বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। টানা ১০দিন ধরে স্থায়ী বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। প্রবল স্রোতের টানে ভেসে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, গাছপালা ও মূল্যবান সম্পদ। পানিবন্দী মানুষগুলো পড়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে। বন্যায় পাকা ও কাচা সড়ক ডুবে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ধরলা নদীর পানি ১০৬ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৯ উপজেলার ৫৫ টি ইউনিয়নের ৭১২ গ্রাম এখন পানির নীচে। এতে পানিবন্দী হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬টি পরিবারের ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮৩ জন মানুষ। একই সময় নদী ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ পরিবার।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রে ১০, ধরলায় ৬ দুধকুমারে ১২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।
উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী জানান, কাজিরচরে তিস্তার নদীর একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৬০ মিটার অংশ ভেঙে যাওয়ায় ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আমন ও বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নাগেশ্বরীর নুন খাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শাহজামাল জানান, সারিসুরি গ্রামে একটি বেড়ি বাঁধ ভেঙে সংলগ্ন ৫-৬টি গ্রামে পানি ঢুকেছে। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, যাত্রাপুর বাজার সংলগ্ন একটি বেড়ি বাঁধ ভেঙে শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি ভেসে গেছে। ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এজাহার আলী জানান, ধরলা নদীর পানির প্রবল চাপে রামপ্রসাদ গ্রামে একটি রাস্তা ভেঙে ৭-৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে রোপা আমন ও বীজতলা।
যাত্রাপুর ইউপি সদস্য রিপন মিয়া জানান, বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়ক, কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়কের আরডিআরএস অফিস সংলগ্ন, কুড়িগ্রাম-কালীগঞ্জ সড়কের মন্নেয়ারপাড় এলাকা,কুড়িগ্রাম ঘোগাদহ পাকা রাস্তায় পানি ওঠায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কুড়িগ্রাম-যাত্রাপুর সড়কে ৪ দিন ধরে গরু ও পণ্যবাহী ট্রাকসহ সকল ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মো: মকবুল হোসেন জানান, আমন, বীজতলা, সবজিসহ প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ধরণের ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার কৃষক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনামুল হক জানান, বন্যা কবলিত স্কুলের মধ্যে ১৮৮টিতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব জানান, এ পর্যন্ত ৫০০ মে. টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বিতরণ হয়েছে ৪০০ মে.টন, প্রাপ্ত ৮ লাখ টাকার মধ্যে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। শুকনো খাবার এক হাজার প্যাকেট বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।