Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গানের আয়োজন নেই, আয়-উপার্জন বন্ধ : কষ্টে আছেন বাউল শিল্পীরা

মো: মেরাজ উদ্দীর, শেরপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২০, ৭:০৮ পিএম

‘আমার ভাঙ্গা তরী, ছেড়া পাল/ চলবে আর কত কাল/ ভাবি শুধু একা বসিয়া/ রে দয়াল, এভাবে আর চলবে কত কাল/ তরী কিনারায় ভিড়াইয়া/ ভাবি শুধু কাঁদিয়া/যাবে কী এমনি দিন হাল/ রে দয়াল, এভাবে আর চলবে কতকাল...’ জনপ্রিয় একটি বাউল গানের কলি এটি। করোনা’র এই সময়ে বাউল শিল্পীদের অবস্থা আজ ওই গানের কলির চাইতেও খারাপ। কতদিন ধরে, কোথাও গানের আয়োজন নেই। বন্ধ হয়ে গেছে আয়-উপার্জন। নিদারুণ কষ্টে আছেন বাউল শিল্পীরা। অনেকের ঘরেই খাবার না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ ধার-দেনায়ও জড়িয়ে পড়েছেন। করোনাকালে সরকারী-বেসরকারি অনেক মানবিক সহায়তা কর্মসূচি চালু থাকলেও এসব বাউল শিল্পীদের ভাগ্যে সে ধরনের কোন সহায়তাও জুটেনি। এই দু:সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ালে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

শেরপুর জেলা বাউল শিল্পী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি বিশিষ্ট বাউল তারা মিয়া বলেন, করোনা’র অনেক আগে থেকেই বাউল শিল্পীরা বেকার হয়ে বসে আছেন। আমাদের কোন আয়-উপার্জন নেই। গানের মধ্য দিয়ে আমরা মানুষকে বিনোদন দেই। দেশ-জাতি গঠনের কথা বলি। মানুষের আধ্যাত্মিক ও মানবিক উন্নয়নের কথা বলি। আর এই গানের মাধ্যমে আয়-উপার্জন করাই আমাদের পেশা। কিন্তু দীর্ঘদিন কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই। আয়-উপার্জন বন্ধ। শিল্পী-যন্ত্রী-দোহারী (সহযোগী) সবাই এখন কর্মহীন বেকার বসে আছেন। আমাদের বাউলরা এখন খুব কষ্টে আছেন, কিন্তু তাদের দেখার কেউ নেই। অন্যপেশার কর্মহীন লোকদের মতো বাউল শিল্পীদের প্রতিও একটু দৃষ্টি দিলে কষ্টটা কিছুটা লাঘব হতো। বাউল তারা মিয়া জানান, শেরপুর সদরে কর্মহীন বেকার অবস্থায় রয়েছেন এ ধরনের বাউল শিল্পীর সংখ্যা হবে প্রায় ৪০ জনের মতো। আর জেলার ৫ উপজেলা মিলিয়ে কর্মহীন বাউল শিল্পীর সংখ্যা হবে প্রায় ১৩০ জনের মতো।

জনউদ্যোগ শেরপুর জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক হাকিম বাবুল বলেন, বাউলরা আমাদের সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম কারিগর। তারা গান-পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরেন এবং মানুষকে বিনোদনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ও সামাজিক উন্নতি সাধনে উদ্ধুদ্ধ করে থাকেন। বাউলরা গানের মধ্য দিয়েই তাদের উর্পাজনের পথ খুঁজে পান। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা কর্মহীন-বেকার। বিষয়টি অবশ্যই ভাবনায় নিতে হবে। সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারী ভাবেও এই করোনাকালে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের সহযোগিতা করতে হবে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এ বিষয়টি আমাদের গভীরভাবে ভাবতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ