Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাড়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকার সম্পুরক বাজেট পাস

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

সরকারের যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তাদের মূল বরাদ্দের থেকে বেশি খরচ করেছে তার অনুমোদন নিতে বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৪৬ হাজার ৫১৬ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট সংসদে পাস হয়েছে। 

এরআগে সম্পূরক বাজেটের ওপর সরকারি ও বিরোদী দলের সদস্যরা আলোচনা করেন। তারা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেন এবং অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রস্তাবে আপত্তি জানান। গতকাল স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২০ পাসের মধ্য দিয়ে সম্পূরক বাজেট পাস হয়। এর আগে বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগামী ৩০ জুন সমাপ্য অর্থবছরে কার্যাদি নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে মঞ্জুরিকৃত অর্থের অধিক অর্থ প্রদান ও নির্দিষ্টকরণের কর্তৃত্ব প্রদানের জন্য এ সম্পূরক বিল আনা হয়।
সম্পূরক বাজেটের ওপর বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা ১৬৭টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। ওই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির পীর হাবিবুর রহমান, রওশন আরা মান্নান ও ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং বিএনপির মো. হারুনুর রশীদ। তবে সেগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এরপর আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন স্পিকার।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ২৪টি মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূরক বাজেটটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সমাজকল্যাণ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এই দুটি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের পক্ষে ৫টি মঞ্জুরি দাবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার উত্থাপিত দাবিগুলো ছিল- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপষিদ বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
সংসদে উত্থাপিত বিদায়ী অর্থবছরের সম্পূরক আর্থিক বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে ৬২টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের অনুক‚লে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সংশোধিত বাজেটে ২৬টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ৪৬ হাজার ৫১৬ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ১৮ হাজার ৩৫৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা হ্রাস পেয়েছে। সার্বিকভাবে ২১ হাজার ৬১৩ কোটি টাকা হ্রাস পেয়ে সংশোধিত বরাদ্দ নিট দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ এক হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। সম্পূরক বাজেটে অর্থ বিভাগ সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ৩৫৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে এবং সবচেয়ে কম এক কোটি ৫৪ লাখ কম বরাদ্দ পেয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। সংশোধনে তা ৫ লাখ ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতি, কোন ছাড় নয় : ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত এক হাজার ২৩২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বরাদ্দের বিরোধীতা করে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা বলেন, করোনাকালীন সমন্বিত একটি তালিকা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়। জনগণের আমানত এই দুর্যোগে প্রকৃত মানুষের পাওয়া উচিত।
জবাবে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, প্রায় ৫ কোটি পরিবারকে সাহায্যের তালিকায় এনেছি। আর ত্রাণ বিতরণে কোন ধরণের দুর্নীতি না হয় সেজন্য ডাটাবেজ তৈরি করে বিতরণ করা হচ্ছে। ত্রাণ নিয়ে নয়-ছয়ের সঙ্গে জড়িত কাউকেই প্রধানমন্ত্রী ছাড় দেননি। গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখী করা হয়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের বিরোধিতা : সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত ১২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে আরও অধিক স্বচ্ছতা আনা উচিত। বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যে মানুষ চরম কষ্টে রয়েছেন, কিন্তু বয়স্ক-বিধবা-স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা প্রদানেও স্বজনপ্রীতি ও বৈষম্য করা হচ্ছে। প্রবাস থেকে চাকরি হারিয়ে অনেকে ফেরত আসবেন, কিন্তু এ মন্ত্রণালয় থেকে তাদের পুনর্বাসনে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভাতা প্রদান করতে সক্ষম হবো।
সংসদে বিল উত্থাপনের আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বৈশ্বিক করোনার কারণে রাজস্ব আয়-ব্যয় ও জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা পুননির্ধারিত করতে হয়েছে। স্বাস্থ্য-সুরক্ষা বিভাগ, ত্রাণ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ দিতে হয়েছে। তাই সম্পূরক বাজেট পাস করতে হবে। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ