেই সিভিল সার্জনের মাধ্যমে কিটের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কিট পাওয়া যাচ্ছে না। কবে পাবো তাও জানানো হয়নি। তাই পরীক্ষা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। নারায়ণগঞ্জের এই চিত্র কার্যত সারাদেশে। হাজার হাজার মানুষ করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নমুনা দিতে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছেন। কিন্তু পরীক্ষা করাতে পারছেন না। কেউ নমুনা দিতে পারলেও পরীক্ষার রেজাল্টের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষার বাড়ানোর তাগিদ দিলেও করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার প্রায় সাড়ে তিন মাস পরও বাংলাদেশে এখন গড়ে ১৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। প্রতিদিন ৬২টি টেস্টিং সেন্টারের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে বর্তমানে চাহিদা আছে ২০ হাজার কিটের। পরীক্ষা বাড়ানো হলে প্রতিদিন কিটের চাহিদা কমপক্ষে এক লাখ।

পরীক্ষা কম হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল হয়ে উঠছে। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। আক্রান্তের এই ঊর্ধ্বগতিতে বিশেষজ্ঞরা বেশি বেশি টেস্টের ওপর জোর দিচ্ছেন। তখনই দেখা দিয়েছে নমুনা পরীক্ষার কিট সঙ্কট। বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে কিট সঙ্কট। এর আগে কিট সঙ্কটের বিষয়ে আভাস দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। তিনি জানিয়েছিলেন, আগের তুলনায় পরীক্ষার চাপ অনেক বেড়ে গেছে।

জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মনে করেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যই পরীক্ষা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা জানান, আরটিপিসিআর যন্ত্র দুই ধরনের। এক ধরনের মেশিনে লাল এবং অন্যটিতে হলুদ কিট ব্যবহার করা হয়। লাল কিটের মজুদ থাকলেও হলুদ কিটের সরবরাহ নেই। গত ১৫ দিন ধরে হলুদ কিটের আমদানি বন্ধ রয়েছে। এর দায় অবশ্য আমদানিকারকদের ঘাড়েই চাপাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিদফতর বলছে, আমদানিকারকরা হলুদ কিট না এনে সব লাল কিট এনেছেন। ফলে হলুদ কিট ব্যবহারকারী আরটিপিসিআর মেশিনগুলোতে পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।

অবশ্য গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, চাহিদা অনুযায়ী কিট পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ বর্তমান বিশ্বের সব দেশেই কিটের চাহিদা রয়েছে। তবে যা মজুদ আছে তাতে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।



 

Show all comments
  • pabel ২৪ জুন, ২০২০, ২:৪১ এএম says : 0
    এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়
    Total Reply(0) Reply
  • Rezbul Huque Plabon ২৪ জুন, ২০২০, ২:৪২ এএম says : 0
    গণস্বাস্থ্যকে তুচ্ছ ভাবার ফল প্রকাশিত হচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Parvez Hasan ২৪ জুন, ২০২০, ২:৪৩ এএম says : 0
    Jobor bepar nij desher kit bad diya chine er upor dai chapacche..
    Total Reply(0) Reply
  • Tania ২৪ জুন, ২০২০, ২:৪৩ এএম says : 0
    আমাদের নাকি সব ধরনের প্রস্তুতি আছে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ