বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ইনকিলাব ডেস্ক : রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহত ৯ জনের একজন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়ার সাবেক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে সাব্বিরুল হক কণিক (২২) বলে ধারণা করছেন তার স্বজনেরা।
খবর পেয়ে আনোয়ারা থানা পুলিশের একটি দল রাত ১২টার দিকে কণিকদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে খবর নিয়েছে।
অভিযানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক জঙ্গি হাসান নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮জনের নাম জানিয়েছে। তার বর্ণনায় সাব্বিরুল হক কণিকের নাম সাব্বির বলে উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া পুলিশও নিহতদের ছবি প্রকাশ করে তাদের পরিচয় জানতে চেয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ওসি আবদুল লতিফ বলেন, সাব্বিরের পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তার বাবা-মা ধারণা করছে এটা সাব্বিরের লাশ হতে পারে। তবে, ময়না তদন্তের পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
জানা যায়, আনোয়ারার বরুমচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক চৌধুরী রাশেদের ছেলে কণিক চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিল। সন্তান বিপথগামী হয়েছেন বুঝতে পেরে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরিও করা হয়নি।
কণিকের বাবা আজিজুল হক এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। তিনি সপরিবারে চট্টগ্রাম শহরে বাস করেন। চাকরি করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে। তার বড় ভাই মোজাম্মেল হক চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা। আজিজুল হকের সন্তান এভাবে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়বে, এলাকার মানুষের কাছে তা অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল।
আজিজুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। এমন পরিবারের সন্তান হয়ে কণিকের বিপথগামী হওয়া বড়ই কষ্টের। ভয়, শঙ্কা আর লজ্জায় এ ব্যাপারে এতদিন জিডি করেননি বলে জানান তিনি।
পারিবারিক সূত্র জানায়, কণিক আইআইইউসির ইকনোমিক অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। গোল্ডেন জিপিএ পেয়ে সরকারি মুসলিম হাই স্কুল থেকে ২০১০ সালে এসএসসি এবং ২০১২ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
জানা যায়, তাবলিগের কথা বলে মাঝে মাঝে সপ্তাহ-দশদিনের জন্য উধাও হয়ে যেতেন। বছরখানেক আগে একবার তিন মাসের জন্য নিরুদ্দেশ থাকার পর বাসায় ফিরে আসেন। সর্বশেষ চার মাস আগে রাউজানে এক বিয়েতে যাওয়ার কথা বলে বাবার কাছ থেকে পাঁচশ টাকা নিয়ে বের হন। সেই থেকে কণিক নিখোঁজ। দীর্ঘদিন কোনো খোঁজ না থাকায় সন্তানের আশা এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছিলেন বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা। সন্তান নিজে বিপথগামী হয়েছেন বুঝতে পেরে নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি করারও প্রয়োজন মনে করেননি তারা।
সম্প্রতি ‘আইডি নাম্বার দুই’ নামে ফেইসবুকের একটি ভুয়া আইডি থেকে তার কিছু তৎপরতা স্বজনদের কাছে ধরা পড়ে। ওই আইডি থেকে জানান, তিনি বিয়ে করেছেন। কিন্তু কোথায় আছেন, কেমন আছেন কিছুই বলেননি।
জানা যায়, কণিক ছোটবেলায় ডানপিটে স্বভাবের ছিলেন। তার এক আত্মীয় জানান, ২০০৮ সালে নাইনে পড়ার সময় ‘আমগো সাব্বির দা’ নামে একটি ফেইসবুক আইডি খোলে ব্যবহার করে। গত দুই বছর ধরে সেটি ইনেক্টিভ করে রাখে। সম্প্রতি ‘আইডি নাম্বার দুই’ থেকে তার তৎপরতা দেখা যায়।
এই আইডিটি ছিল কোরআন-হাদিসের আলোকে নানা স্ট্যাটাসে ভরা।
সর্বশেষ এটির ব্যবহার হয়েছিল ২০১৪ সালে। এই আইডিতে অস্ত্র তাক করা এক জঙ্গির ছবি প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে। আছে পোশাকধারী কিছু মানুষের লাশ বহন করা এবং উটের দৌড়ের ছবি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।