Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাঙালির প্রতিটি কল্যাণকর অর্জনে আ.লীগের ভূমিকা রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২০, ৪:৪০ পিএম | আপডেট : ৪:৪১ পিএম, ২৩ জুন, ২০২০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি জাতির প্রতিটি মহৎ, শুভ ও কল্যাণকর অর্জনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। আওয়ামী লী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের জন্য কথা বলে গেছে, মানুষের জন্য সংগ্রাম কওে গেছে, মানুষের জন্য কাজ করছে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় এ তিনি এ কথা বলেন। সকাল ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ৮ম অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপনা করা হয়েছে। এরপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনির্ধারিত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে এই দিনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের প্রতিজ্ঞা এদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবো। মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাবো। আজকের দিনে জাতির পিতার কাছে এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
তিনি বলেন, জাতির পিতা শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার যে আকাঙ্ক্ষা তা আমাদের পূরণ করতে হবে। তার অস্তিত্ব আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আছে। এক সময় তাকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু মুছে ফেলা যায়নি। সত্যকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের জন্য কাজ করে। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশের মানুষ কিছু পেয়েছে।
করোনাভাইরাস সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে দুঃখ কষ্ট মানুষের আছে। আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের ছাত্রলীগ, কৃষক লীগসহ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মানুষের পাশে আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রন্তরে সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটিয়ে বাংলার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, সেই স্বাধীনতার সূর্যকে উদিত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, পলাশীর প্রান্তরে স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেই সূর্য উদিত হয়েছে ১৯৭১ সালে। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে জীবন দেওয়া নেতা-কর্মীদের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতা-কর্মী যারা জীবন দিয়েছে আমি তাদের কথা স্মরণ করি। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মুজিববর্ষ উদযাপন কর্মসূচি সীমিত করার মতো আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সীমিত করে অনলাইনে করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সীমিত আকারে আমরা এটি উদযাপন করছি।
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বলেন, ২৩ জুন ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি এবং শামসুল হক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তখনকার তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক, যদিও তিনি তখন জেলে ছিলেন। জেলে থাকা অবস্থায় তাকে যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ভবিষ্যতেও জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ, উন্নত ও আধুনিক সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সফলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অপশাসন, দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে পুনরায় বিজয় অর্জন করে। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন কওে দেশ ও জাতির কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ১১ বছরে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। স্বাস্থ্যসেবা এখন মানুষের দোরগোড়ায়। মানুষ বিনামূল্যে ৩০ ধরণের ওষুধ পাচ্ছেন। শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার কমেছে, গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছওে পৌঁছেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তুক বিতরণ করা হচ্ছে। সাক্ষরতার হার ৭৩ ভাগের উপরে উন্নীত হয়েছে। ৯৬ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, ২৮টির অধিক হাই-টেক পার্ক, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২, গভীর সমুদ্র বন্দর, পদ্মাসেতু, এলএনজি টার্মিনাল, এক্সপ্রেসওয়ে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করেছি। ওয়াদা অনুযায়ী য্দ্ধুাপরাধীদের বিচার কার্য পরিচালনা করছি। জঙ্গিবাদ ও হরতালের অবসান ঘটিয়ে দেশকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমরা ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করবেন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে পারব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, গণজমায়েত না করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৩ জুন, ২০২০, ১০:১৬ পিএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এখানে যেসব বক্তব্য রেখেছেন সেসব বক্তব্য কঠিন সত্য কথা এটা একবাক্যে বলা যায়। সাথে সাথে আমি বলতে চাই আজকের দিনটি প্রকৃতই আমাদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রন্তরে এই দিনে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটিয়ে বাংলার স্বাধীনতার যে সূর্য অস্তমিত হয়েছিল, সেই সূর্য উদিত হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। আওয়ামী লীগের নেত্রী হাসিনা দলের অগণিত নেতা-কর্মী যারা জীবন দিয়েছেন তাদের কথা স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন। আমি বিশ্বাস করি মহান আল্লাহ্‌ দেশের প্রধান প্রশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার এই দোয়া কবুল করবেন ইনশ’আল্লাহ। আর এই দিনেই জন্ম হয়েছিল আওয়ামী লীগের (২৩ জুন ১৯৪৯ সালে), মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে। আর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন শামসুল হক। নেত্রী হাসিনার বাবা সেসময়ের তরুণ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়েছিলেন সদ্য জন্মনেয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানুষ বিনামূল্যে ৩০ ধরণের ওষুধ পাচ্ছেন, শিশু ও মাতৃ-মৃত্যুর হার কমেছে, গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছওে পৌঁছেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে এর বাহিরেও প্রচুর উন্নয়ন মূলক কাজ নেত্রী হাসিনা করেছেন। এতসব করে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন তিনি প্রকৃতই “বাঙালী মাতা” তাই বাঙালীদেরকে তিনি তার আচলের নিচে নিয়ে শান্তি দেয়ার প্রচেষ্টায় ব্রত। এখন একটা জিনিষ নেত্রী হাসিনাকে করতে হবে সেটা হচ্ছে দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করা। এটা কোন সহজ কাজ নয়। দুর্নীতি সম্পর্কে জানা থাকলেও সেটাকে সহজেই বাস্তব রূপ দেয়া খুবই কঠিন কাজ। আর নেত্রী হাসিনা এখন সেই কঠিন কাজ সমাধান করার জন্যেই হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে যাচ্ছেন। দুর্নীতিকে সমূলে ধ্বংস করার এটাই হচ্ছে প্রকৃত পন্থা। সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ্‌র দরবারে মোনাজাত করছি আল্লাহ্‌ যেন নেত্রী হাসিনাকে তার (হাসিনার) স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার যোগ্যতা দান করেন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ