Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কেমন আছেন কুয়াকাটার পর্যটন নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা?

এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ জুন, ২০২০, ৮:১৮ পিএম

চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস ও আমপানের প্রভাবে দিশে হারা কুয়াকাটার পর্যটন নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখে হোটেল মোটেল, রেস্তোরাঁ, হকার, বিচ ফটোগ্রাফার, ছাতা ব্যবসায়ী, দোকানপাট, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট, ট্যুরিস্ট গাইড ও ট্যুর অপাটেরসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। হোটেল মোটেলের তথ্য অনুসারে প্রতিবছর আভ্যন্তরিন পর্যটকদের সংখ্যা প্রায় চারলক্ষ । কিন্তু এ বছরের মার্চ জুন পর্যন্ত পর্যটকদের আগমন শুণ্যের কোঠায়। ফলে পর্যটন নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পথে বসে গেছে। ২০১৯ সালে পর্যটন ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখলেও ২০২০ সালে এসে প্রায় ছয়শত কোটি টাকার লোকসান গুনছে। করোনার কারনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে ভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে পরিবারকে খাদ্যের যোগান দিত। কিন্তু ঘূর্নিঝড় আম্পানের কারনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকান পাটগুলোর উপর তান্ডব চালিয়ে তচনচ করে দিয়েছে। প্রতিটি দোকান চূর্নবিচুর্ন হয়ে গেছে। ক্ষত বিক্ষত হয়েছে ব্যবসায়ীদের হৃদয়। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। করোনার প্রভাবে বেকার আর অলস সময় পার করে সঞ্চিত টাকা শেষ আবার নতুন করে দোকানপাট তৈরি করা। আদৌও কি তারা ফিরতে পারবে তাদের পুরোনো ব্যবসায় এমন প্রশ্ন এখন তাদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। স্থবির হয়ে গেছে ব্যবসায়ীরা। হোটেল মোটেলগুলো মৃত্যুর মত দাড়িয়ে আছে। কিছু কিছু ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানপাট খুলে মালামালগুলো ঠিক আছে কিনা দেখে নিচ্ছে। দোকান ভাড়া, কর্মচারিদের বেতন নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। ছাটাইর পাশাপাশি কর্মচারীদের ছুটি দিয়ে দিছে। কেউ আবার ভিন্ন পেশা নিয়ে ভাবছে। দোকানে দোকানে হরেক রকমের মালামালের পশরা এখন শুধুই স্মৃতি। হকার আর বিচ ফটোগ্রাফাররা অলস সময় পার করছে। বিচ পয়েন্টে ছাতাগুলো খালি পড়ে আছে। মাহিম ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী মো. আনোয়ার বলেন, দোকান ভাড়াসহ কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছি। কবে যে শেষ হবে এমন বালা জানিনা। তবে কয়েকদিন পর পথে বসতে হবে।
সাগরপাড়ে চা বিক্রেতা মো. কামাল বলেন,আগে ভালো টাকার চা সিগারেট বেচতাম এহন দু বেলা ভাত জোডেনা। ফুসকা বিক্রেতা বনি আমিন বলেন, প্রতিদিন ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার ফুসকা বিক্রি করতাম করোনার কারনে বেচাকিনা নাই। কোন রকম বাইচ্চা আছি। ফুসকা আর বেচমুনা। বাহিরে কাজ করে সংসার চালাতে হবে। কনফিডেন্স ট্যুরিজম ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের পরিচালক মো.সাইদুর রহমান বলেন, পর্যটকদের সেবা দিতে যারা ব্যস্থ ছিল তারাই আজ বেকার। অলস সময় পার করছে ফলে কষ্ট দিনদিন দির্ঘ হচ্ছে। ট্যুর অপারেটর এ্যসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াকের) সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, দির্ঘদিন কুয়াকাটা লক ডাউন থাকার ফলে ট্যুর অপারেটররা বেকার হয়ে পড়ছে। হাতে সঞ্চিত টাকা শেষ। এখন প্রতিদিন কস্ট করে দিন পার করতে হয়।কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট সেন্টার ও ইলিশ পার্কের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, প্রতি মাসেই লোকসান গুনতে হচ্ছে। বিপুল পরিমান ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অবশ্যই সরকারের সহযোগিতা প্রয়জন হবে। কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি মিজানুর রহমান বুলেট আকন বলেন, এ সকল ব্যবসায়ীদের প্রতি সরকারের শুদুষ্টি দেয়া উচিত । হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন'র সেক্রেটারি মোতালেব শরীফ বলেন,হাজারো মানুষের জীবিকা ও অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে উপায় খোজা হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনসহ হোটেল মোটেলে'র মালিকরা মিলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ