Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

রাজধানীতে সক্রিয় অর্ধডজন চক্র

করোনাভাইরাসের ভুয়া সনদ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের প্যাডে দেয়া হচ্ছে করোনাভাইরাসের নেগেটিভ রিপোর্টের ভুয়া সনদ। কয়েকটি হাসপাতালের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ও ডাক্তারদের সম্পৃক্ততায় ৫-৭ হাজার টাকায় এ কাজ করছে একটি জালিয়াত চক্র।
রাজধানীতে এমন অর্ধডজন চক্র সক্রিয় থাকার তথ্য পেয়েছেন র‌্যাব ও পুলিশ কর্মকর্তারা। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রতারককে গ্রেফতারও করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কেউ বিদেশযাত্রা কিংবা কারো চাকরি বাঁচাতে বা অন্য প্রয়োজনে দরকার করোনাভাইরাসের নেগেটিভ রিপোর্ট। আবার অফিসে যোগদান করবেন না অথবা ভ্রমণে যাবেন কিংবা সরকারি ছুটি ও বিভিন্ন প্রকার সুযোগ-সুবিধার আশা করছেন এমন ব্যক্তিরা চান করোনা পজিটিভ রিপোর্ট। আর এর সুযোগ নিচ্ছে ওই প্রতারক চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এমন কয়েকটি ঘটনা ধরা পড়ার পর রাজধানীর মুগদা, ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতালের বহির্বিভাগের আশপাশে সাদাপোষাকে কাজ করছে গোয়েন্দা সদস্যরা। তারা রোগী বেশে হাসপাতালগুলোতে গিয়ে দালাল চক্র ও পেছনে থাকা হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছেন। স¤প্রতি টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাসের নেগেটিভ-পজেটিভ সনদ বিক্রি করা একটি চক্রের চার সদস্য র‌্যাবের জালে আটকা পড়েছেন।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফজল হক (৪০), শরিফ হোসেন (৩২), জামশেদ (৩০) ও লিয়াকত আলী (৪৩)। রিমান্ড শেষে গত শনিবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের অনেক ভুয়া সনদপত্র, দুটি কম্পিউটার, দুটি প্রিন্টার এবং দুটি স্ক্যানার উদ্ধার করা হয়।
র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রকিবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, গ্রেফতার হওয়ার জালিয়াত চক্রের সদস্যরা মুগদা হাসপাতাল থেকে দেয়া করোনা রোগীর রিপোর্টের কপি সংগ্রহ করে তা স্ক্যান করে সেখানে নাম বসিয়ে বিক্রি করে আসছিল। যাদের নেগেটিভ সনদ দরকার তাদের নেগেটিভ বা যাদের পজিটিভ সনদ দরকার তাদের তাই দিচ্ছিল টাকার বিনিময়ে। জালিয়াত চক্রটি দেড় শতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৫-৬ হাজার করে টাকা নিয়ে করোনার ভুয়া নেগেটিভ ও পজিটিভ সনদ দিয়েছে। আরো শতাধিক লোককে ভুয়া সনদ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরো পাঁচ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়েছে চক্রটি।
একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, করোনা পরীক্ষা করা হয় রাজধানীর এমন অধিকাংশ হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এক একটি চক্রে ৫-৭ জন করে প্রতারক রয়েছেন। হাসপাতালে স্যাম্পল দিতে আসা সাধারণ রোগীদের দ্রুত কাক্সিক্ষত সনদ দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে দেয় এসব চক্রের সদস্যরা। তবে দালাল চক্রের সঙ্গে হাসপাতালের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছেন বলে তথ্য রয়েছে। এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ