পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সবকিছুই উলট-পালট করে দিয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেকে, আয় কমে গেছে বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের। বসবাসের ব্যয় বহন করতে না পেরে রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন কেউ কেউ। এরই মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি পরিশোধের চাপে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকরা। নির্ধারিত সময়ে ফি পরিশোধ করতে না পারলে শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল, পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত না করাসহ দেয়া হচ্ছে নানা বার্তাও।
বন্ধ থাকার পরও এই মহামারীর মধ্যে টাকা পরিশোধ করার নির্দেশনা পেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তাদের। টিউশন ফি না পেলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে দু’পক্ষই। যদিও করোনাকালে টিউশন ফি আদায়ের জন্য চাপ না দিয়ে মানবিক হতে বলা হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজধানীর নামিদামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই মানছেনা এটি।
জানা যায়, রাজধানীসহ সারাদেশেই বিভিন্ন স্কুল থেকে মাসিক বেতন, সেশন ও উন্নয়ন ফি দ্রুত পরিশোধ করার জন্য তাগাদা দেয়া হচ্ছে। স্কুলে নোটিশ ঝোলানোর পাশাপাশি অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের মোবাইলে ফি পরিশোধের এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় ইংরেজি মাধ্যম প্লেপেন স্কুলের অভিভাবকরা টিউশন ফি ৫০ শতাংশ করার দাবিতে মানববন্ধন করেন।
রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধের তাগিদ দিয়েছে। ২৪ জুনের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করা হবে বলে মোবাইলে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
প্রিন্সিপাল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শওকত আলম বলেন, অনেক অভিভাবক ছয় মাস ধরে টিউশন ফি পরিশোধ করেন নি, এ অর্থ আদায়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে। যারা দিতে পারবেন না তাদের ভর্তি বাতিল করে নতুন ভর্তি করতে বলা হয়েছে। সরকারের কাছ থেকে রাজউক কোনো অর্থ পায় না, শিক্ষার্থীদের ভর্তি-টিউশন ফি দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও প্রতিষ্ঠান চালাতে হয়। যদি ফি না দেন তবে প্রতিষ্ঠান চলানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। তবে কারো সমস্যা হলে সেটি বিবেচনা করা হবে, সকলকে তো মাফ করা সম্ভব না।
সাউথপয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ গত এপ্রিল থেকেই টিউশন ফিসহ অন্যান্য বেতন পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক বলেন, আমার সন্তান সাউথ-পয়েন্ট স্কুলের মালিবাগ শাখার শিক্ষার্থী। স্কুল থেকে টিউশন ফি দেয়ার জন্য মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবকদের কাছেও একইভাবে পাঠানো হচ্ছে ম্যাসেজ। টিউশন ফি পরিশোধ করা না হলে অনলাইন ক্লাস থেকে বহিষ্কার ও পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হবে না বলে শ্রেণি শিক্ষকদের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রিন্সিপাল শাহান আরা বেগম বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক শিক্ষার্থী বকেয়া বেতন পরিশোধ করেন নি। তিন মাস পর পর টিউশন ফি পরিশোধ করার নিয়ম থাকলেও অনেকে চার থেকে পাঁচ মাসের বেতন পরিশোধ করেন নি। বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে নির্দেশনা জারি করা হয়। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বকেয়া চার মাসের বেতন মওকুফ করে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করতে অভিভাবকদের এসএমএস দেয়া হয়েছে।
এদিকে ৬ মাসের টিউশন ফি, বেতন মওকুফ করার দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সংগঠনটির সভাপতি মো. জিয়াউল কবির দুলু বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ৮০ ভাগ অভিভাবকের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে। শহর এলাকায় অভিভাবকগণ সংসারের ব্যয় বহন করতে হিমসিম খাচ্ছেন। এই অবস্থায় টিউশন ফি পরিশোধ করা সম্পূর্ণভাবে অসম্ভব।
চাপ সৃষ্টি করে টিউশন ফি আদায় না করার আহ্বান জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. গোলাম ফারুক চৌধুরী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অভিভাবকদের উভয়ে সহনীয় আচরণ করতে হবে। টিউশন ফি দিয়ে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা হয়। তাই একে অপরের ওপর চাপ দিয়ে কিছু আদায় না করে মানবিক বিবেচনায় কিছু ছাড় দিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।