Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সর্বত্রই ভোগান্তি রোগীদের

পরীক্ষা বাড়ানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসে প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো হচ্ছে না। দেশের মাত্র ৬১টি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ২১৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৮৬২ জন আক্রান্ত পাওয়া যায়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার প্রায় ২৩ (২২ দশমিক ৪৪) শতাংশ। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের একশ’ দিন পার হয়েছে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশে দীর্ঘ সময়ে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে মাত্র পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার ৭১৭টি। এতে শনাক্ত হয় ৯৪ হাজার ৪৮১ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নমুনা পরীক্ষা আরো বাড়াতে হবে। যতই পরীক্ষা বাড়ানো হবে ততই সামাজিক ট্রান্সমিশনের আশঙ্কা কমে যাবে। রাজধানী ছাড়াও ৮টি বিভাগীয় শহর, ১১টি সিটি কর্পোরেশন, ৬৪ জেলা শহর, সাড়ে চারশ’র বেশি উপজেলা শহর ছাড়াও রয়েছে কয়েকশ’ পৌরসভা। সব মিলে এক হাজার কেন্দ্রে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। অথচ এখন পর্যন্ত মাত্র ৬১টি কেন্দ্রে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে।

তবে ব্র্যাক ২২টি ও জেকেজে নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ৭টি বুথে নমুনা সংগ্রহ করছে। তাদের সংগ্রহ করা নমুনার ফলাফল পেতে অনেক বিলম্ব হচ্ছে। এ ছাড়াও জেলা পর্যায়ের অনেক নমুনার পরীক্ষা ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সংক্রমণ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহে চলছে অব্যবস্থাপনা। মানুষকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। কখনো ফোন করে হেল্পলাইনে কাউকে পাওয়া যায় না, আর ফোন ধরলেও নমুনা সংগ্রহের বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য দেন না আইইডিসিআর। আবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও নমুন দেয়া হলেও ফলাফল পেতেও লেগে যায় অনেক সময়।

লকডাউন কার্যকর না হওয়া এবং সামাজিক দূরত্ব না মানায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। এমন পরিস্থিতিতে সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। কোথায় নমুনা পরীক্ষা করাবেন তা না জানায় অনেকে পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েও দিনের পর দিন বাসায় বসে থাকছেন। এতে সার্বিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়ে উঠছে। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি নমুনা পরীক্ষাগার ঘুরে দেখা গেছে, করোনা পরীক্ষার জন্য মানুষের দীর্ঘ লাইন। উপসর্গ নিয়ে আসা ব্যক্তিরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা টেস্টের জন্য অপেক্ষা করছেন। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর মেঝেতেই বসে পড়ছেন। এছাড়াও পরীক্ষার জন্য টাকা জমা দেয়া, রসিদ সংগ্রহে দীর্ঘ লাইন ধরতে হচ্ছে।

রাজধানীর আজিমপুর থেকে পরীক্ষা করতে আসা শহীদুল হক বলেন, প্রায় তিন ঘণ্টা এখানে দাঁড়িয়ে। পরীক্ষা করাতে পারবো কিনা এখনো নিশ্চিত নই। পরীক্ষা করাতে আসা বেশিরভাগ ব্যক্তিরা জানান, খুব সকালে এসেও অনেকে পরীক্ষা করাতে না পেরে চলে যাচ্ছেন। হারুণ নামের একজন জানালেন, তিনি নমুনা দিয়েছেন ৪ দিন আগে। এখনও পর্যন্ত জানতে পারেননি তিনি করোনা পজেটিভ না নেগেটিভ।

গত দুই দিনে দেশের বেসরকারি টিভিগুলোতে প্রচারিত বিভিন্ন টকশোতে কমপক্ষ্যে ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ও পরীক্ষা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কমপক্ষে প্রতিদিন দুই লাখ থেকে ৫ লাখ করে নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, ডা. মোসতাক হোসেন, ডা. আয়েশা আক্তারসহ অধিকাংশ চিকিৎসক পরীক্ষা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। তাদের কথা হলো চলতি মাস করোনা সংক্রমণের জন্য খুবই ভয়াবহ। এ মাসে পরীক্ষা না বাড়ালে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ