Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অস্তিত্ব সঙ্কটে মিঠাপানির মাছ

রেণু আহরণের নামে পোনা ধ্বংস চলছে বর্ষায় মা মাছের ডিম ছাড়া বাধাগ্রস্ত

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০২০, ১২:০১ এএম

কোস্টগার্ড র‌্যাব পুলিশ ও মৎস্য অফিসের অভিযানেও থেমে নেই সুন্দরবন ও উপক‚লীয়াঞ্চলের নদ-নদীতে রেনু আহরণ। ফলে বর্ষা মৌসুমে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছের প্রজনন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর মিঠাপানির মাছ উৎপাদনেও ধস নেমেছে।

ন্যাচারাল ফিস বলে খ্যাত খুলনাঞ্চলের সাদা মাছের ভান্ডারে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে কার্প জাতীয় মাছ থাকার কারণে আমিষের এই উৎপাদন ভারসাম্য রক্ষা করছে। খাল-বিলে মনুষ্য সৃষ্ট কৃত্রিম সঙ্কটে দেশিয় মাছের বংশ বিস্তার আশানুরূপ হচ্ছে না।

মূলত এ অঞ্চলের খাল-বিল-নদীতে এপ্রিল মাস থেকে মাছ ডিম্ব নিঃস্বরণ শুরু করে। কিন্তু নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের ব্যাপকতায় সর্বত্র রেনু ধরা পড়ছে। ফলে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। একটি রেণু আহরণ করতে গিয়ে হাজার প্রজাতির মাছ মারা পড়ছে। জালে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি ডিম। যে কারণে দেশিয় মাছের বংশ এবং প্রকৃত জাত রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। এর সাথে রয়েছে প্রাকৃতিক জলাশয় সঙ্কট। মানুষ তাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন জলাশয়গুলো বালু ভরাট করে এ সঙ্কট সৃষ্টি করছে। তাছাড়া সমন্বিত মৎস্য ও ধান চাষের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মিঠাপানির মাছের প্রজাতি ধ্বংস হচ্ছে।
এতে পরিবেশ ও মৎস্য বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, খুলনাঞ্চলে ৫৫ প্রজাতির মিঠাপানির দেশিয় মাছের অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। সুস্বাদু দেশিয় মাছ এখন আর তেমন মিলছে না। বাজারে যদি বিদেশি ক্রস ও কার্প জাতীয় মাছ না থাকতো তাহলে আমিষের চাহিদা মিটানো সম্ভবপর ছিলো না।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে কয়েক দশক পূর্বেও এ অঞ্চলে আড়াইশ’ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ ছিল। কিন্তু মনুষ্য সৃষ্ট নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এসব মাছের অনেক প্রজাতি এখন চোখে পড়ে না। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমের সময় নদী-খাল-বিল থেকে কারেন্ট জালের মাধ্যমে ব্যাপকহারে ডিমওয়ালা মাছ ধরার কারণে দেশিয় মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কালের গর্ভে মাছে-ভাতে বাঙালির ঐতিহ্য আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।

মৎস অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দুই দশক পূর্বেও খুলনার রূপসা, তেরখাদা, দিঘলিয়া, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, পাইকগাছা, কয়রা ও ফুলতলা এবং খুলনা সন্নিকটস্থ উপক‚লীয় অঞ্চলে প্রায় আড়াইশ’ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ পাওয়া যেত। যার মধ্যে শোল, টাকি, কৈ, গজাল, টেংরা, চিতল, শিং, খয়রা, বাটা, পাইশ্যা, কালিবাউশ, বাইল্যা, কাজলি, সরপুটি, পাবদা, খৈলশা, ডগরি, জাবা, ভোলা, বাগাড়, বাশপাতা, ভাঙান, কাইন, খল­া, দেশি পুটি, গোদা চিংড়িসহ ৫৫ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্তিত্ব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ