Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বোয়ালমারীতে কিস্তি আদায় নিয়ে হাতাহাতির ঘটনায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের কর্মীর

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২০, ১২:৩১ পিএম

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কলারন গ্রামে জোরপুর্বক ঋণের কিস্তির টাকা আদায় নিয়ে আদায়কারীদের সাথে ঋণগ্রহীতা ও তাদের স্বজনদের সাথে বাকবিতন্ডা এবং হাতাহাতির জের ধরে সদস্যদের স্বজনদের নামে হত্যা চেষ্টার মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে। ও এঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ঋণগ্রহীতা ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত উপজেলা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (এসএফডিএফ) এর মাঠ কর্মী পলাশ কুমার সাহা গত ০১ জুন কলারন গ্রামে গিয়ে কিস্তি প্রদানের জন্যে চাপ প্রয়োগ করেন। চাপে পড়ে সাধ্য অনুযায়ী কিস্তির টাকা পরিশোধ করেন তারা। পরে ০৮ জুন পুনরায় কিস্তির টাকা আদায় করতে কলারণ গ্রামের সদস্য অনিতা রানীর বাড়ীতে যায়। এসময় অনিতা রানী ঘরে না থাকায় তাকে উদ্ধেশ্য করে অনৈতিক মন্তব্য করতে থাকেন পলাশ কুমার সাহা। অনিতার বাড়ীর ভাড়াটিয়া সুদীপ কুমার কিস্তি আদায়কারীর বাজে মন্তব্যের প্রতিবাদ জানালে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়।

অনিতা রানী জানান, ঋণ আদায়কারীর হাত থেকে বাঁচতে সুদীপ ঘরের মধ্যে আশ্রয় নিলেও মাঠকর্মী পলাশ দরজায় লাথি মেরে ভাঙ্গতে চেষ্টা করেন। দরজা ভাঙ্গতে ব্যর্থ হয়ে তিনি একই অফিসের ব্যবস্থাপক হাসানুর রহমান নয়নকে মোবাইলে ফোন করে ডেকে এনে ফের বাক বিতন্ডা ও হামরার চেষ্টা চালায়। এসময় প্রতিবেশী উত্তম কুমার এগিয়ে তাদের মধ্যে ফের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

গত ১০ জুন এ ঘটনায় ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (এসএফডিএফ) এর মাঠ কর্মী পলাশ কুমার সাহা বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় সরকারী কাজে বাঁধা প্রদানসহ খুন করার উদ্ধেশ্যে গুরুত্বর জখম, চুরি ও হুকুম প্রদানের অপরাধের অভিযোগ দায়ের করেন, যা পুলিশ এজাহারভুক্ত করেন। অভিযোগপত্রে সুদীপ কুমার ও উত্তম কুমার ছাড়াও আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামী করাহয়।

বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুর রহমান জানান, এঘটনায় সুদীপ কুমারকে আটক করা হয়েছে। তিনি জানান, বাদী অভিযোগে কিস্তি আদায়ের বিষয়টি উল্লেখ করেননি, তাই সে বিষয়টি নজরে আসেনি।

এদিকে এজাহারে রক্তাক্ত জখম প্রাপ্তের কথা উল্লেখ করা হলেও বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাঊম জানান- "যতদূর মনে পড়ে খুব সামান্য আঘাত ছিল। সম্ভাবত মুখে চড়থাপ্পর ও নখের আচড় ছিল। বড় ধরনের কোন ইনজুরি হয়নি।"

এ ব্যপারে মুঠোফোনে পলাশ সাহা ও হাসানুর রহমানের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে, কিস্তি উত্তোলনের বিষয় অস্বীকার করেন তারা এবং গ্রাহকদের করোনাকালিন খোঁজখবর নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন দাবি করে হাসানুর রহমান নয়ন বলেন, "উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে মামলা করা হয়েছে। এ বিষয়ে তার সাথে কথা বলুন।"

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, ‘এসএফডিএফ’ এর দু’জন কর্মকর্তা আমার নিকট অভিযোগ দিতে এসেছিল, আমি তাদের আইনের আশ্রয় নিতে বলেছি। তবে কিস্তি উত্তোলনের ব্যাপারটা আমার জানা নেই।"

এদিকে এঘটনার পর থেকে পুলিশি হয়রানির আতংকে ভুগছেন স্থানীয়রা। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করার দাবী তাদের।

উল্লেখ্য, স্থানীয় ঋণ গ্রহীতাদের দাবী করোনার কারণে তাদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকায় অতি কষ্টে দিনতিপাত করতে হচ্ছে তাদের তাই কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে মাঠকর্মী পলাশ কুমার ঋণের কিষিÍ দিতে ০১ জুন থেকে চাপ প্রদান করে আসছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ