পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার উপসর্গ জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়েছে সারা দেশে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এদের কারো শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ছিল কিনা তা নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৪৯৬ জনকে। ছাড় পেয়েছেন ১৬৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৯ হাজার ৩৪০ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৪১৪ জনকে। ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৪৮০ জন। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ১৭ হাজার ৬৪৪ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬০ হাজার ৭৮৫ জন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, করোনার উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রামে আরো এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ডা. আরিফ হাসান চৌধুরী গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় চমেক হাসপাতালে মারা যান। চট্টগ্রামে এ নিয়ে করোনায় এবং করোনা উপসর্গে চার জন চিকিৎসকের মৃত্যু হলো।
এক সপ্তাহ ধরে ডা. আরিফ জ্বরে ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে নগরীর লাভলেইন আবেদিন কলোনীর বাসা থেকে তাকে ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই রাতে তিনি ইন্তেকাল করেন। ডা. আরিফ নগরীর পাহাড়তলী এলাকায় নিয়মিত প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪৯ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন তিনি। এর আগে উপসর্গ নিয়ে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এ এম জাফর হোসাইন রুমি এবং করোনায় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এহসানুল করিম ও চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মুহিদুল হাসান মারা যান। বিএমএ চট্টগ্রামের হিসেবে এ পর্যন্ত ৮০ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়েছেন।
যশোর ব্যুরো জানায়, যশোরে করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা ২শ’ ছাড়ালো। গতকাল যবিপ্রবি’র ল্যাবে নতুন করে শনাক্ত হয় ১৭। এই নিয়ে মোঁ ২০৩জন করোনায় আক্রান্ত হলো যশোর জেলায়। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, আক্রান্ত রোগীদের অবস্থা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। আক্রান্তদের অনেকেই ভালো হয়েছে। কেউবা ভালোর দিকে।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, নোয়াখালীর সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে সদর উপজেলায় তিনজন ও বেগমগঞ্জ উপজেলায় একজন রয়েছেন। দুজন জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ও দুজন বাড়িতে মারা গেছেন। গতকাল রাত ৯টা থেকে আড়াইটার মধ্যে তারা মারা যান। কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সদর-কবিরহাট উপজেলার সীমান্তবর্তী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের নেয়ামতপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ীর (৫৩) নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরআগে রাত ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। স্বজনদের দেওয়া তথ্য মতে ওই ব্যবসায়ী গত ৮-১০ দিন ধরে জ্বর, শ্বাস কষ্ট ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। করোনা উপসর্গ থাকায় তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া গতকাল রাত আড়াইটা দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে মারা যান জেলা শহরের গোপাই এলাকার বাসিন্দা এক নারী (৫২) ও নেয়াজপুর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রামের বাসিন্দা পুরুষ (৬৭)। তারা দুইজন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি থাকলেও মধ্য রাতে দুজনের শ্বাস কষ্ট দেখা দিলে তাদের হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ওই ওয়ার্ডেই রাত ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। কিন্তু পরিবারের লোকজন নমুনা দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের কারোই নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দ মহি উদ্দিন আব্দুল আজিম।
অপরদিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার গোডাউন রোডের বাসিন্দা (৪৭) গত ৬-৭ দিন ধরে জ্বর ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন প্রথমে জেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ভর্তি না করায় পরবর্তীতে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বেগমগঞ্জের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, নোয়াখালীতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৬৭জন। এরমধ্যে একজন পুলিশের এএসআই, স্বাস্থ্যকর্মী ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশাজীবিও রয়েছেন। এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন নূরুল আমিন (৬৭) নামের আরও একজন। জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৩৬জন।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ও করোনা ফোকাল পার্সন ডা. নিলিমা ইয়াছমিন জানান, গত ২৪ ঘন্টায় উপজেলায় আরও ৩৫জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশের এএসআই, একজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে।
ডা. নিলিমা আরও বলেন, গত ১০জুন বুধবার সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের আটাশপুর গ্রামের বাসিন্দা নূরুল আমিনের করোনা শনাক্ত হয়। এরআগের দিন তিনি নমুনা দিয়েছিলেন। শনাক্ত হওয়ার পর থেকে বাড়ীতে হোম আইসোলেশনে ছিলেন তিনি। ১২জুন শুক্রবার বিকালে ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের আইসোলেশন হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার শারীরক অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৫জন। জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নতুন করে পুলিশের আরও একজন এএসআই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশের কর্মকর্তাসহ জেলায় মোট ৬৬জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনার উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে এবং গতকাল ভোরে মারা যান তারা। মৃতরা হলেন, নওগাঁ সদর উপজেলার সুপারিপট্টি মহল্লার সিরাজ উদ্দিন (৫৫) ও বদলগাছীর ইসলামপুরের গোলাম মোস্তফার ছেলে আবদুল গাফফার (২০)। এলাকায় মুদি দোকান রয়েছে সিরাজ উদ্দিনের। আর আবদুল গাফফার ঢাকার ওয়াশিং কারখানার কর্মী ছিলেন।
আবদুল গাফফার শুক্রবার রাত আঁটার দিকে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ২৯নং ওয়ার্ডে মারা যান। গতকাল ভোর ৫টার দিকে একই ওয়ার্ডে মারা যান সিরাজ উদ্দিন। হাসপাতালূ সূত্র বলছে, করোনার উপসর্গ নিয়ে শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে রামেক হাসপাতালে আসেন সিরাজ উদ্দিন। পরে তাকে করোনা আইসোলেশন ইউনিট রাজশাহী খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালের ২৯ ওয়ার্ডে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, করোনা নেগেটিভ সত্তে¡ও উপসর্গ নিয়ে রামেক হাসপাতালে এসেছিলেন আবদুল গাফফার। প্রথমে তাকেও মিশন হাসপাতালে পাঠানো হয়। রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, আবদুল গাফফার আগেই নমুনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। তখন তার করোনা নেগেটিভ এসেছিল। তবে সিরাজ উদ্দিনের আগে পরীক্ষা হয়নি। সমৃত্যুর পর দুজনেরই নমুনা নেয়া হয়েছে। রিপোর্ঁ পেলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে তারা করোনায় মারা গেছেন কিনা। মরদেহ দুটি পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার সকালে করোনার উপসর্গ নিয়ে রামেক হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে নওগাঁ এবং রাজশাহীর দুইজন মারা যার।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, গত ৪৮ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলে আরো ৬ জনের মৃত্যুসহ নতুন আক্রান্ত হয়েছে আরো ১৮০ জন। এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে ৩১ জনের মৃত্যুর খবর জনমনে দুঃশ্চিন্তা বৃদ্ধি করছে। গড় মৃত্যহার ৩%-এর বেশি। তবে বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলায় মৃত্যুহার অত্যাধীক বেশী। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দ্বিতীয় বারের মত ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় রোগীর সংখ্যা অত্যাধীক এবং বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বার্তা দেয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য বিভাগের অপর এক বার্তায় ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকা লক ডাউন করারও সুপারিশ’ করা হয়েছিল । তবে গত ৪৮ ঘণ্টায় নতুন করে আরো ৩৩ জন সহ দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্ত ১,৩৯৩-এর মধ্যে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৩৬৯ জনে উন্নীত হয়েছে।
কিন্তু প্রতিদিন নগরী যুড়ে চিকিৎসক সহ চিকিৎসা কর্মীএবং আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য ও ব্যাংক কর্মী সহ সাধারন মাানুষ আক্রান্ত হলেও কারো কোন হেলদোল নেই। গোাঁ নগরী যুড়ে এখন করোনা সংক্রমনের অতংকিত খবর। স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্বেগের বিষয়টিও প্রশাসন আমলে নেয়নি এখনো। এমনকি নগর প্রশাসনের তরফ থেকেও পরিস্থিতি উত্তরন সহ তা প্রতিরোধে নুন্যতম কোন পদক্ষেপ নেই। পুলিশ বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
তবে শুধু বরিশাল নয় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের অবস্থাই ক্রমশ অবনতি লাভ করছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪শ ছুই ছুই করছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলাতেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮৬২। আর মহানগরীতে প্রায় সাড়ে ৭শ। বরিশালে পরে পটুয়াখালীতে গত তিন দিনে পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় পটুয়াখালীতে নতুন করে ৪২জন আক্রান্ত সহ ৪ জনের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে জেলাটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৫’তে পৌছল।
গত ৪৮ ঘণ্টায় দ্বীপ জেলা ভোলাতে নতুন করে ১৩ জন সংক্রমিত হবার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯০’তে উন্নীত হল। মোট মৃত্যু হয়েছে দু জনের। পিরোজপুরে আরো ৮জন আক্রান্ত হবার মধ্যে দিয়ে মোট সংখ্যা ১০২ জনে উন্নীত হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। নতুন ৩জন আক্রান্ত হবার মধ্যে দিয়ে ছোট জেলা বরগুনায় সংখ্যাা ১০৩-এ উন্নীত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দুজনের। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠিতে গত ৪৮ ঘণ্টায় আরো ৩জন আক্রান্ত হবার মধ্যে দিয়ে মোট আক্রান্ত ৮১। মৃত্যু হয়েছে এ পর্যন্ত ৩জনের।
বরিশাল মহানগরীসহ জেলায় মোট আক্রান্ত ৮৬২ জনের বিপরীতে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২৯ জন। পটুয়াখালীতে ১৫৫ জন আক্রান্তের বিপরীতে মারা গেছেন ১০জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩১ জন। বরগুনায় ১০৩ জন আক্রান্ত হলেও মারা গেছেন ২জন। সুস্থ হয়েছেন ৬২ জন। পিরোজপুরে ১০২ জন আক্রান্তের বিপরিতে মারা গেছেন ৩ জন । সুস্থ হয়েছেন ৬৬জন। ভোলাতে ৯০ জন আক্রান্ত হলেও মৃত্যু হয়েছে দুজনের। সুস্থ হয়েছেন ৩৪ জন। আর ছোট জেলা ঝালাঠিতে ৮১ জন আক্রান্তের বিপরীতে মারা গেছেন ৩জন। সুস্থ হয়েছেন
খুলনা ব্যুরো জানায়, করোনার উপসর্গ নিয়ে খুলনায় গত শুক্রবার রাতে ৬০ বছরের একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম শাহারান বেগম। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে।
বগুড়া ব্যুরো জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ জন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেল আরো ৪ জন। নতুন করে এ ভাইরাসে মারা গেল আরো ৭ জন। বগুড়ার করোনা আইসোলেশন কেন্দ্র মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আরএমও ডা: শফিক আমিন কাজল জানান, শুক্রবার সকালে ভর্তি অবস্থায় কাহালুর নাইম (১৪), বিকেলে মমতাজুর রহমান (৭০), দিবাগত রাত নয়টায় রাব্বি (৪৫), রাত ১০ টায় শামীম আহম্মেদ বুলু (৫৬) , গতকাল সকালে ইমরান নাজির (৩৬), হারুন অর রশিদ (৭২), হাসপাতালে আসার পথে বিজন কুমার নিয়োগী (৫২) মারা যায়।
তিনি আরো জানান, মমতাজুর রহমান, বিজন কুমার নিয়োগী এবং হারুন অর রশিদের করোনা পজিটিভ ছিল। অন্যরা করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। শামীম আহম্মেদ বুলু এখানে ভর্তি ছিল, তাকে ঢাকায় নেয়ার পথে মারা গেছেন। বিজন কুমার নিয়োগী হাসপাতালে পৌছার আগেই মৃত্যুবরন করেন।
স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে জানান, চাঁদপুরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গতকাল হাসপাতালের আইসোলেশন ১ জনসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে মতলব উত্তরে একজন, মতলব দক্ষিণে একজন, হাইমচরে একজন এবং ফরিদগঞ্জে একজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অনুরোধে ইসলামী আন্দোলনের দাফন কাজে নিয়োজিত সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দাফন সম্পন্ন করেন। গতকাল দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজ মোল্লা (৬৫) জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজকান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শামছুল হক মোল্লা(৫৮) করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। সেচ্ছাসেবকরা মৃতের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে গোসল, জানাজা শেষে বিকেল ৩ টায় দাফন সম্পন্ন করেন। সামছুল হক মোল্লা ফরাজি কান্দি ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দিক মোল্লা ছেলে। এদিকে মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদি দক্ষিণ ইউনিয়নের মো. মনু মিয়া(৫৩) নামে এক ব্যাক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। উপজেলার সাত সদস্য বিশিষ্ট সেচ্ছাসেবক দল দুপুর ১ টায় দাফন সম্পন্ন করেন। মো. মনু মিয়া উপাদি দক্ষিণ ইউনিয়নের প‚র্ব ধলাইতলী গ্রামের মৃত রওশন আলীর ছেলে। হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়নে হাবিবুর রহমান বেপারী নামে এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গে মারা গেছেন। সকাল ১১ টায় নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। আলগী উত্তর ইউনিয়নের লামচরি গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানকে উপজেলা ভ‚মি কর্মকর্তার নির্দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয়।
এছাড়া চাঁদপুর জেলায় নতুন করে আরো ৪৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪১৩ জনে। মারা গেছেন ২৯জন।
গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় বানিয়ারচর গ্রামের স্বাস্থ্যকর্মী রিপন বৈদ্য ওরফে নিপু (৪২) করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন। গতকাল সকালে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যায়। নিপু বানিয়ারচর ক্যাথলিক মিশনের চিকিৎসা কেন্দ্রের ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসাবে কর্মরত ছিলেন।তার বাড়ি মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় বানিয়ারচরগ্রামে। এছাড়া গোপালগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ১৮ জনের শরীরে করোনভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। গোপালগঞ্জে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪২ জনে।
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দাদা-নাতি-নাতনীসহ একদিনে সর্বোচ্চ ৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত দাদা-নাতির পরিবার ঢাকা থেকে মির্জাপুরেগ্রামের বাড়ি এসে নমুনা দিয়েছিলেন।বর্তমানে তারা স-পরিবারের ঢাকায় অবস্থান করছেন। এনিয়ে এই উপজেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৬৪ জন। গতকাল সকালে এই তথ্য জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাকসুদা খানম।
মৌলভীবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে করোনা উপসর্গ জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সানুর মিয়া নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের ইমারজেন্সী বিভাগে মৃত্যু হয়। তার বাড়ি কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া এলাকার বকসীটিলায়।
নান্দাইল (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ময়মনসিংহের নান্দাইলে ২৪ ঘণ্টায় করোনার নতুন করে এক ব্যাংক কর্মকর্তা সহ ২ জন আক্রান্ত হয়েছে। এতে করে করোনায় এ পর্যন্ত উপজেলার মোট ১৯ জন আক্রান্ত হলো।
পঞ্চগড় : পঞ্চগড় সদর উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে সিফাত হোসাইন আদন (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই যুবক পঞ্চগড় শহরস্থ নতুনবস্তি এলাকার বেনজির হোসেনের পুত্র।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরের সালথায় করোনাভাইরাসে সর্বমোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৯জন। হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ২৭জন। মেডিকেলে চিকিৎসাধীন ১জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন একজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস.এম ইফতেখার আজাদ জানান, ১২জুন রাত ৯টা পর্যন্ত সালথা উপজেলায় সর্বমোট করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৯জন। মোট নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ২৫২টি।
শরণখোলা (বাগেরহাট) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটের শরণখোলায় আরো চারজন করোনা পজেটিব শনাক্ত হয়েছেন। এনিয়ে শরণখোলায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১৫ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদা ইয়াসমিন জানান, খুলনার পিসিআর ল্যাব থেকে শুক্রবার রাতে তাদের নমুনা পাঠানো চারজনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা জানান, সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৫ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে।
শেরপুর জেলা জানান, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল পিসিআর ল্যাবে শেরপুরের ৭০ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শেরপুরে আরো নতুন করে ০৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে । জেলা সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোয়ারুর রউফ এ তথ্য জানান।
শিবচর (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের প্রথম লকডাউনকৃত শিবচর উপজেলার প্রথম সাড়ির যোদ্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি গত কয়েকদিন ধরেই জ¦রে আক্রান্ত থাকায় বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। আরো আক্রান্ত হয়েছেন পাচ্চর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হাওলাদার। এছাড়াও হাইওয়ে পুলিশের ৯ জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ি চালক, আরেক স্বাস্থ্য কর্মী,বহেরাতলার ২ জন,পাচ্চরের আরো একজন,উমেদপুরে ১ জন,মাদবরচরে একজনসহ মোট ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। ৭ জুন পাঠানো ২৫ জনের নমুনার মধ্যে ১৭ জনই পজিটিভ আসে। এরআগে ১২ জুন ৪ জনের করোনা পজিটিভ আসে। এনিয়ে শিবচরের ৬৫ জন করোনায় সংক্রমিত হলো। সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন।
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের রায়েরবাগ গ্রামে গতকাল সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আবুল হোসেন (৬৭) নামে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.বদিউজ্জামান জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার মিরপুর রিমা ক্লিনিক নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ওই ব্যবসায়ী মারা যান। তিনি বয়রাগাদী ইউনিয়নের রায়েরবাগ গ্রামের মৃত কালু বেপারীর ছেলে।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বর্তমানে ৯ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এপর্যন্ত উপজেলায় মোট ১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের নিকলীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে উপজেলার পূর্ব বড়কান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান ওরফে সাদেক মাস্টার (৫৮) মারা গেছেন। গতকাল ভোরে উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব বড়কান্দায় নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান।
নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছীতে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সোহাগ হোসেন (২৩) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গতকাল (১৩ জুন) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সিরাজগঞ্জ : করোনার উপসর্গ নিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় দুই ও তাড়াশে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল (১৩ জুন) সকালে ও ভোরে নিজ নিজ বাড়িতে এদের মৃত্যু হয়।
উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বারইয়া পালপাড়া মহল্লার এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। তিনি ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। কয়েকদিন আগে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশিও ছিল তার। এর আগে ভোর ৪টার দিকে কাওয়াক হাসপাতাল পাড়ায় জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি নিয়ে মারা যান এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে মৃত ব্যক্তিদের পরিবার ও তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এক সপ্তাহ পর এসব পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জামাল মিয়া জানান, গতকাল সকালে তাড়াশে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন নওগাঁ ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে সেখানে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। মৃত ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে।
মুরাদনগর (কুমিল্লা) : কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে প্রদীপ চন্দ্র দেবনাথ (৩৬) নামের এক ইউপি সচিবের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পথে তিনি মারা যান। প্রদীপ চন্দ্র দেবনাথ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সচিব ছিলেন। তার বাড়ি উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে প্রদীপ চন্দ্র দেবনাথের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। নমুনা পরীক্ষার ফল এখনো আসেনি।
বাজিতপুর : কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে শেখর লাল সাহা (৬০) নামে এক ফার্মেসি মালিকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার দিনগত রাতে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান এ তথ্য জানান। এর আগে বিকেলে উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের দুর্গাবাড়ী গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। তিনি সরারচর বাজারের পূজা ফার্মেসির মালিক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন শেখর লাল সাহা। করোনা উপসর্গ থাকায় খবর পেয়ে বুধবার (১০ জুন) তার নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার বিকেলে তিনি মারা যান। সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, শেখর লাল সাহার মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনার ফলাফল পাওয়ার পর তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কি-না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
সিরাজগঞ্জ: করোনার উপসর্গ নিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় দুই ও তাড়াশে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে ও ভোরে নিজ নিজ বাড়িতে এদের মৃত্যু হয়। উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বারইয়া পালপাড়া মহল্লার এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। তিনি ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। কয়েকদিন আগে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশিও ছিল তার। এর আগে ভোর ৪টার দিকে কাওয়াক হাসপাতাল পাড়ায় জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি নিয়ে মারা যান এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে মৃত ব্যক্তিদের পরিবার ও তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এক সপ্তাহ পর এসব পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জামাল মিয়া জানান, গতকাল সকালে তাড়াশে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছেন নওগাঁ ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে সেখানে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। মৃত ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে।
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে ফয়েজ উদ্দীন (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান। মৃত ফয়েজ উদ্দীন উপজেলার কুল্ল্যাপাড়া গ্রামের হেদায়েত উল্লাহর ছেলে। তিনি ঢাকার ন্যাশনাল ব্যাংক দিলকুশা কর্পোরেট শাখায় কর্মরত ছিলেন।
নিহতের ভাই গিয়াস উদ্দীন জানান, আমার ভাই দীর্ঘদিন অ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শুক্রবার সকালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনাও সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রানী সাহা জানান, ওই ব্যক্তির শরীরে করোনার উপসর্গ থাকায় তার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ঁ আসলে জানা যাবে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না।
ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সাদিকুর রহমান (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে নগরীর এস কে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি ফুলপুর উপজেলার বাসিন্দা। ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. একেএম মসিউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক নারী ও এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১২ জুন) বিকেলে ও রাতে তাদের মৃত্যু হয়। জানা গেছে, উপজলার আজমতপুর গ্রামের বিউটি আক্তার (৩০) কয়েকদিন যাবৎ ঠান্ডা, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শুক্রবার বিকেলে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আজমতপুর গ্রামের ফরহাদ মোল্লার স্ত্রী।
অপরদিকে উপজেলার পানজোড়া গ্রামের সেরাজুল রাজ (৭৩) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে ব্লাড ক্যানসার ও করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।