Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

উপসর্গে ১৫ জনের মৃত্যু

কোয়ারেন্টিনে ৬১ হাজার ৮১৪

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনার উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়েছে সারা দেশে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭১২ জনকে। ছাড় পেয়েছেন ২৯৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৯ হাজার ৭৫৮ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৭৯২ জনকে। ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৭৬৩ জন। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২০ হাজার ৪৩৬ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬১ হাজার ৮১৪ জন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকসহ আরো দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল গতকাল মা ও শিশু হাসপাতালে মারা যান ডা. সাদেকুর রহমান। চট্টগ্রামের জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসনদ হাসপাতালের এ চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। শনিবার রাত ১২টায় রাউজান স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে মারা যান মো এরশাদ (৩০) নামে এক রোগী। তার করোনা উপসর্গ ছিলো।
যশোর ব্যুরো জানায়, যশোর জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গতকাল খুলনা ও যবিপ্রবি ল্যাবের রিপোর্টে নতুন আরো ১৪জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৬। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. আবু শাহীন এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ইদানীং করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যশোরে এমপি, ডাক্তার, পুলিশসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ করেনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রথমদিকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল একেবারেই কম। অভিযোগ, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঢিলেঢালা হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল আকার ধারন করছে। বরিশাল মহানগরীতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো একজনের মৃত্যুসহ ১০ জন আক্রান্ত হয়েছে। বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার ছুঁই ছুঁই চলেছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। তবে দ্বীপজেলা ভোলাতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে বরগুনা ও পটুয়াখালীতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় ভোলাতে ২৬জন, বরগুনাতে ১২ জন ও পটুয়াখালীতে আরো ১০ জন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয়েছে। সরকারী হিসেবে এ নিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৪৫২ বলে জানা গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলে ৫ জন সহ এ পর্যন্ত মোট ৩৭৭ জন করোনা সংক্রমিত রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের সুপারিশ মেনে বরিশাল মহানগরী লকডাউন বা অন্য কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এখনো অনুপস্থিত।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহী অঞ্চলের পাঁচ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ দিন কেউ মারা যাননি। অপর তিন জেলায় এদিনে কোনো সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। গতকাল রোববার দুপুরে এক প্রতিবেদনে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তদের মধ্যে রাজশাহীর ৩ জন, নওগাঁয় ১৩, জয়পুরহাট ১৬ জন, বগুড়ার ২৭ জন ও পাবনায় ২ জন। তবে বিভাগের অপর তিন জেলা নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগি শনাক্ত হয়নি।
পরিচালক জানান, রাজশাহী বিভাগে এ পর্যন্ত দুই হাজার ২৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ মধ্যে সর্বোচ্চ বগুড়ায় এক হাজার ১৯১ জন আক্রান্ত। এছাড়াও রাজশাহীতে ১২৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৯ জন, নওগাঁয় ১৯৮ জন, নাটোরে ৮১ জন, জয়পুরহাটে ২৩০ জন, সিরাজগঞ্জে ১৭৫ জন ও পাবনায় ১৯০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত বিভাগের আট জেলার মধ্যে ছয় জেলায় মৃতের সংখ্যা ৩০ জন। এখনো জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোন করোনা আক্রান্ত রোগি মারা যায়নি। এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে তিনজন, নওগাঁয় তিনজন, নাটোরে একজন, বগুড়ায় ১৫ জন, সিরাজগঞ্জে তিনজন ও পাবনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন আরও ৬ জন। এ নিয়ে বিভাগে সুস্থ্য হয়েছেন ৪৮১ জন করোনা আক্রান্ত রোগি। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৭ জন, নওগাঁয় ১২০ জন, নাটোরে ৪৭ জন, জয়পুরহাট ১১৭ জন, বগুড়ায় ৯০ জন, সিরাজগঞ্জ ১৬ জন ও পাবনায় ১১ জন।
এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে আরও পাঁচজনের নমুনা করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, রোববার এ ল্যাবে ৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে পাঁচ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে বলে জানান। এছাড়াও মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১১ জনের নমুনায় পজিটিভ এসেছে। যাদের সবার বাড়ি পাবনায়।
খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় করোনা শনাক্ত হলেও জ্বর-সর্দি, গলা ব্যথা বা শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নেই অসংখ্য রোগীর। এ ধরনের রোগীর বাড়িতে বসে চিকিৎসা দেওয়ার কথা থাকলেও অনুরোধ বা চাপের কারণে তাদের করোনা হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে। এতে উপসর্গ থাকা জরুরি রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেই সঙ্গে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
জানা যায়, খুলনা করোনা ডেডিকেটেট হাসপাতালে বর্তমানে রোগী ভর্তি আছে ৫৯ জন। এদের মধ্যে মাত্র ৬ জনকে আইসিইউওতে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। বাকি রোগীর মধ্যে ৫০ জনের শরীরেই কোন ধরনের উপসর্গ নেই।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, যাদের শরীরে কোন উপসর্গ নেই তাদেরকে শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দিয়ে রাখা হয়েছে। এদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া যেতো। মূলত: করোনা আক্রান্ত যাদের গলা ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট আছে, তাদেরই হাসপাতালে ভর্তি করার কথা। কিন্তু উপসর্গবিহিন রোগী ভর্তি হওয়ায় হাসপাতালের ধারন ক্ষমতা কমে আসছে।
খুলনা ডেডিকেটেট হাসপাতালের সমন্বয়ক ডা. ফরিদ আহম্মেদ বলেন, হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি হলে তাদের জন্য বাড়তি জনবলের প্রয়োজন হয়। চিকিৎসক-নার্সদের বাড়তি শ্রম দিতে হয়। কিন্তু ডেডিকেটেট হাসপাতালে এখন যারা ভর্তি আছেন, তাদের অনেকেরই কোন চিকিৎসা লাগছে না। হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর থেকে উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যাই বেশি।
জানা যায়, করোনা রোগী বাড়তে থাকায় তাদের চিকিৎসায় খুলনা সদর হাপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হলে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পাঁচটি ডায়ালাইসিস শয্যা ব্যবহার করা হবে। খুলনা জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, খুলনায় করোনার উপসর্গ নিয়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে গতকাল খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের করোনা সাসপেক্টেড আইসোলেশন ওয়ার্ডে আবুল হোসেন (৭০) নামের পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এক এসআই ও গত শনিবার রাতে মনোয়ারা বেগম (৪৫) নামে এক নারী। খুমেক হাসপাতালের ফ্লু কর্ণারের ফোকাল পার্সন (আরএমও) ডা. মিজানুর রহমান বলেন, জ্বর ও শাসকষ্ট নিয়ে রোববার বেলা ৩টার ৪০ মিনিটের দিকে আবুল হোসেনকে হাসপাতালের আইসোলেশনে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আবুল হোসেন মহানগরীর খালিশপুর হাউজিংয়ের মৃত হাতেম শেখের ছেলে। অপরদিকে, মৃত মনোয়ারা বেগম খুলনা মহানগরীর বাগমারা এলাকার মো. ফজর আলীর স্ত্রী। স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুরে করোনা উপসর্গে আরো ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৩জন ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৩জন। গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১জন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে মৃত্যু হয়। চাঁদপুরে সদর বালিয়া ইউনিয়নের সচিব মো. মুনসুর আহমেদ জানান, ইউনিয়নের চাপিলা গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে বিল্লাল হোসেনের জর, সর্দি, কাশি ছিল। পরে প্রচন্ড শ্বাস কষ্টের কারণে তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসেলশনে ভর্তি করা হলে রাত ১১টায় মৃত্যুবরণ করেন। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দুপর ১২টায় উপজেলা দাফন কমিটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে তার দাফন সম্পন্ন করেছে। শহরের চিত্রলেখা এলাকার মজিবুর রহমান ভোর ৫টার দিকে মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। তাকে বিশেষ ব্যবস্থায় দাফনও করা হবে। এছাড়া কল্যাণপুর ইউনিয়নের দাসাদী গ্রামের আ. রশিদ আখন্দ গত ৫/৬ দিন জ্বরে ভুগছিলেন। গতরাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান। সকালে বিশেষ ব্যবস্থায় তার দাফন করা হয়। তবে নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি। হাজীগঞ্জ উপজেলা সেনেটারী কর্মকর্তা মো. জসিমউদ্দিন জানান, হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ধেররা চৌধুরী বাড়ীর মাওলানা শাহ্ আলম (৭০) এর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও গত ১১ জুন চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত নুরে আলমের পিতা বলাখাল ২নং ওয়ার্ডের মিজি বাড়ীর সিদ্দিকুর রহমান (৬৫) রাত ৩টায় নিজ বাড়ীতে ও ৬নং বড়কুল ইউনিয়নের দোয়াগন্ডা গ্রামের মাইজের বাড়ীর মিজানুর রহমান রাত ২টা ১০ মিনিটে নিজ বাড়ীতে মৃত্যুবরণ করেন। এদের প্রত্যেকের করোনার লক্ষণ ও উপসর্গ ছিল। তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। উপজেলা দাফন কমিটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দাফন করবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা। এই ৩জনসহ হাজীগঞ্জ উপজেলায় করোনা লক্ষণ ও উপসর্গে মোট ৪৩জন মৃত্যুবরণ করলো। এ দের মধ্যে ৮জনের করোনা পজেটিভ ধরা পড়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন করে আরও ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৯১ জন। পিসিআর ল্যাবে পাঠানে অপেক্ষমান রয়েছে অরো প্রায় ৬০০ রিপোর্ট।
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা জানান, নওগাঁয় ২ পুলিশসহ জেলায় নতুন করে করোনাভাইরাসে ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ২ পুলিশ সদস্যসহ ৭ জন, বদলগাছি উপজেলায় ৪ জন এবং মহাদেবপুর ও সাপাহার উপজেলায় ১ জন করে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৮ জন।
সিভিলসার্জন ডাঃ আকন্দ মো. আখতারুজআজামান আলাল জানিয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে ১৩৩ জনকে। এদের মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৮ জন, মহাদেবপুর উপজেলায় ১২ জন, মান্দা উপজেলায় ৭ জন, বদলগাছি উপজেলায় ২৪ জন, পতœীতলা উপজেলায় ১ জন, নিয়ামতপুর উপজেলায় ১২ জেন, সাপাহার উপজেলায় ৯ জন এবং পোরশা উপজেলায় ১০ জন। এ নিয়ে জেলায় সর্বমোট কোয়ারেনটাইনে পাঠানো হয় ৮ হাজার ৮শ ৯৫ জনকে।
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭০ জনের দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত করা হয়েছে। করোনায় মারা গেছেন আরো ২ জন। গতকাল সিভিল সার্জন অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪০৭৪, মৃত্যু মোট ৯৬।এক দিনে ৩১৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট নমুনা সংগ্রহ হলো ১৮৭৫৩। নতুন সুস্থ হয়েছেন ২১০ জন, মোট করোনা রোগী সুস্থের সংখ্যা ১৫৩৮।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীতে গতকাল নতুন করে ১৫ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এদিকে, পটুয়াখালীর বাউফলে গতকাল বেলা ১১টার দিকে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান আফরোজা বেগম (৬৫)। তিনি উপজেলার বগা ইউনিয়নের চাঁদপাল গ্রামের আবদুল কাদের মুন্সীর স্ত্রী। তিনি কয়েকদিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।
স্টাফ রিপোটার, রাঙামাটি থেকে জানান, ৫ দিন বিরতির পর রাঙামাটিতে নতুন করে আরও ২২ জনের দেহে করোনাভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রাঙামাটিতে মোট করোনা পজেটিভ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ১০৪ জনে। গত শনিবার পাওয়া ২২ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে কতজন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
সিভিল সার্জন অফিসের করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন ডা. মোস্তফা কামাল জানান, গত শনিবার দুই কিস্তিতে মোট ২২জনের পজেটিভ রিপোর্ট আমরা হাতে পেয়েছি।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটে নতুন করে আরও ৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গত শনিবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং যশোরের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় এদের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর মধ্যে খুলনার ল্যাবে ৭ জনের এবং যশোরের ল্যাবে ২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এই নিয়ে বাগেরহাট জেলায় মোট ৭৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হল। এর মধ্যে ১৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকার। এনিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ৮০ জন করোনা শনাক্ত হলেন। শেরপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল পিসিআর ল্যাবে শেরপুরের ২৫ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শেরপুরে আরো নতুন করে ০৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে শেরপুর সদরে ৫ ও নালিতাবাড়ীতে ৩ জন সনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট সনাক্ত হলেন ১৬৮ জন আর মারা গেছেন দুইজন। জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৮৪ জন। মানুষের অসচেতনার কারণে আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন শেরপুর সদরে বেড়েই চলছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোয়ারুর রউফ এ তথ্য জানান।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নতুন করে আরো দুইজন আক্রান্তসহ বর্তমানে ১১ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এপর্যন্ত উপজেলায় মোট ১৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল এ তথ্য জানান উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. আশরাফুজ্জামান সরকার।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলে নতুন করে একজন ডাক্তার ও এক পুলিশ সদস্যসহ ২৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় ডাক্তার, পুলিশ সদস্যসহ ৩জন, কালিহাতী উপজেলায় ৪, মধুপুরে ৩, ঘাটাইলে ১, নাগরপুর ১ ও মির্জাপুর উপজেলায় ১১ রয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ডাক্তার, পুলিশসহ সর্বমোট ৩১৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলো। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান রোববার সকালে এ তথ্য জানান। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ববধায়ক ডাক্তার সদর উদ্দিন জানান, ডেলিকেটেড হাসপাতাল (ট্রমা সেন্টার) টাঙ্গাইলে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে সর্বমোট ১৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়। এদের ১৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে টাঙ্গাইল সদরের ১ ও মধুপুর উপজেলার ১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে এবার করোনাভাইরাসের উপসর্গে আব্দুস সামাদ নামের এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাতে রংপুর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ সদর ইউনিয়নের মৌলবীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
সিলেট : সিলেটে করোনা উপসর্গ নিয়ে লিটন দাস লিকন নামে এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে সিলেটের শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তিনি সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চানপুর গ্রামের মৃত নিতাই চন্দ্র দাসের ছেলে। নিহতের স্বজন ও স্থানীয় সাংবাদিকরা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, লিটন দাস লিকন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য ও একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন।
কক্সবাজার : করোনা উপসর্গ নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ফেরদৌস আহমদ জমিরী (৬৬) মারা গেছেন। তিনি টেকনাফ পৌরসভার কুলালপাড়ার মৃত মৌলভী এজাহার আহমদের ছেলে। গতকাল সকালে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে এনজিও পরিচালিত হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়। টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম এ তথ্য এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘উখিয়া এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়েছে। এসময় তার জ্বর সর্দি কাশি ছিল বলে জানা গেছে।
দিনাজপুর : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে নমুনা দেওয়ার একদিন পর করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষকের (৭২) মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে উপজেলার বুলাকিপুর ইউনিয়নের বিন্যাগাড়ি গ্রামে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার বিন্যাগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
ল²ীপুর : ল²ীপুর জেলার কমলনগর উপজেলার ইসলামী ফাউন্ডেশনের (ইফা) কর্মকর্তা হোসাইন মাহমুদের (৪২) শনিবার রাত ১২টায় করোনার উপসর্গ নিয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবী হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে টানা চার দিন শ্বাসকষ্ট নিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে পাঁচ দিন পরও তার করোনা টেস্টের ফল না আসায় তাকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া যায়নি। হোসাইন মাহমুদ নোয়াখালী জেলা শহরের ল²ীনারায়নপুর গ্রামের মৃত ইঞ্জিনিয়ার তাজুল ইসলামের জেষ্ঠ্য পুত্র।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ